সুকুক বন্ড নিলামে ২৩ হাজার কোটি টাকার বিড

প্রকাশ : ৩১ ডিসেম্বর ২০২১, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  অর্থনৈতিক প্রতিবেদক

শরিয়াহভিত্তিক ইসলামি বন্ড ‘সুকুক’ ছেড়ে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবকাঠামো উন্নয়নের জন্য টাকা তুলবে সরকার। এ জন্য প্রথম দফায় ৫ হাজার কোটি টাকা তোলা হবে। সরকারের পক্ষে বাংলাদেশ ব্যাংক বুধবার নিলামে এ বন্ড বিক্রি করে। বাংলাদেশ ব্যাংকের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ৫ হাজার কোটি টাকা অভিহিত মূল্যের ইজারা সুকুক ইস্যুর বিপরীতে বিনিয়োগকারীরা মোট ২৩ হাজার ৩০৪ কোটি ২৬ লাখ টাকার বিড জমা দেন। এই সুকুক বন্ডের প্রতিটির অভিহিত মূল্য ১০ হাজার টাকা। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের নিজের জন্য বা যে কোনো গ্রাহকের জন্য ১০ হাজার টাকার গুণিতক যেকোনো পরিমাণে সুকুক কিনতে পারে। সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টার মধ্যে এ নিলাম অনুষ্ঠিত হয়। অকশনে ব্যক্তি পর্যায়ের বিনিয়োগকারী ছাড়া শরিয়াহ্ ভিত্তিক ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বিমা কোম্পানি; কনভেনশনাল ব্যাংকগুলোর ইসলামিক ব্রাঞ্চ ও উইন্ডোজ এবং কনভেনশনাল ব্যাংক ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠান শ্র্রেণিতে বরাদ্দকৃত সুকুকের পরিমাণের চেয়ে বেশি বিড জমা হয়েছে। বিনিয়োগকারীদের তাদের জমাকৃত বিডের বিপরীতে আনুপাতিক হারে সুকুক বণ্টন করা হয়েছে।

যে প্রকল্পের জন্য টাকা তোলা হবে, তার নাম ‘সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চাহিদামাফিক উন্নয়ন প্রকল্প’ বাস্তবায়ন করছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। জানা গেছে, এই সুকুকের বিপরীতে বিনিয়োগকারীদের বার্ষিক ৪ দশমিক ৬৫ শতাংশ হারে অর্থ পরিশোধ করা হবে। এই বন্ডের মেয়াদ শেষ হবে ২০২৬ সালের ৩০ ডিসেম্বর। এটি হবে ইজারা সুকুক, অর্থাৎ বিনিয়োগের বিপরীতে ভাড়া হিসেবে বিনিয়োগকারীদের অর্থ পরিশোধ করবে সরকার; যা দেওয়া হবে ছয় মাস পর পর।

সুকুকের বিবরণীতে বলা হয়েছে, ২০১৬ সালের ১ জুলাই থেকে ‘সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চাহিদামাফিক উন্নয়ন প্রকল্প’ বাস্তবায়ন করছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। এ প্রকল্পের ব্যয় ৯ হাজার ১২৩ কোটি টাকা। গত নভেম্বর পর্যন্ত এই প্রকল্পে ৪ হাজার ৫১০ কোটি টাকা খরচ করেছে সরকার। আগামী এক বছরে আরও ৫০০ কোটি টাকা খরচ হবে। সরকারের খরচ করা এই অর্থই এখন সুকুকে রূপান্তর করে বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে সংগ্রহ করা হবে। এ প্রকল্পের অধীনে দেশে ৪০ হাজার অতিরিক্ত প্রাথমিক বিদ্যালয় নির্মাণ, ৮ হাজার প্রাথমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পানি ও স্যানিটেশন সুবিধা প্রদান, ৩৬ হাজার ৫০০ শ্রেণিকক্ষে বেঞ্চ ও শিক্ষকদের ৩ হাজার ৫০০ শ্রেণিকক্ষে চেয়ার, টেবিল, আলমারি ও দেওয়াল কেবিনেট সরবরাহ করা হবে। এর আগে গত বছরের ২৮ ডিসেম্বর বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের লক্ষ্যে গণস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের বাস্তবায়নাধীন একটি প্রকল্পের জন্য সুকুকের মাধ্যমে প্রথম দফায় ৪ হাজার কোটি টাকা তুলেছিল সরকার। ওই প্রকল্পের প্রাক্কলিত ব্যয় ছিল ৮ হাজার ৮৫১ কোটি টাকা। দ্বিতীয় দফার নিলামে ওই প্রকল্পের জন্য চলতি বছরের ২৮ জুন আরও ৪ হাজার কোটি টাকা তোলে সরকার। গত বছরের ৮ অক্টোবর সুকুক ইস্যু ও ব্যবস্থাপনা সম্পর্কিত নীতিমালা অনুমোদন করে সরকার। ওই নীতিমালার চতুর্থ অনুচ্ছেদে সরকার বাংলাদেশ ব্যাংককে এই বন্ডের ‘স্পেশাল পারপাস ভেহিকেল’ বা এসপিভি এবং ট্রাস্টি হিসেবে দায়িত্ব দেয়।