মূল ধারার বিনিয়োগ মাধ্যম হতে যাচ্ছে বিটকয়েন
প্রকাশ : ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
আলোকিত ডেস্ক
ডিজিটাল মুদ্রা ক্রিপ্টোকারেন্সির বিষয়ে মানুষের মনোভাবে পরিবর্তন আসছে। আগে যারা এই মুদ্রা কিনতে চাইতেন না, এখন তারা এটির বাড়বাড়ন্ত দেখে ঈর্ষা বোধ করছেন। লন্ডন শহরে বসবাসরত মাইলস নামের এক চিকিৎসক অনেক দিন ধরে বন্ধুদের ক্রিপ্টোকারেন্সিতে বিনিয়োগ করতে উৎসাহিত করছেন। কিন্তু বন্ধুরা কিছুতেই তার কথা কানে তোলেননি। ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে ক্রিপ্টোকারেন্সি বিশেষ করে বিটকয়েনের দাম হু হু করে বাড়ছে। ফলে মাইলসের বিনিয়োগ ফুলেফেঁপে দাঁড়িয়েছে ২ দশমিক ৩ মিলিয়ন বা ২৩ লাখ পাউন্ড। ক্রিপ্টোকারেন্সি আয় থেকে চলতি বছরের শুরুতে বাড়ি কেনার জন্য মাইলস ৬ লাখ পাউন্ড তুলে নিয়েছেন। খবর দ্য গার্ডিয়ানের। মাইলস সেই ২০১২ সালে বিটকয়েনে ৪ হাজার পাউন্ড বিনিয়োগ করেছিলেন। বিটকয়েনের মূল্য প্রতিদিনই ওঠানামা করলেও তিনি এখন অর্থনৈতিকভাবে নিজেকে নিরাপদ বোধ করেন। ডোনাল্ড ট্রাম্প নির্বাচনি প্রচারণার আগেই বিটকয়েনের দাম ৯৭ হাজার ডলারে উঠেছে, সর্বকালের রেকর্ড ভঙ্গ করেছে। তখন তিনি অঙ্গীকার করেন, বিটকয়েনকে মূল ধারার সম্পদ হিসেবে অনুমোদন দেবেন। ফলে গত এক মাসে বিটকয়েনসহ ক্রিপ্টোকারেন্সিতে বিনিয়োগ বেড়েছে। যুক্তরাজ্যের ফাইন্যান্সিয়াল কনডাক্ট অথরিটির (এফসিএ) ভাষ্য, যুক্তরাজ্যের ১২ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের হাতে ক্রিপ্টোকারেন্সি আছে।
এফসিএর জরিপে দেখা গেছে, বেশির ভাগ বিনিয়োগকারী গত চার বছরে এই ক্রিপ্টোকারেন্সির বাজারে বিনিয়োগ করেছেন। এ ক্ষেত্রে অনুঘটকের ভূমিকা পালন করেছে কোভিড লকডাউন।
ওই সময় ব্রিটেনসহ উন্নত দেশগুলোতে সরকার প্রণোদনা দিয়েছে; মানুষ ঘর থেকে বেরোতে পারেনি। ওই সময়ে অ্যাপস ও বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে ক্রিপ্টোকারেন্সিতে বিনিয়োগ সহজ করা হয়। ফলে মানুষ তখন অবসর সময়ে এই মুদ্রায় বিনিয়োগ করে। এক জরিপে দেখা গেছে, এখন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ, যেমন শিক্ষক, ব্যাংকার নার্স ও আইটি পেশাদারেরা এই ক্রিপ্টোকারেন্সিতে বিনিয়োগ করছেন। ফলে এক সময় কারেন্সি যে শুধু প্রযুক্তি জগতের মানুষের বিনিয়োগ ক্ষেত্র হিসেবে মনে করা হতো, সেই ধরাবাঁধা চিত্রটা পাল্টে গেছে। এই শ্রেণির মানুষেরা মনে করছেন, বড় ধরনের ব্যক্তিগত সম্পদ অর্জনের ক্ষেত্রে ক্রিপ্টোকারেন্সি বিনিয়োগের সেরা মাধ্যম। মধ্যবিত্ত শ্রেণির অনেকেই বলেছেন, প্রথাগত আর্থিক ব্যবস্থায় তাদের আস্থা কমে গেছে। সে কারণে তারা নিজেদের জীবনের লক্ষ্য পূরণের জন্য এই মুদ্রা কেনার দিকে ছুটছেন। মোদ্দা কথা হলো, মানুষ এখন আর্থিক অনিশ্চয়তার বিরুদ্ধে সুরক্ষা হিসেবে বিটকয়েনসহ বিভিন্ন ক্রিপ্টোকারেন্সিতে বিনিয়োগ করছেন।