ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর মেগা প্রকল্পগুলোয় আরো ধীরগতি দেখা দিয়েছে। এতে রড-সিমেন্ট খাতের পরিস্থিতি আরো খারাপের দিকে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন এই খাতের ব্যবসায়ীরা। খাত সংশ্লিষ্টরা জানান, গত দুই মাসে কোম্পানি ভেদে ইস্পাতের বিক্রি কমেছে প্রায় ৭০ শতাংশ। পাশাপাশি সিমেন্টের বিক্রি কমেছে প্রায় ২০ শতাংশ। এর প্রধান কারণ হিসেবে ব্যবসায়ীরা উল্লেখ করছেন সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প বন্ধ থাকাকে। কারণ, দেশের মোট ১ লাখ ২০ হাজার টন উৎপাদিত ইস্পাতের প্রায় ৬৫ শতাংশ ব্যবহৃত হয় সরকারি প্রকল্পে। ব্যবসায়ীদের সূত্র মতে, গত দুই মাসে রডের চাহিদা কমার কারণে প্রতি টনে ছয় থেকে সাত হাজার টাকা দাম কমেছে। ফলে পণ্যের মজুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ইস্পাত কারখানার উদ্যোক্তারা জানান, সংকট কাটিয়ে বাজার ভালো হবে, এমন আশায় প্রায় সবাই চাহিদা কমের মধ্যেও বাড়তি উৎপাদন করেছিলেন। এখন বিক্রি কমে কারখানা ও গুদামে রডের স্তূপ জমেছে। বাধ্য হয়ে উৎপাদন কমিয়ে দিয়েছেন। এতে আবার উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি পাচ্ছে। ব্যবসার মূলধন জোগাড় করতে প্রতি টনে উৎপাদন খরচের চেয়ে ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা লোকসানে রড বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন তারা। এই সংকট নিরসনে শিল্প উদ্যোক্তারা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে অবিলম্বে সরকারি উন্নয়ন প্রকল্পগুলো পুনরায় চালু করা এবং শিল্পের কাঁচামালের আমদানিতে শুল্ক কমানোর আহ্বান জানিয়েছেন।
বিগত সরকারের পরিকল্পনা অনুযায়ী স্টিল উৎপাদনে বিনিয়োগ করেছিলেন উদ্যোক্তারা। কিন্তু এখন পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে সব উন্নয়ন কর্মকাণ্ড বন্ধ। সরকারি বিভিন্ন মেগা প্রকল্পের কাজ বন্ধ হওয়ায় ঠিকাদাররা মালের টাকা পরিশোধ করতে পারছে না। ফলে আমাদের লোকসান হচ্ছে।’
বলেন রানী রি-রোলিং স্টিল মিলসের নির্বাহী পরিচালক সুমন চৌধুী। দেশের শীর্ষস্থানীয় ইস্পাত পণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান বিএসআরএম গ্রুপের নির্বাহী পরিচালক তপন সেনগুপ্ত বলেন, রাজনৈতিক পট পরিবর্তনে নাজুক ইস্পাত খাতের বিক্রি প্রায় ৫০ শতাংশ কমে গেছে।