২০২৬ সাল নাগাদ কমবে ভোগ্যপণ্যের দাম : বিশ্বব্যাংকের পূর্বাভাস

প্রকাশ : ০৬ নভেম্বর ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  আলোকিত ডেস্ক

বিশ্বব্যাংক সম্প্রতি একটি পূর্বাভাসে জানিয়েছে যে, চাহিদা ও সরবরাহে ভারসাম্যের ফলে এবং আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের মূল্য হ্রাসের কারণে ২০২৫ থেকে ২০২৬ সালের মধ্যে ভোগ্যপণ্যের দাম বিশ্বব্যাপী কমবে। বিশ্বব্যাংকের তথ্যমতে, ২০২৪ সালে অপরিশোধিত তেলের দাম ব্যারেল প্রতি ৮০ মার্কিন ডলার হলেও ২০২৫ সালে তা কমে ৭৩ ডলারে এবং ২০২৬ সালে ৭২ ডলারে নেমে আসতে পারে। ভারতে প্রকাশিত অর্থনীতিবিষয়ক সংবাদমাধ্যম ইকোনমিকস টাইমসের এক প্রতিবেদনে গত রোববার এ তথ্য জানানো হয়েছে। বিশ্বব্যাংকের অক্টোবর প্রতিবেদনের বরাতে খবরে বলা হয়, ধাতব ও কৃষিপণ্যের দাম স্থিতিশীল থাকবে এবং ২০২৫ সালে ভোগ্যপণ্যের দাম ৫ শতাংশ এবং ২০২৬ সালে আরো ২ শতাংশ কমবে বলে পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে। তবে ২০২৪ সালে ভোগ্যপণ্যের দাম ৩ শতাংশ হ্রাস পাবে, যা ২০২০ সালের মূল্যের সমান। বিশ্বব্যাংকের মতে, আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম কমে যাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে ভোগ্যপণ্যের দামও হ্রাস পাবে। চীনসহ বিভিন্ন ওপেকভুক্ত দেশ এবং ওপেক+ (অর্গানাইজেশন অব দ্য পেট্রোলিয়াম এক্সপোর্টিং কান্ট্রিজ প্লাস) গোষ্ঠীর বাইরে থাকা কিছু দেশের উৎপাদন বৃদ্ধির কারণে এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হচ্ছে। তবে মধ্যপ্রাচ্যে চলমান উত্তেজনা ও যুদ্ধ পরিস্থিতির অবনতির ফলে তেলের দামে সাময়িক বৃদ্ধি হতে পারে, যা আন্তর্জাতিক বাজারেও প্রভাব ফেলতে পারে। বিশ্বব্যাংক জানিয়েছে, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ২০২৪ সালের এপ্রিল পর্যন্ত অপরিশোধিত তেলের দাম ব্যারেল প্রতি ৯০ ডলার পর্যন্ত ছিল। মধ্যপ্রাচ্যের অস্থিরতা তেলের দামে এই বৃদ্ধি ঘটিয়েছে। তবে ধাতব পণ্যের মূল্য, বিশেষ করে শিল্পকার্যক্রমে ব্যবহৃত ধাতব পদার্থের দাম মোটামুটি স্থিতিশীল রয়েছে এবং ২০২৫ সালেও এ স্থিতাবস্থা বজায় থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে। বিশ্বব্যাংক বলছে, বিশ্বব্যাপী শিল্পায়নের গতি বৃদ্ধির জন্য অ্যালুমিনিয়াম ও তামার মতো ধাতুর দাম কমবে। অ্যালুমিনিয়াম ও তামার দামের কমতির কারণে বিশ্বব্যাপী শিল্পপ্রক্রিয়ায় ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। তবে স্বর্ণের ক্ষেত্রে এর উল্টো চিত্র দেখা গেছে। ২০২৪ সালে ভূরাজনৈতিক উত্তেজনা ও উচ্চ চাহিদার কারণে স্বর্ণের দাম বাড়তে পারে, যা বিনিয়োগকারীদের জন্য উদ্বেগের কারণ হতে পারে। বিশ্বব্যাংক কৃষিপণ্যের বাজারেও স্থিতিশীলতার ইঙ্গিত দিয়েছে। প্রাকৃতিক ও আবহাওয়াগত কারণ কৃষির জন্য অনুকূল থাকায় কৃষিপণ্যের উৎপাদন স্বাভাবিক রয়েছে। আবহাওয়ার অনুকূল প্রভাবের কারণে কৃষিতে ভালো ফলন হয়েছে, যা কৃষিপণ্যের মূল্য হ্রাসে ভূমিকা রাখতে পারে। তবে বিশ্বব্যাংক সতর্ক করেছে যে, চীনের আবহাওয়ায় পরিবর্তন আসলে ভোগ্যপণ্যের দামেও ওঠানামা হতে পারে। ওপেকভুক্ত দেশগুলো এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রাজিলের মতো ওপেকের বাইরের দেশগুলো ২০২৬ সাল পর্যন্ত তেল উৎপাদন বাড়াবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ফলে তেলের দামে স্থিতিশীলতা বজায় থাকবে এবং বিশ্ববাজারে ভোগ্যপণ্যের দামও নিম্নমুখী থাকবে বলে পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে। বিশ্বব্যাংকের এই পূর্বাভাস অনুসারে, আগামী কয়েক বছরে বিশ্বব্যাপী ভোগ্যপণ্যের দাম স্থিতিশীল থাকবে এবং সামগ্রিকভাবে পণ্যের মূল্য হ্রাস পেতে পারে। তেলের দামে পরিবর্তনের সম্ভাবনা, ওপেক+ (অর্গানাইজেশন অব দ্য পেট্রোলিয়াম এক্সপোর্টিং কান্ট্রিজ প্লাস) গোষ্ঠীর উৎপাদন পরিকল্পনা এবং আবহাওয়ার পরিবর্তনমূলক প্রভাব আন্তর্জাতিক বাজারে প্রভাব ফেলবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।