ঢাকা মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫, ১৬ বৈশাখ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

গ্যাসের দাম পুনর্নির্ধারণের দাবি ব্যবসায়ীদের

গ্যাসের দাম পুনর্নির্ধারণের দাবি ব্যবসায়ীদের

এবার শিল্প খাতে গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছেন বিভিন্ন খাতের ব্যবসায়ী নেতা ও শিল্প উদ্যোক্তারা। তারা বলেন, গ্যাসের এমন মূল্যবৃদ্ধি অযৌক্তিক ও অন্যায্য। গ্যাসের দাম বাড়ায় শিল্প ও ব্যবসা-বাণিজ্যের মারাত্মক ক্ষতি হবে। এ জন্য অবিলম্বে গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির সিদ্ধান্ত স্থগিত রেখে মূল্যহার পুনর্নির্ধারণের দাবি জানিয়েছেন তারা। প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে লেখা এক চিঠিতে এসব দাবি জানিয়েছেন দেশের শীর্ষস্থানীয় ১১টি ব্যবসায়িক সংগঠনের নেতা ও দুটি শিল্পগোষ্ঠীর উদ্যোক্তা। চিঠিতে তারা বলেন, গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি কার্যকর হলে দেশের শিল্প খাতে তথা অর্থনীতিতে বিরূপ প্রভাব পড়বে। এই পরিস্থিতিতে দেশের শিল্পমালিকেরা শিল্প সম্প্রসারণে সাহসী হবেন না, বিদেশি বিনিযোগকারীরা বিনিয়োগে আগ্রহী হবেন না। দেশের শিল্পক্ষেত্রে কর্মসংস্থান কমে যাওয়ার পরিস্থিতি তৈরি হবে। ব্যবসায়ী সংগঠনগুলোর নেতা ও উদ্যোক্তারা গত রোববার প্রধান উপদেষ্টার কাছে এ চিঠি জমা দেন। চিঠিতে স্বাক্ষর করেন বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজের (বিসিআই) সভাপতি আনোয়ার উল আলম চৌধুরী, শীর্ষ ব্যবসায়ী সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি মীর নাসির হোসেন, তৈরি পোশাকশিল্পের মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর প্রশাসক মো. আনোয়ার হোসেন, বস্ত্রকলমালিকদের সংগঠন বিটিএমএর সভাপতি শওকত আজিজ রাসেল, মেট্রো চেম্বারের সভাপতি কামরান টি রহমান, ঢাকা চেম্বারের সভাপতি তাসকিন আহমেদ, নিট পোশাকশিল্পের মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএর সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম, চামড়া পণ্য ও জুতা প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (এলএফএমইবি) সভাপতি সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর, সিরামিকশিল্পের মালিকদের সংগঠন বিসিএমইএর সভাপতি মইনুল ইসলাম, প্লাস্টিক শিল্পের মালিকদের সমিতি বিপিজিএমইএর সভাপতি শামীম আহমেদ, তৈরি পোশাকশিল্পের প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম ও মোড়কপণ্য সরবরাহকারী কারখানামালিকদের সংগঠন বিজিএপিএমইএর সভাপতি মো. শাহরিয়ার ও মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল ও উত্তরা মোটরসের চেয়ারম্যান মতিউর রহমান।

প্রধান উপদেষ্টার কাছে লেখা চিঠিতে ব্যবসায়ীরা বলেন, বিদ্যুৎ-জ্বালানি খাতের নানা অনিয়মের কারণে সৃষ্ট দায় মেটানোর জন্য বিগত সরকার ২০২৩ সালের জানুয়ারি মাসে কোনো পক্ষের সঙ্গে আলোচনা না করে প্রতি ইউনিট গ্যাসের দাম একলাফে ১২ টাকা থেকে ৩০ টাকা করে। এটি দেশের উৎপাদন শিল্পের জন্য মারাত্মক আঘাত ছিল। অন্যদিকে বাড়তি দাম দিয়েও শিল্পকারখানায় গ্যাসের চাপ ঠিকভাবে পায়নি। এতে স্বাভাবিক উৎপাদনের চেয়ে ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ কম উৎপাদন করতে বাধ্য হয়েছে প্রতিষ্ঠানগুলো। চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, গত বছরের ৫ আগস্ট স্বৈরাচার সরকারের পতনের পর শিল্পকারখানা নতুন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ে। সেই পরিস্থিতি মোটামুটি কাটিয়ে ওঠার মাঝেই পুনরায় গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির আলোচনা ওঠে। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৬ ফেব্রুয়ারি ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতারা গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির প্রস্তাবের বিপক্ষে জোরালো ও তথ্যভিত্তিক বক্তব্য দেন। তারা প্রতি ইউনিট গ্যাসের দাম ২৪ টাকা ৩৯ পয়সা নির্ধারণের দাবি জানান। ব্যবসায়ীরা বলেন, দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা, শিল্পপ্রতিষ্ঠান টিকে থাকা, কর্মসংস্থান ঠিক রাখা প্রভৃতি বিষয় বিবেচনা না নিয়ে শুধু সংকীর্ণ দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) ১৩ এপ্রিল গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে। এটি একেবারেই অযৌক্তিক ও বর্তমান প্রেক্ষাপটে অন্যায্য।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত