চরিত্র গঠনে সিরাতচর্চা
মুহাম্মদ নুরুল ইসলাম
প্রকাশ : ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
অধুনা পৃথিবীর সর্বত্রই অশান্তির ধকল। অরাজকতা, নৃশংসতা ও সাম্যহীনতার ভয়াল থাবায় আক্রান্ত পৃথিবীর নীলাকাশ। নাফরমানি ও আল্লাহদ্রোহিতার দিকে দৃঢ়ভাবে ছুটছে মানুষ। মানবতা হারিয়েছে। হারিয়েছে পারস্পরিক হৃদ্যতা, ভালোবাসা ও সহমর্মিতা। মুসলমান যুবক-যুবতীদের আখলাকি সংকট চরমে পৌঁছেছে। চারিত্রিক অধঃপতনতায় মনুষ্যত্ব, বড়কে শ্রদ্ধাবোধ, ছোটদের প্রতি স্নেহার্দ্র আচরণ শূন্যের কোটায়। চলমান সময়ের শিশু-কিশোর, যুবক-যুবতী, তরুণ-তরুণী আবালবৃদ্ধবনিতা সবাই নেশায় মত্ত। হাতে হাতে স্মার্টফোন। সারাক্ষণ নাচণ্ডগান, অশ্লীল সিনেমা চোখ খুইয়ে দিচ্ছে। অজান্তেই হারিয়ে যাচ্ছে চারিত্রিক গুণাবলি। হয়ে উঠছে মানুষরূপী শয়তান। যে যুবক খুব পরিপাটি হয়ে মসজিদের কাতারে নামাজরত থাকার কথা, আজকে তাকে রাত ১২টার পর রাস্তার মোড়ে, ফুটপাতে মদের বোতল হাতে পড়ে থাকতে দেখা যায়। চারিত্রিক নিষ্কলুষতা ও আদর্শিক চেতনায় আজকের মুসলমান যুবক চরম অধঃপতিত।
জীবন গঠনে নবীজির সিরাতের বিকল্প
এমন দুঃসময়ে আমাদের যা করা উচিত, তা হলো- পৃথিবীতে চারিত্রিক উৎকর্ষতায় একমাত্র অনন্য ব্যক্তি বিশ্বনবী, আরবের দুলাল মুহাম্মদ (সা.)। তিনি বলেছেন, ‘আমি প্রেরিত হয়েছি মাকারিমে আখলাককে পরিপূর্ণতা দেওয়ার জন্য।’ চারিত্রিক উৎকর্ষতা সাধন, সুন্দর ও আলোকিত মানুষ গঠনে তাঁর সিরাতচর্চা ও বাস্তবায়নের বিকল্প নেই। সিরাত মানে সিরাতুন্নবী (সা.), অর্থাৎ নবীজি (সা.)-এর চিন্তা-চেতনা, আদর্শ, তার সমাজব্যবস্থা, আমল-আখলাক, উপদেশমালা ইত্যাদি। মোটকথা, নবীজি (সা.)-এর পূর্ণাঙ্গ জীবনব্যবস্থাই হলো সিরাত।
সিরাত মুসলমানদের জীবনাচারের অবিচ্ছেদ্য অংশ
সিরাতুন্নবী (সা.) মুসলমানদের জীবনাচারের অবিচ্ছেদ্য অংশ।
যদি কোনো মানুষ তার জীবনের ধাপে ধাপে সিরাতের সুরভিত পাঠের পূর্ণাঙ্গ অনুকরণ-অনুসরণ করতে পারে, তবে সে জীবন ফুলের মতো সুরভিত হয়ে উঠবে। কিন্তু দুর্ভাগ্য মুসলমানদের, তারা তাদের নবীর সিরাত-আখলাকিয়্যাতকে ছেড়ে ইহুদি-খ্রিষ্টানদের কৃষ্টিকালচার সাদরে বরণ করে নিয়েছে। এটাকেই আধুনিকতা ও সভ্যতা ভেবে নিজের আদর্শ বলে স্বীকারোক্তি দিচ্ছে। স্বকীয় আদর্শ ভুলে যাওয়া মুসলমানদের ব্যাপক সিরাতচর্চা ও বাস্তবায়নে আত্মমনোযোগী হওয়া চাই।