টানা দরপতনের পর দেশের শেয়ারবাজারে গত সপ্তাহে কিছুটা ঊর্ধ্বমুখিতার দেখা মিলেছে। সপ্তাহের শেষ তিন কার্যদিবসে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় মূল্য সূচকের বড় উত্থান হয়েছে এবং বাজার মূলধন বেড়েছে। প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) বাজার মূলধন প্রায় ৮ হাজার ৪৬৪ কোটি টাকা বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়িয়েছে ৬ লাখ ৬৫ হাজার ৩৩২ কোটি টাকায়। এছাড়া, প্রধান সূচক ডিএসইএক্স প্রায় ১০০ পয়েন্ট বেড়েছে। এটি অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে শেয়ারবাজারের ১২তম সপ্তাহ। এর আগে অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে ১১টি সপ্তাহ পার করলেও মাত্র ২ সপ্তাহ বাজারে মূল্য সূচকের উত্থান দেখা গেছে। হাসিনা সরকার পতনের পর নতুন অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেয়ার প্রথম দুই সপ্তাহ শেয়ারবাজারে বড় দরপতন ঘটে। তৃতীয় সপ্তাহে ঊর্ধ্বমুখী ধারা দেখা দিলেও এর পরবর্তী কয়েক সপ্তাহ পুনরায় দরপতনের মুখে পড়ে বাজার। গত সপ্তাহে ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ২৭৯টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে, ১০১টি কমেছে, আর ১৫টি অপরিবর্তিত ছিল। এতে প্রধান মূল্য সূচক ডিএসইএক্স গত সপ্তাহে ৮৪ দশমিক ৮০ পয়েন্ট বেড়েছে, যা ১ দশমিক ৬৬ শতাংশ। তবে গত ১০ সপ্তাহে সূচকটি ৮০৯ পয়েন্ট কমেছে। সব মিলিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের ১২ সপ্তাহের লেনদেনে প্রধান সূচক কমেছে মোট ৭২৫ পয়েন্ট। গত সপ্তাহে ডিএসই-৩০ সূচক ৪৬ দশমিক ৮৭ পয়েন্ট এবং ডিএসই শরিয়াহ সূচক দশমিক ৮৯ পয়েন্ট বৃদ্ধি পেয়েছে। মূল্য সূচকের পাশাপাশি লেনদেনের পরিমাণও বেড়েছে। গত সপ্তাহে প্রতিদিন ডিএসইতে গড়ে লেনদেন হয়েছে ৪১৬ কোটি ৬৫ লাখ টাকা, যা আগের সপ্তাহের তুলনায় ৭৭ কোটি ৯৭ লাখ টাকা বা ২৩ দশমিক শূন্য ২ শতাংশ বেশি। লেনদেনের দিক থেকে লাভেলো আইসক্রিমের শেয়ার ছিল শীর্ষে, প্রতিদিন গড়ে ১২ কোটি ৭৫ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। এর পরেই ব্র্যাক ব্যাংক ও ইসলামী ব্যাংকের অবস্থান। এছাড়া ফারইস্ট নিটিং, ইবনে সিনা ফার্মাসিউটিক্যালস, গ্রামীণফোন, অগ্নি সিস্টেম, একমি ল্যাবরেটরিজ, বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশন এবং এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিজও লেনদেনের শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে। বাজারের এই ধারাবাহিক উত্থান বিনিয়োগকারীদের জন্য ইতিবাচক ইঙ্গিত দিচ্ছে বলে মনে করা হচ্ছে।
