রাজধানীর পূর্বাচলে বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে চলছে মাসব্যাপী ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা। গতকাল শনিবার ছুটির দিনে মেলা প্রাঙ্গণ ঘুরে দেখা যায় অনেক স্টলের কাজ এখনো চলছে। কিছু স্টলে ক্রেতা আসছেন। তবে আজ ছুটির দিনে বৈরী আবহাওয়ার কারণে এখনো আশানুরূপ ক্রেতা সমাগম হয়নি।
ব্যবসায়ীদের মতে, দেশের বর্তমান পরিস্থিতি, চলমান মূল্যস্ফীতি, বৈরী আবহাওয়ার কারণে এ বছর এখনো বাণিজ্যমেলা জমে উঠেনি। নতুন বছরের প্রথম দিন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বাণিজ্যমেলা উদ্বোধন করেন। এরপর সাধারণ জনগণের জন্য উন্মুক্ত হয় মেলা। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত মেলা চলছে। শুধু সাপ্তাহিক ছুটির দিন খোলা থাকছে রাত ১০টা পর্যন্ত। এবার ফার্নিচার পণ্যকে ২০২৫ সালের ‘বর্ষপণ্য’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। হল ‘এ’ এর ডান দিকে রয়েছে ফার্নিচার এবং বামদিকে রয়েছে ইলেকট্রনিকসের প্যাভিলিয়ন। মেলায় একটু পর পর পণ্য নিয়ে ট্রাক আসছে। কিছু স্টলে এখনো পণ্য ওঠানো হয়নি। তারা ট্রাকে পণ্য এনে এখনো স্টল সাজাচ্ছেন। কেউ আবার বাহারি স্লোগানে ক্রেতা আকর্ষণের চেষ্টা করছেন। হল ‘এ’ এর প্রবেশ মুখেই রয়েছে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের রিগ্যাল ফার্নিচারের প্যাভিলিয়ন। প্যাভিলিয়নের ম্যানেজার রিদয় জাগো নিউজকে বলেন, আবহাওয়ার কারণে এখনো ক্রেতা সমাগম কম। গত শুক্রবার কিছুটা বেচাকেনা হয়েছিল। আজ এখনো সেল শুরু হয়নি। তিনি জানান, আমরা এ বছর বাণিজ্যমেলাকে সামনে রেখে নতুন কিছু বেডরুম সেট, কিচেন সেট, ড্রয়িংরুম সেট নিয়ে এসেছি। আমাদের সব পণ্যে ফ্ল্যাট ১০ শতাংশ ডিসকাউন্ট চলছে। এছাড়া আমাদের হোম ডেলিভারির ব্যবস্থা আছে। ভিশন এম্পোরিয়ামের প্যাভিলিয়ন ইনচার্জ খোকন আহমেদ বলেন, শীতের কারণে কাস্টমার একটু কম। গতকাল আমাদের ভালো সেল হয়েছিল। আশা করছি বিকালে জনসমাগম বাড়বে। প্রতি বছরের মতো এবছরও মেলাকে সামনে রেখে আমরা নতুন কিছু মডেল নিয়ে এসেছি। মেলা উপলক্ষে আমাদের সব পণ্যে ফ্ল্যাট ১৫ শতাংশ ডিসকাউন্ট চলছে। হোম ডেলিভারির সু-ব্যবস্থা আছে। হল ‘বি’ ঘুরে দেখা যায় সেখানে দেশি বিদেশি বিভিন্ন স্টলে পণ্য সাজিয়ে অপেক্ষা করছেন বিক্রেতারা। বেশিরভাগ স্টলই ছিল ফাঁকা। বোম্বে ফুটওয়্যারের সেলসম্যান আসাদ বলেন, গতকাল শনিবার হওয়ায় আশা করছি ক্রেতা সমাগম বাড়বে। মেলা শুরু হওয়ার পর থেকে শীত বেড়ে যাওয়ায় কাস্টমার আসেনি। আজ সূর্য উঠেছে, তাই বিকালে ভালো বিক্রি হবে বলে মনে হচ্ছে। আগের বছরের তুলনায় এবার মেলায় স্টল সংখ্যা বৃদ্ধি পেলেও ক্রেতা সমাগম কম। বিক্রেতারা বলছেন অনেক পুরোনো বিক্রেতারা এবার আসেননি। কিন্তু বেশকিছু নতুন ব্যবসায়ী এসেছেন। দেশীয় প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি বিদেশি ৭ দেশের ১১ প্রতিষ্ঠান এবারের মেলায় অংশ নিয়েছে। তাওসিফ আহমেদ লোন একজন ভারতীয় বিক্রেতা। তিনি ভারতের কাশ্মীর থেকে প্রথমবার বাণিজ্যমেলায় এসেছেন। তিনি বলেন, প্রথম ২-৩ দিন কোনো বেচাকেনা হয়নি। আমার মনে হয় আবহাওয়া খারাপ থাকার কারণেই মানুষ মেলায় আসছেন না।
আমার স্টলে অরজিনাল কাশ্মীরি শাল, চাদর, কুর্তা, ব্যাগ, ইত্যাদি আছে। আজ এখন পর্যন্ত কোনো বিক্রি হয়নি। আশা করছি দুপুরের পর বিক্রি ভালো হবে। মোহাম্মদ ইনকিলাব পাকিস্তান থেকে এসেছেন এবারের বাণিজ্যমেলায়। তিনি গত ২২ বছর ধরে মেলায় আসছেন। কথা হলে তিনি বলেন, আমার দোকানের নাম দি খলিল সুজ। এখানে ৬০০ টাকা থেকে ২১০০ টাকার মধ্যে লেডিস সুু, জুতা, কোলাপুরিসহ বিভিন্ন ডিজাইনের জুতা পাওয়া যাবে। বেচাকেনা নিয়ে তিনি বলেন, তেমন একটা বেচাকেনা নেই। সবে তো মেলা শুরু। আজ মাত্র চতুর্থ দিন। আশা করছি কিছুদিন পর বিক্রি বাড়বে।