বাংলাদেশের আর্থিক ও জ্বালানি খাতকে দেশের দুটি ‘কিডনি’ হিসেবে উল্লেখ করে সমালোচনা করেছেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মানীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। গতকাল শনিবার রাজধানীর মহাখালীতে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত ‘পলিসি ডায়ালগ অন ফিন্যান্সিয়াল অ্যান্ড ইকোনমিক রিফর্মস ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি এ মন্তব্য করেন। ড. দেবপ্রিয় বলেন, ‘বাংলাদেশের দুইটি কিডনি ধ্বংস হয়ে গেছে। একটি ফিন্যান্সিয়াল সেক্টর, অন্যটি এনার্জি সেক্টর। বিগত সরকার এই দুই সেক্টরকেই ধ্বংস করেছে। যারা এনার্জি সেক্টরকে শেষ করেছে, তারাই আবার ফিন্যান্সিয়াল সেক্টরকেও ধ্বংস করেছে।’ ড. দেবপ্রিয় তার বক্তব্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ভূমিকা ও মুদ্রানীতি নিয়ে সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, ‘বিগত সরকারের সময় মাসোহারা দিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ভেতরে লোক রাখা হয়েছিল, যারা টাকার যোগান দিতে মুদ্রা ছাপিয়েছেন। রিজার্ভের সঠিক তথ্য প্রকাশের পরিবর্তে ভুয়া রিজার্ভ দেখানো হয়েছে। এমনকি ব্যাংক পরিচালনার জন্য যে যোগ্যতা প্রয়োজন, তা না থাকা সত্ত্বেও একাধিক ব্যক্তিকে ব্যাংকের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। ফলে ব্যাংকিং খাতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়েছে।’ তিনি আরও উল্লেখ করেন, এই অবস্থার ফলে আর্থিক খাতে সুশাসনের অভাব দেখা দিয়েছে এবং জনগণের অর্থনৈতিক নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়েছে। ব্যাংকিং খাতের দুর্নীতির কারণে দেশের ফিন্যান্সিয়াল সেক্টরে দীর্ঘমেয়াদি সংকট তৈরি হয়েছে। ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের ফাঁদে আটকে পড়া দেশ হিসেবে চিহ্নিত করেন। তিনি বলেন, ‘আমরা এরইমধ্যে মধ্যম আয়ের ফাঁদে আটকে গেছি। যতক্ষণ না রাষ্ট্রের কার্যকর মেরামত সম্ভব হচ্ছে, ততক্ষণ অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা আনা সম্ভব হবে না। শুধু আংশিক সংস্কার করে কোনো সমাধান পাওয়া যাবে না।’ তিনি আরো যোগ করেন, বিগত সরকারের আমলে প্রবৃদ্ধির পরিসংখ্যান নিয়ে বিভিন্ন সমস্যার কথা উঠে এসেছে।