শেষ মুহূর্তে চলছে ঈদ উদযাপনের প্রস্তুতি। তবে বাড়তি চাহিদা বিবেচনায় ঈদকে কেন্দ্র করে বেড়েছে সবধরনের মুরগি ও গরুর মাংসের দাম। বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ঈদের সপ্তাহখানেক আগেই একদফায় ১৫ থেকে ২০ টাকা বেড়ে গেছে মুরগির দাম। ঈদের আগ মুহূর্তে আরেক দফায় বাড়ানো হয়েছে দাম। তবে অন্যান্য দিনের তুলনায় মাছের বাজার ক্রেতা সমাগম একেবারেই কম দেখা গেছে। রাজধানীর একাধিক বাজার ঘুরে এবং ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে। বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ২১০-২২০ টাকা, সোনালি মুরগি ৩১০-৩৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ব্যবসায়ীরা জানান, গত এক সপ্তাহে ব্রয়লার মুরগি কেজিতে ২০ থেকে ৩০ টাকা ও সোনালি মুরগি ৩০ টাকা বেড়েছে। যেখানে দুই সপ্তাহ আগেও ব্রয়লার মুরগির কেজি ১৯০-২০০ টাকা ও সোনালি মুরগি ২৮০-৩০০ টাকায় বিক্রি হতো। আর প্রতি কেজি দেশি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৬৫০-৬৮০ টাকা, যা সপ্তাহ দুয়েক আগে ছিল ৬১০-৬৪০ টাকা। একজন বিক্রেতা বলেন, ‘ঈদ উপলক্ষে চাহিদা বেড়েছে। এ কারণে আমাদেরও পাইকারি বাজার থেকে বেশি দামে মুরগি কিনতে হচ্ছে। এক কেজি সোনালি মুরগি ৩১০ টাকায় বিক্রি করলে আমাদের ২০ টাকা লাভ হয়। কেউ কেউ আরও বেশি দামে বিক্রি করছেন।’
কয়েক সপ্তাহ আগের তুলনায় চিংড়ি, রুই ও আইড় মাছের দাম কিছুটা বেশি মনে হয়েছে। এ ছাড়া অন্যান্য মাছের দামও কিছুটা বেড়েছে। বাজারে প্রতি কেজি গরুর মাংস ৭৫০-৭৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দু-এক জায়গায় অবশ্য ৮০০ টাকা কেজিতেও বিক্রি করতে দেখা গেছে। খাসির মাংসের কেজি ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা। মসলার দাম পাঁচণ্ডছয় মাস আগে যা বেড়েছে, এখনো তা-ই রয়েছে। নতুন করে শুধু দারুচিনি ও গোলমরিচের দাম কিছুটা বেড়েছে। ঈদ উপলক্ষে মসলার মধ্যে দারুচিনি ও গোলমরিচের দাম বেড়েছে। টাউন হল বাজারের মসলা ব্যবসায়ী পলাশ পাল জানান, প্রতি কেজি দারুচিনির দাম ৪০ টাকা ও গোলমরিচের দাম ৮০ টাকা বেড়েছে। বাজারে এখন এলাচি প্রকারভেদে ৪ হাজার ৬০০ থেকে ৫ হাজার টাকা, লবঙ্গ ১ হাজার ৩০০ থেকে ১ হাজার ৩৫০ টাকা, কালো গোলমরিচ ১ হাজার ১০০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা, সাদা গোলমরিচ ১ হাজার ৪০০ থেকে ১ হাজার ৪৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এ ছাড়া প্রকার ও মানভেদে প্রতি কেজি কিশমিশ ৫৬০-৭০০ টাকা, আলুবোখারা ৪৫০-৫০০ টাকা, কাঠবাদাম ১ হাজার থেকে ১ হাজার ১০০ টাকা, পেস্তাবাদাম ২ হাজার ৬০০ থেকে ২ হাজার ৭০০ টাকা, কাজুবাদাম ১ হাজার ৫০০ থেকে ১ হাজার ৬৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
কারওয়ান বাজারের মসলা ব্যবসায়ী সোহান রহমান বলেন, মসলার দাম পাঁচণ্ডছয় মাস আগে যা বেড়েছে, এখনো তা-ই রয়েছে। নতুন করে শুধু দারুচিনি ও গোলমরিচের দাম কিছুটা বেড়েছে। ঈদ সামনে রেখে মাছের বাজারে ক্রেতার ব্যাপক উপস্থিতি চোখে পড়ল। মাছের মধ্যে রুই-কাতলা ও পাঙাশের দাম কেজিতে ২০-৫০ টাকা বেড়েছে। বাজার ঘুরে দেখা গেল, এখন আকার ও প্রকারভেদে প্রতি কেজি তেলাপিয়া ও পাঙাশ ২০০-২৫০ টাকা, কই ২৫০-৩০০ টাকা, চিংড়ি ৭৫০ থেকে ১ হাজার ৪০০ টাকা, ইলিশ ১ হাজার ৬০০ থেকে ২ হাজার ৪০০ টাকা, রুই ৩৫০ থেকে ৫০০ টাকা, কাতলা ৩০০ থেকে ৬০০ টাকা, মৃগেল ২৮০ থেকে ৩৫০ টাকা, বোয়াল ৪৫০-১ হাজার ২০০ টাকা, পাবদা ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা ও রুপচাঁদা ৮০০-১ হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ঈদের আগে হঠাৎ মাছ-মুরগির দাম বেড়ে গেছে। চালের দাম বেড়েছে। এলাচিসহ কিছু মসলার দামও বেশ বেড়ে গেছে। আমাদের হিসাব করা টাকা দিয়ে মাস চলতে হয়।