ঢাকা মঙ্গলবার, ১৫ এপ্রিল ২০২৫, ২ বৈশাখ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

যুক্তরাষ্ট্র থেকে কী কী পণ্য আমদানি করে বাংলাদেশ

যুক্তরাষ্ট্র থেকে কী কী পণ্য আমদানি করে বাংলাদেশ

বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের আমদানি-রপ্তানির হিসাব করলে দেখা যায় যে দুই দেশের মাঝে বাণিজ্য ঘাটতি অনেক। বিশ্লেষকরা বলছেন, এই বাণিজ্য ঘাটতি কমিয়ে আনার জন্যই বাংলাদেশসহ বিশ্বের প্রায় ৬০টি দেশের পণ্যে উচ্চহারের শুল্ক আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র। পরে চীন বাদে যেসব দেশের ওপর পারস্পরিক শুল্ক আরোপ করা হয়েছিল সেটি ৯০ দিনের জন্য স্থগিত করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এদিকে বাণিজ্য ঘাটতি সামাল দিতে বাংলাদেশ এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের ১৯০টি পণ্যের উপর শুল্কহার শূন্য করেছে, আরও ১০০টি পণ্যকে এই তালিকায় যুক্ত করার পরিকল্পনাও রয়েছে। চলতি বছরের প্রথম দুই মাসে বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে যে পরিমাণ পণ্য রপ্তানি হয়েছে, সেই তুলনায় আমদানির পরিমাণ খুবই কম। ইউনাইটেড স্টেটস সেন্সাস ব্যুরো বলছে, জানুয়ারিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে বাংলাদেশ ২০৩ দশমিক চার মিলিয়ন মার্কিন ডলার পরিমাণ পণ্য আমদানি করেছে এবং ফেব্রুয়ারিতে এনেছে মাত্র ৮৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।

এই দুই মাসের হিসাবে, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের কাছে মোট ২৯০ দশমিক চার মিলিয়ন মার্কিন ডলার পরিমাণ পণ্য রপ্তানি করতে পেরেছে। সেক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে যে শুধুমাত্র জানুয়ারি মাসেই এই দুদেশের মাঝে বাণিজ্য ঘাটতির পরিমাণ প্রায় ৭০১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। ২০১২ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস ইন্সটিটিউট অব টেকনোলজির (এমআইটি) একটি গবেষণা প্রকল্প হিসাবে যাত্রা শুরু করা অনলাইন প্ল্যাটফর্ম অবজারভেটরি অব ইকোনমিক কমপ্লেক্সিটি (ওইসি) বিশ্বের বিভিন্ন দেশের আমদানি-রপ্তানি সংক্রান্ত তথ্য নিয়ে কাজ করে। তাদের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের জানুয়ারিতে বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রে সবচেয়ে বেশি পাঠিয়েছে তৈরি পোশাক। আর বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্র থেকে সবচেয়ে বেশি এনেছে সয়াবিন। যুক্তরাষ্ট্র থেকে আনা এই সয়াবিনের মূল্য প্রায় ১০৬ মিলিয়ন ডলার। এরপরই হলো- ৩৩ দশমিক এক মিলিয়ন ডলার মূল্যের স্ক্র্যাপ লোহা বা লোহার টুকরা এবং ২৫ মিলিয়ন ডলার মূল্যের চাল। ট্রেডিং ইকোনমিক্স এর তথ্য অনুযায়ী? গত বছর যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে ৬৫৮ দশমিক ২৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের লোহা ও স্টিল রপ্তানি করেছে। দেশটি থেকে বাংলাদেশ আরও অনেক পণ্য আমদানি করলেও ওই বছর লোহা ও স্টিল-ই বেশি এনেছে। এরপরের স্থানে আছে তৈলবীজ, তেলজাতীয় ফল, শস্য, বীজ ও ফল। ওই বছর যুক্তরাষ্ট্র থেকে সাড়ে তিনশো মিলিয়ন মার্কিন ডলারেরও বেশি মূল্যের এ সব পণ্য কিনেছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশি তৈরি পোশাকের সবচেয়ে বড় বাজার যুক্তরাষ্ট্র। আর এর প্রধান কাঁচামাল তুলা। যুক্তরাষ্ট্র থেকে তুলা আমদানিতে বাংলাদেশে শুল্কহার শূন্য। ওই বছর বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্র থেকে আড়াইশো মিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি তুলা কিনেছে।

অন্যান্য পণ্যের মাঝে রয়েছে- জৈব রাসায়নিক, তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস, পশুখাদ্য, খাদ্যের অবশিষ্টাংশ, যন্ত্রপাতি, পারমাণবিক চুল্লি, বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি, উড়োজাহাজের ইঞ্জিন, বিমান, জাহাজের কাঠামো, উড পাল্প, ফার্মাসিউটিক্যাল পণ্য, পারফিউম, প্রসাধনী, হুইস্কি, গাড়ি, বাদাম, ডিম, মধু, সাবান, মোম, পাখির চামড়া ও পালক, মানুষের চুল ইত্যাদি। এছাড়াও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে থেকে লবণ, সালফার, পাথর, সিমেন্ট, রেলওয়ের বিভিন্ন যন্ত্রপাতি, তামাক, বই, খেলনা, অ্যালুমিনিয়াম, সার, কফি, বাদ্যযন্ত্র, সিরামিকের তৈরি পণ্য, জিংক, কপারসহ আরও নানা ধরনের পণ্য আমদানি করে বাংলাদেশ।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত