এনবিআর কর্তৃক হোটেল-রেস্তোরাঁ, দই-মিষ্টি এবং ব্রেড-বিস্কুট, কনফেকশনারী তথা সেবা খাতের ভ্যাট হার হঠাৎ ৫% থেকে বাড়িয়ে ১৫% করার প্রতিবাদে বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতি, বগুড়া জেলা শাখার উদ্যোগে গতকাল বুধবার বেলা সাড়ে ১১টায় শহরের সাতমাথাস্থ সৈকত হোটেল ও রেস্তোরাঁর ২য় তলায় সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। মত বিনিময় সভায় সভাপতির বক্তব্যে সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক মহাসচিব ও বর্তমান বগুড়া জেলা শাখার সভাপতি এম রেজাউল করিম সরকার রবিন বলেন, ভ্যাট বাড়ায় হোটেল-রেস্তোরাঁ মালিক সমিতি এখন দিশেহারা। আমরা রেস্তোরাঁ মালিকরাও প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ক্রেতা। বর্ধিত ভ্যাট আরোপের কারণে বর্তমানে বাজারের সব পণ্যের ক্রয় মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। এমতাবস্থায় একজন রেস্তোরাঁ মালিক একজন বিক্রেতা হিসেবে যেমন সরকারের সব ব্যবসায়িক ভ্যাট-ট্যাক্স পরিষদ করছেন ঠিক তেমনিভাবে ক্রেতা হিসেবে পণ্যের উপরে ভ্যাট-ট্যাক্স প্রদান করে ঊর্ধ্বমূল্যে পণ্য ক্রয় করছেন। এভাবে একজন রেস্তোরাঁ ব্যবসায়ীর উপর দিন দিন বাড়ছে ভ্যাট-ট্যাক্সের বোঝা। করোনা ভাইরাসের কারনে ক্ষতিগ্রস্থ সেক্টরের মধ্যে রেস্তোরাঁ সেক্টরটি সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছিল।
করোনা পরবর্তী সময়ে রাশিয়া, ইউক্রেন যুদ্ধসহ বেশ কিছু কারণে চলছে দ্রব্যমূল্যের সীমাহীন ঊর্ধ্বগতি। জীবন-জীবিকার সমন্বয়ে রেস্তোরাঁ ব্যবসায়ীরা আজ দিশেহারা। এছাড়া মাঠ পর্যায়ে ভ্যাটের নানাবিধ সমস্যা আমরা সহ্য করে ব্যবসা পরিচালনা করছি। বর্তমান বাজারে নিয়ন্ত্রণহীন ভাবে দ্রব্যমুল্যের ঊর্ধ্বগতিতে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য ভোক্তার ক্রয় সীমার বাহিরে চলে যাচ্ছে। তার উপরে অধিকাংশ রেস্তোরাঁর ভোক্তাই মধ্যবিত্ত, কর্মজীবী, শ্রমজীবী। তাই ভ্যাট বৃদ্ধিতে ভোক্তার উপর উঠবে বাড়তি দামের বোঝা। রেস্তোরাঁ হবে ক্রেতা শূন্য। অন্যদিকে বর্তমানে সিদ্ধান্ত অনুযায়ী রেস্তোরাঁ ব্যবসার উপর ৫% থেকে বর্ধিত ভ্যাট ১৫% করা হচ্ছে এবং সম্পূরক শুল্ক (এসডি) নামে পূর্বে আরো একটি ১০% করের বোঝা সাধারণ মানুষের উপর চাপিয়ে দেয়া হয়েছে। যদি বর্ধিত ভ্যাট ১৫% ও সম্পূরক শুল্ক (এসডি) ১০% করা হয় তবে সাধারণ ভোক্তাকে মোট ২৫% কর প্রদান করতে হবে। এ অবস্থায় ভোক্তার নিকট হতে কোনো ভাবেই এই ২৫% বাড়তি কর আদায় করা সম্ভব হবে না। ভ্যাট আদায়ের ফলে ব্যবসা পরিস্থিতি খারাপ যাচ্ছে এবং সামনে আরো খারাপ হবে। তিনি আরো বলেন রেস্তোরাঁ সেক্টরের ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা ও ভোক্তার উপর অযৌক্তিক হারে ভ্যাট ও সম্পূরক শুল্ক (এসডি) নির্ধারণের সিদ্ধান্ত অন্যায় ও অযৌক্তিক। এই বর্ধিত ভ্যাট ও সম্পূরক শুল্ক প্রত্যাহার করতে হবে। সরকারের এই ভ্যাট বৃদ্ধির সিদ্ধান্তে বিপুল সংখ্যক ক্ষুদ্র প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হবে এবং এতে মূল্যস্ফীতি ও কর্মসংস্থানের উপর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।