ঢাকা ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৭ পৌষ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

জ্বালানি আমদানি না বাড়ালে ইউরোপকে শুল্কারোপের হুমকি ট্রাম্পের

জ্বালানি আমদানি না বাড়ালে ইউরোপকে শুল্কারোপের হুমকি ট্রাম্পের

যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইউরোপীয় ইউনিয়নকে (ইইউ) সতর্ক করে বলেছেন, তারা যদি যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে তেল ও গ্যাস আমদানি বাড়াতে ব্যর্থ হয়, তবে তাদের ওপর রফতানি পণ্যে শুল্ক আরোপ করা হবে। এসব পণ্যের মধ্যে রয়েছে গাড়ি ও যন্ত্রপাতি। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে। ইইউ এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের তেল ও গ্যাসের বৃহত্তম ক্রেতা। তবে বর্তমানে কোনো অতিরিক্ত জ্বালানি সরবরাহের সুযোগ নেই, যদি না যুক্তরাষ্ট্র উৎপাদন বাড়ায় বা এশিয়ার মতো অন্য বাজার থেকে সরবরাহ কমানো হয়। ট্রাম্প বলেছেন, আমি ইউরোপীয় ইউনিয়নকে বলেছি যে তাদের আমাদের বিপুল ঘাটতি পূরণ করতে হবে, এবং তা সম্ভব হবে আমাদের তেল ও গ্যাসের ব্যাপক আমদানি বাড়ানোর মাধ্যমে। অন্যথায়, শুল্কই হবে একমাত্র পথ! ইউরোপীয় কমিশন এ প্রসঙ্গে জানায়, নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার এবং জ্বালানি খাতে সহযোগিতা নিয়ে আলোচনায় তারা প্রস্তুত। কমিশনের এক মুখপাত্র বলেন, ইইউ রাশিয়া থেকে জ্বালানি আমদানি ধীরে ধীরে বন্ধ করার এবং সরবরাহের উৎস বহুমুখী করার বিষয়ে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। ইইউর পরিসংখ্যান দফতর ইউরোস্ট্যাটের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালের প্রথম প্রান্তিকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের ৪৭ শতাংশ তরল প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) এবং ১৭ শতাংশ তেল আমদানি যুক্তরাষ্ট্র থেকে এসেছে। ট্রাম্প আরো জানান, যুক্তরাষ্ট্রের তিনটি প্রধান বাণিজ্য অংশীদার কানাডা, মেক্সিকো ও চীনের ওপর তিনি এরই মধ্যে উচ্চ শুল্ক আরোপের অঙ্গীকার করেছেন। তবে ইউরোপীয় দেশগুলোর তেল ও গ্যাস কোম্পানিগুলো বেশিরভাগই বেসরকারি। ফলে সরকার এ বিষয় সরাসরি নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না। ক্রেতারা মূলতো দাম ও সরবরাহের কার্যকারিতা বিবেচনায় তেল ও গ্যাস ক্রয় করে থাকেন।

বিশ্লেষকরা বলছেন, ট্রাম্পের হুমকির পর ইউরোপ-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্য সম্পর্ক নতুন এক উত্তেজনাপূর্ণ পর্বে প্রবেশ করতে যাচ্ছে। ২০২২ সালে ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের পর রাশিয়ার জ্বালানির ওপর নির্ভরশীলতা কমাতে ইউরোপ যুক্তরাষ্ট্র থেকে তেল ও গ্যাসের আমদানি ব্যাপকভাবে বাড়িয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র বর্তমানে বিশ্বের বৃহত্তম তেল উৎপাদক, দিনে ২০ মিলিয়ন ব্যারেলেরও বেশি তেল উৎপাদন করে। এর মধ্যে যা নিজ দেশের চাহিদা মেটাতে প্রয়োজন হয় না, তা রফতানি করা হয়। যুক্তরাষ্ট্রের মোট অপরিশোধিত তেল রফতানির অর্ধেকের বেশি ইউরোপে যায়। নেদারল্যান্ডস, স্পেন, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, ডেনমার্ক ও সুইডেন দেশটির প্রধান জ্বালানি আমদানিকারক। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ইউরোপ বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র থেকে তাদের সর্বোচ্চ আমদানি ক্ষমতা প্রায় পূর্ণ করে ফেলেছে। ২০২৫ সালে ইউরোপে শোধনাগার বন্ধের সম্ভাবনা আমদানি আরো বাড়ানোর ক্ষেত্রে বাধা হতে পারে। যুক্তরাষ্ট্র তরল প্রাকৃতিক গ্যাসের (এলএনজি) ক্ষেত্রেও বিশ্বের বৃহত্তম উৎপাদক ও ভোক্তা। ২০২৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রের এলএনজির ৬৬ শতাংশ রফতানি গিয়েছিল ইউরোপে। এর মধ্যে যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, স্পেন ও জার্মানি ছিল প্রধান গন্তব্য। অন্যদিকে, ইইউর রফতানিতে প্রাধান্যশীল দেশ জার্মানি, যার মূল পণ্য গাড়ি, যন্ত্রপাতি ও রাসায়নিক দ্রব্য।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত