অর্থনীতির স্থিতিশীলতায় ইতিবাচক সাড়া, বাড়ছে রিজার্ভ
দুর্নীতি কমাতে উদ্যোগ, বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবাহে গুরুত্ব দিচ্ছে সরকার
প্রকাশ : ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক
ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, দেশের অর্থনীতি ক্ষয় হতে শুরু করলেও ধীরে ধীরে স্থিতিশীলতা ফিরে আসছে। এর পাশাপাশি বাড়ছে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ। গতকাল শনিবার রাজধানীর একটি হোটেলে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) আয়োজিত এক বাণিজ্য সম্মেলনে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অর্থ উপদেষ্টা এসব কথা বলেন। অর্থ উপদেষ্টা বলেন, দেশের অর্থনীতিকে পুনরুজ্জীবিত করতে সময় লাগবে। তিনি বলেন, ‘আগের সরকারের রেখে যাওয়া অনিয়ম-দুর্নীতি দুই-চার মাসে স্বাভাবিক করা সম্ভব নয়। গত ১৫ বছরে অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে যা ঘটেছে তা অকল্পনীয়। তবে ভবিষ্যতে টাকাপাচার সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করা সম্ভব হবে।’
ব্যাংকিং খাতে স্থিতিশীলতা আনার উদ্যোগ : তিনি জানান, ব্যাংকগুলোতে স্থিতিশীলতা আনতে ২২ হাজার কোটি টাকা দেয়া হয়েছে। যদিও এই সিদ্ধান্ত নিয়ে বিতর্ক দেখা দিয়েছে। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর প্রথমে দিতে চাননি। কিন্তু আমি বলেছি, এটা দাও। পত্রিকাগুলোতে নতুন মুদ্রা ছাপানোর কথা লেখা হয়েছে। টাকা তো ছাপাতে হবেই। কারণ, টাকা সময়ের সঙ্গে নষ্ট হয়ে যায়। তবে এর আগে ৬০ হাজার কোটি টাকা ছাপানো হয়েছে, বিষয়টি এমন নয়।’ অর্থ উপদেষ্টা আরো বলেন, প্রাইভেট সেক্টরে ক্রেডিট সাপ্লাই যেন কোনো ভাবেই কমে না যায়, সেটা নিশ্চিত করা হচ্ছে। তবে বর্তমানে ঋণ প্রবাহ কিছুটা কম রয়েছে।
বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবাহ অটুট রাখার প্রতিশ্রুতি : ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ জানান, সরকার আপাতত পলিসি রেট বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয়নি। তিনি বলেন, ‘বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবাহ যেন কমে না যায়, সে বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে।’ রাজস্ব ব্যবস্থার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কার্যক্রম এবং আইন প্রণয়নের দায়িত্ব আলাদা করা হবে। এতে রাজস্ব ব্যবস্থাপনায় দক্ষতা বাড়বে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। এলডিসি (স্বল্পোন্নত দেশ) থেকে উত্তরণের পর গার্মেন্টস শিল্পে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে না বলে তিনি আশ্বস্ত করেন। তবে প্রতিযোগিতামূলক বাজারে টিকে থাকতে ব্যবসায়ীদের আরো উদ্ভাবনী হতে হবে বলে উল্লেখ করেন তিনি। সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দিন, ডিসিসিআই সভাপতি আশরাফ আহমেদ, অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ লিমিটেডের (এবিবি) চেয়ারম্যান সেলিম আর এফ রহমান, এবং ফরেন ইনভেস্টরস চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ফিকি) সভাপতি জাভেদ আখতার। এই সম্মেলনে বক্তারা অর্থনীতির বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করেন। বিশেষত ব্যাংকিং খাত এবং বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ বৃদ্ধির প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়। অর্থনীতির চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও সরকারের গৃহীত উদ্যোগ ইতিবাচক ফল বয়ে আনছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বৃদ্ধি এবং রাজস্ব ব্যবস্থাপনায় পরিকল্পিত সংস্কার অর্থনীতিতে নতুন গতি আনবে বলে তারা আশা করছেন।