‘সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য না কমলে প্রান্তিক খামারি থাকবে না’
প্রকাশ : ১৯ জানুয়ারি ২০২৫, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক
পোল্ট্রি খাত দেশের খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। লাখের বেশি প্রান্তিক খামারি স্বল্প পুঁজিতে ডিম ও মুরগি উৎপাদন করে মানুষের প্রোটিনের চাহিদা পূরণে অবদান রাখছেন। তারাই এই খাতের মূল চালিকাশক্তি। কিন্তু কর্পোরেট গ্রুপগুলোর পরিকল্পিত আধিপত্য বিস্তারের কারণে পোল্ট্রি খাত এখন গভীর সংকটে পড়েছে। সে জন্য বড় কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানগুলোর দৌরাত্ম্য এবং সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে দেশের প্রান্তিক খামারিরা আর খামার চালাতে পারবেন না। গতকাল শনিবার গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে এ সব কথা বলেছেন বাংলাদেশ পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. সুমন হাওলাদার। তিনি অভিযোগ করেন, কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো ফিড, ডে-ওল্ড চিক (ডিওসি), ওষুধ এবং বাজার নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে একচেটিয়া আধিপত্য তৈরি করছে। যা প্রান্তিক খামারিদের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এছাড়া, কিছু সরকারি অসাধু কর্মকর্তার দায়িত্ব অবহেলার কারণেও পোল্ট্রি খাত আরো বিপর্যয়ের মুখে পড়ছে। কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানগুলোকে সহযোগিতা করার নামে তারা এমন সিদ্ধান্ত নিচ্ছে যা প্রান্তিক খামারিদের অস্তিত্বকে বিপন্ন করছে। সুমন হাওলাদার বলেন, বর্তমানে কর্পোরেট গ্রুপগুলোর একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণের কারণে প্রান্তিক খামারিরা ন্যায্য বাজারমূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। উৎপাদন খরচ ক্রমাগত বাড়ছে, অথচ বাজারে প্রতিযোগিতার অভাবে তারা তাদের পণ্যের জন্য ন্যায্যমূল্য পাচ্ছেন না।
এর ফলে খামারিরা একে একে তাদের খামার বন্ধ করতে বাধ্য হচ্ছেন। তিনি আরো বলেন, যদি এই অবস্থা অব্যাহত থাকে তাহলে দেশের ডিম ও মুরগির উৎপাদনে বড় ধরনের সংকট সৃষ্টি হবে। কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো একচেটিয়া নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করে ডিম ও মুরগির দাম নিজেদের ইচ্ছেমতো নির্ধারণ করবে, যা সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে যাবে। তাই বাংলাদেশ পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন মনে করে, দেশের পোল্ট্রি খাতকে রক্ষা করতে হলে প্রান্তিক খামারিদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে।
সে জন্য তিনি সংগঠনের পক্ষ থেকে সরকারের কাছে বেশকিছু প্রস্তাব তুলে ধরেন। সেগুলো হচ্ছে- দ্রুত পোল্ট্রি বোর্ড গঠন করে পোল্ট্রি খাতকে রক্ষা করতে হবে। কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানের একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণ রোধে দ্রুত কার্যকর নীতিমালা প্রণয়ন করতে হবে। প্রান্তিক খামারিদের জন্য সহজ শর্তে জামানতবিহীন ঋণ, প্রযুক্তি এবং প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা সরকারিভাবে করতে হবে। বাজারে দামের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা এবং ফিড ও ডিওসির মূল্য নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে।