চট্টগ্রাম বন্দরের বিভিন্ন ইয়ার্ডে বহু বছর ধরে সংরক্ষিত বিপজ্জনক রাসায়নিক ভর্তি কন্টেইনারগুলোর কারণে নিরাপত্তা সংকট দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে ৩৩৪টি কন্টেইনারের মধ্যে ৪৮টি কন্টেইনার অবিলম্বে সরিয়ে নেয়া জরুরি বলে মনে করছেন বন্দরের কর্মকর্তারা। এ বিষয়টি নিয়ে বন্দরের পক্ষ থেকে শুল্ক বিভাগে একাধিকবার চিঠি পাঠানো হয়েছে। শুল্ক কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, কন্টেইনার অপসারণে একটি বিশেষ পরিকল্পনা প্রস্তুত করা হচ্ছে। চট্টগ্রাম বন্দর বিভিন্ন পণ্য সংরক্ষণে দেশের প্রধান কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হয়, যেখানে ৫৩ হাজার ৫১৮ ইউনিট কন্টেইনার ধারণের ক্ষমতা রয়েছে। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে এখানে ক্যালসিয়াম কার্বনেট, থিনার, সোডিয়াম সালফেট, ইন্ডাস্ট্রিয়াল ওয়াশিং এজেন্টসহ বিভিন্ন দাহ্য রাসায়নিক ভর্তি কন্টেইনার পড়ে রয়েছে। কিছু কন্টেইনার প্রায় ২২ বছর ধরে অনিষ্পন্ন অবস্থায় রয়েছে। এসব কন্টেইনারের মধ্যে ২৮৭টি নিলামে তোলা সম্ভব হলেও অবশিষ্ট ৪৮টি কন্টেইনারে থাকা রাসায়নিক পণ্যগুলো ধ্বংস করতে হবে। বন্দর কর্তৃপক্ষের মতে, দাহ্য পদার্থ ভর্তি এসব কন্টেইনার দীর্ঘদিন ধরে রাখা হলে দুর্ঘটনার আশঙ্কা দেখা দিতে পারে। দ্রুত এগুলো অপসারণের ব্যবস্থা নেয়া না হলে তা বড় ধরনের ঝুঁকি তৈরি করতে পারে। এ বিষয়ে চট্টগ্রাম বন্দর সচিব ওমর ফারুক বলেন, ‘কাস্টম কমিশনারকে আমরা চিঠি পাঠিয়েছি। কয়েকদিন আগেও চিঠি দেয়া হয়েছে। আশা করছি তারা দ্রুত ব্যবস্থা নেবেন। আর যে সব কন্টেইনার অকশন হবে না, সে সব যেন দ্রুত ধ্বংস করা হয়। বন্দর যেন ঝুঁকিমুক্ত থাকে।’ শুল্ক বিভাগও এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য কাজ করছে। শুল্ক কর্তৃপক্ষ বলছে, যেসব কন্টেইনার ধ্বংস করতে হবে, সেগুলোর বিষয়ে বন্দরের সহযোগিতায় বিশেষ পরিকল্পনা করা হচ্ছে। এ ছাড়া, যেসব কন্টেইনার নিলামযোগ্য, সেগুলোর নিলাম কার্যক্রমও দ্রুত শুরু করা হবে। চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের উপ কমিশনার সাইদুল ইসলাম উল্লেখ করেন, ‘বিপজ্জনক পণ্যবাহী কন্টেইনার নিয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) উচ্চ পর্যায়ের একটি আলোচনা চলছে। তারা সম্মত হয়েছেন যে, তাদের কারিগরি সহযোগিতায় আমরা এসব ধ্বংস করার ব্যবস্থা করছি। পুরো কার্যক্রম শেষ হলে আমরা এসব কন্টেইনার তাদের কাছে হস্তান্তর করব।’ গত সপ্তাহে প্রায় ১৪ বছরের পুরনো বিপজ্জনক পণ্যবাহী চারটি কন্টেইনার সরিয়ে নেয়া হয়েছে বলেও শুল্ক কর্মকর্তারা জানান। বন্দর কর্তৃপক্ষ এবং শুল্ক বিভাগের সম্মিলিত উদ্যোগে বিপজ্জনক রাসায়নিক ভর্তি কন্টেইনার দ্রুত অপসারণ করা গেলে, চট্টগ্রাম বন্দরের নিরাপত্তা সংকট হ্রাস পাবে বলে আশা করা হচ্ছে।