কৃষি মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন কৃষি বিপণন অধিদপ্তর সারাদেশে মোট ৪৫টি পয়েন্টে ‘কৃষিপণ্য ওএমএস কর্মসূচি-২০২৪’ পরিচালনা করছে। এতে দিনে প্রায় ১২ থেকে ১৩ হাজার নিম্নআয়ের মানুষ ভর্তুকি মূল্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় কৃষিপণ্য কিনতে পারছে। গতকাল মঙ্গলবার কৃষি মন্ত্রণালয় এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানিয়েছে।
এতে বলা হয়, সম্প্রতি অতিবৃষ্টি ও আকস্মিক বন্যাসহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক কারণে নিত্যপ্রয়োজনীয় কৃষিপণ্যের মূল্যের ঊর্ধ্বগতির মধ্যে নিম্নআয়ের সাধারণ মানুষদের স্বস্তি দেওয়ার জন্য কৃষি মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন কৃষি বিপণন অধিদপ্তর এ কর্মসূচি চালু করেছে। সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, প্রাথমিকভাবে ১৫ অক্টোবর থেকে ঢাকা মহানগরীর ২০টি পয়েন্টে কৃষিপণ্য ওএমএস কর্মসূচির আওতায় ভর্তুকি মূল্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় কৃষিপণ্য বিক্রি শুরু করা হয়। পরবর্তী সময়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহের ভিত্তিতে ১৮ অক্টোবর থেকে ঢাকা মহানগরীতে আরো ১০টি পয়েন্ট বৃদ্ধি করা হয়।
বর্তমানে খাদ্য ভবন, রামপুরা, দক্ষিণ খান, উত্তরখান, নতুন বাজার, উত্তর মুগদা, বাসাবো, বছিলা, রূপনগর, মিরপুর, কালশী, কামরাঙ্গীরচর, গাবতলী, হাজারীবাগ, রাজারবাগ, মালিবাগ, কাঁঠাল বাগান, রায়ের বাজার, পলাশি মোড়, মহাখালী, বেগুনবাড়ি, জিগাতলা, মোহাম্মদপুর, আদাবর, তালতলা, মানিক মিয়া এভিনিউ ও বিএডিসিসহ (৪টি) মোট ৩০টি পয়েন্টে ভর্তুকি মূল্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় কৃষিপণ্য বিক্রি হচ্ছে। এর পাশাপাশি ২২ অক্টোবর থেকে চট্টগ্রাম মহানগরীর স্বল্প আয়ের মানুষের দুর্ভোগ লাঘবে ৫টি পয়েন্টে কৃষিপণ্য ওএমএস কর্মসূচির আওতায় ভর্তুকি মূল্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় কৃষিপণ্য বিক্রি কার্যক্রম শুরু করা হয়। সরকারি এ কর্মসূচি চালুর পর নিম্নআয়ের মানুষের মধ্যে এটি ব্যাপক সাড়া ফেলায় ২৭ অক্টোবর থেকে চট্টগ্রাম মহানগরীতে আরও ৫টি পয়েন্ট বৃদ্ধি করা হয়।
চট্টগ্রাম মহানগরীতে বর্তমানে চকবাজার, দেওয়ানহাট, ষোলশহর, ফিরিঙ্গিবাজার, ফিরোজশাহ্, সিটি গেট, হালিশহর, আগ্রাবাদ, বহদ্দারহাট ও ফ্রি পোর্টসহ মোট ১০টি পয়েন্টে ভর্তুকি মূল্যে এ কার্যক্রম চলছে। এছাড়া খুলনা মহানগরীর নিম্নআয়ের মানুষদের স্বস্তি দিতে ২৮ অক্টোবর থেকে ৫টি পয়েন্টে চালু হয়েছে কৃষিপণ্য ওএমএস কর্মসূচি। মহানগরীর শিববাড়ি মোড়, বাংলাদেশ ব্যাংক মোড়, খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, খালিশপুর ও দৌলতপুরে কৃষিপণ্য ওএমএস কর্মসূচির আওতায় ভর্তুকি মূল্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় কৃষিপণ্য বিক্রি কার্যক্রম চলছে।
কৃষিপণ্য ওএমএস কর্মসূচির আওতায় ডিম, আলু, পেঁয়াজ, পটোল, পেঁপে, করলা, কচু, শসা, লাউসহ কয়েকটি কৃষিপণ্য বিক্রি করা হচ্ছে। ক্রেতারা ১ ডজন ডিম ১১০ টাকা, ১ কেজি আলু ৩০ টাকা, ১ কেজি পেঁয়াজ ৭০ টাকা, ১ কেজি কাঁচা পেপে ১৫ টাকা, ১ কেজি পটোল ৩০ টাকা, ১ কেজি করলা ৪০ টাকা, ১ কেজি শসা ১৫ টাকা, ১ কেজি কচু ৩০ টাকা, ১ পিস লাউ ২০ টাকা দরে কিনতে পারছেন। সপ্তাহের সাত দিনই এই বিক্রি কার্যক্রম চালু রয়েছে। এছাড়া সব গ্রাহক যেন পণ্য পায় তা নিশ্চিত করার জন্য প্যাকেজ আকারে এসব পণ্য বিক্রি করা হচ্ছে এবং একই সঙ্গে সব পণ্যের সর্বোচ্চ ক্রয়সীমাও উল্লেখ করা হচ্ছে। বিক্রি করা কৃষিপণ্যগুলো পণ্যের উৎপাদনস্থল বা হিমাগার পর্যায় থেকে সরাসরি আনা হচ্ছে ফলে উৎপাদক পর্যায়েও একদিকে যেমন ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত হচ্ছে, তেমনি সরকার ভর্তুকি দেয়ার ফলে ভোক্তারাও সাশ্রয়ী মূল্যে কৃষিপণ্য কিনতে পারছে বলেও জানিয়েছে কৃষি মন্ত্রণালয়।