ব্যাংক ঋণের সুদহার বাজারভিত্তিক হওয়ার পর থেকেই তা বেড়েই চলছে। বর্তমানে ১৫ শতাংশের ওপরে সুদ নিচ্ছে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো। এতে লোকসানের আশঙ্কায় ব্যাংক ঋণ নেয়া কমিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ফলে চলতি অর্থবছরের ফেব্রুয়ারিতে দেশের বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি কমতে কমতে ৬ শতাংশে নেমেছে, যা গত মাসে অর্থাৎ জানুয়ারিতে ছিল ৭ শতাংশের ঘরে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ হালনাগাদ প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের ফেব্রুয়ারির শেষে বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে মাত্র ৬ দশমিক ৮২ শতাংশ, যেখানে অর্থবছরের জন্য ঘোষিত মুদ্রানীতিতে ৯ দশমিক ৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। আর তার আগের মাসেও (জানুয়ারি) বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি ছিল ৭ দশমিক ১৫ শতাংশ।
তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ফেব্রুয়ারিতে বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবৃদ্ধির হার যেখানে নেমেছে, সেটি গত ২১ বছরের সর্বনিম্ন। সর্বশেষ ২০০৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে এ খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি ৬ দশমিক ৮২ শতাংশের নিচে নেমেছিল। তথ্য বলছে, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি দেশের বেসরকারি খাতে ব্যাংকের বিতরণকৃত ঋণের স্থিতি ছিল ১৬ লাখ ৮৪ হাজার ৩৮৩ কোটি টাকা। ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে এ স্থিতি ১৫ লাখ ৭৬ হাজার ৯১৪ কোটি টাকা ছিল। সে হিসাবে প্রবৃদ্ধি হয়েছে মাত্র ৬ দশমিক ৮২ শতাংশ। খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নতুন বিনিয়োগ তেমন নেই। সুদহার বৃদ্ধি, রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা ও বিদ্যমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির কারণে ব্যবসায়ীরা বিনিয়োগ করতে আগ্রহ হারাচ্ছেন।
এছাড়াও ব্যাংক খাত থেকে ভুয়া কোম্পানি তৈরি করে অর্থ লোপাটের প্রক্রিয়াও বন্ধ হয়েছে। এসব কারণে বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি এত কম দেখাচ্ছে। অন্যদিকে কয়েক বছর ধরেই নীতিসুদহার বেড়েই চলছে।