বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই বাংলাদেশের এয়ারপোর্টসমূহে গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং সেবা প্রদান করে আসছে। গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে বিমানের রয়েছে সুদীর্ঘ ৫২ বছরের অভিজ্ঞতা। এ দীর্ঘ অগ্রযাত্রায় সক্ষমতা বেড়েছে বহুগুণ। পাশাপাশি অর্জন করেছে দেশি-বিদেশি স্বীকৃতি। গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং খাতের সর্বোচ্চ স্বীকৃতি হিসেবে সম্প্রতি ইন্টারন্যাশনাল এয়ার ট্রান্সপোর্ট অ্যাসোসিয়েশন থেকে বিমান IATA Safety Audit for Ground Operations (ISAGO) সনদ অর্জন করেছে। পাশাপাশি যুক্তরাজ্য ও ইউরোপীয় ইউনিয়নে কার্গো রপ্তানির জন্য কার্গো হ্যান্ডলিংয়ের ক্ষেত্রে RA3 সনদ লাভ করেছে। এছাড়াও বিমানের রয়েছে IOSA সনদ এবং CAAB -এর অনুমোদন। সম্প্রতি বিমানের গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং সক্ষমতা উন্নয়নে ২০২৩-২৪ মেয়াদে জাপানের JICA -এর সহযোগিতায় একটি প্রজেক্ট গ্রহণ করা হয়। এর মাধ্যমে স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং সিস্টেম আপগ্রেডেশনসহ জিএসই, র্যাম্প ও কার্গো শাখার কর্মীদের প্রশিক্ষণ প্রদানের মাধ্যমে গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং সার্ভিসের মান বৃদ্ধি ও আধুনিকায়নের ব্যবস্থা গৃহীত হয়েছে। থার্ড টার্মিনালকে কেন্দ্র করে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করছে। জনবল নিয়োগ ও প্রশিক্ষণ প্রদানের পাশাপাশি নতুন নতুন ইক্যুইপমেন্ট ক্রয় করা হচ্ছে। এরইমধ্যে বেশ কিছু ইক্যুইপমেন্ট বিমানের জিএসই বহরে যুক্ত হয়েছে। এছাড়াও কয়েক মাসের মধ্যে পুশব্যাক টো ট্রাকটর, এয়ার স্টার্ট ইউনিট, কন্টেইনার প্যালেট ইউনিট, এম্বুলিফট, প্যাসেঞ্জার স্টেপ, বেল্ট লোডার, কন্টেইনার প্যালেট ট্রান্সপোর্টার, কন্টেইনার প্যালেট লোডার, ওয়াটার কার্ট, ফ্লাশ কার্টসহ এ ধরনের প্রায় ৭০টি ইক্যুইপমেন্ট বিমানের জিএসই বহরে যুক্ত হবে। এছাড়াও এয়ারপোর্ট সার্ভিস, জিএসইসহ বিভিন্ন শাখায় দক্ষ জনবল নিয়োগের প্রক্রিয়া চলছে। গতবছর ২০২৩ সালে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স বাংলাদেশে শিডিউল ফ্লাইট পরিচালনাকারী ৩৫টি বিদেশি এয়ারলাইন্স ও ১২ টি নন-শিডিউল বিদেশি এয়ারলাইন্সসহ ৫৭, ৩৫০ টি ফ্লাইটের ৯২, ০১, ৯৪২ জন সম্মানিত যাত্রীকে গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং সার্ভিস প্রদান করেছে এবং ২ কোটি ৩০ লাখ ব্যাগেজ হ্যান্ডেল করেছে। বর্তমানে প্রথম ব্যাগেজ প্রাপ্তির গড় সময় ১৮.৬৬ মিনিট এবং শেষ ব্যাগেজ প্রাপ্তির গড় সময় ৪৮ মিনিট। গত জুন মাসে ব্যাগেজ ওটিপি ৯৬.৪২ শতাংশে উন্নীত হয় এবং সেপ্টেম্বর মাসের ব্যাগেজ ওটিপি ৯২.৮৭ শতাংশ। বর্তমানে বিমানের নিজস্ব ফ্লাইট ওটিপি ৮২.৭০ শতাংশ। বিমানের ব্যাগেজ হ্যান্ডলিং সার্ভিসে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহীতা বৃদ্ধিকল্পে সংশ্লিষ্ট বিমানকর্মীদের দেহে বডি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার ও ম্যানেজমেন্ট এর কঠিন পদক্ষেপ এর কারণে সেবার মানে ব্যাপক উন্নয়ন ঘটেছে। সেবার ক্ষেত্রে সম্মানিত যাত্রীদের অভিযোগকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়া হয় এবং প্রযুক্তির সহায়তায় যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। অভিজ্ঞ জনবল, আধুনিক যন্ত্রপাতি ও থার্ড টার্মিনালের উন্নত অবকাঠামোকে কাজে লাগিয়ে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স সম্মানিত যাত্রীবৃন্দ, আমদানি-রপ্তানিকারক ও দেশি-বিদেশি এয়ারলাইন্সকে আধিকতর উন্নত সেবা প্রদানে সর্বাত্মক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। সম্মানিত যাত্রীদের ভ্রমণকে অধিকতর আনন্দদায়ক ও মনোরম করতে বিমান বদ্ধপরিকর। তথাপি একশ্রেণির তথাকথিত বিশেষজ্ঞ মহল বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স এর বিরুদ্ধে বিভিন্ন মাধ্যমে সক্রিয় রয়েছে। কোনরূপ তথ্য-প্রমাণ উপস্থাপন ব্যতিরেকে বিভিন্ন গণমাধ্যমে ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও মনগড়া বক্তব্য প্রদানের মাধ্যমে রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান বিমান তথা দেশ বিরোধী চক্রান্তে লিপ্ত হয়েছে। গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং খাত থেকে রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান বিমান উল্লেখযোগ্য রাজস্ব আয় করে থাকে। বাইরের প্রতিষ্ঠানকে এ দায়িত্ব দিলে দেশ বিপুল পরিমাণ রাজস্ব হারাবে এবং দেশের স্বার্থ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তথাপি দেশের স্বার্থ বিরোধী কিছু কুচক্রী মহল বিভিন্ন মাধ্যমে সক্রিয় রয়েছে। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স সম্মানিত যাত্রী ও স্টেকহোল্ডারগণকে উন্নত সেবা প্রদানের মাধ্যমে দেশের স্বার্থ রক্ষায় সচেষ্ট রয়েছে।