প্রশ্ন : কাদের ওপর ঈদের নামাজ ওয়াজিব?
উত্তর : যাদের ওপর জুমার নামাজ পড়া ওয়াজিব, তাদের ওপর ঈদের নামাজ পড়াও ওয়াজিব। অর্থাৎ সাবালক, সুস্থ মুসলিম পুরুষ যারা ঈদের জামাতে উপস্থিত হয়ে নামাজ পড়ার সক্ষমতা রাখে, তাদের ওপর ঈদের নামাজ পড়া ওয়াজিব। (আল মুহিতুল বোরহানি : ২/৪৭৬)।
প্রশ্ন : নারীরা ঈদের জামাতে উপস্থিত হতে পারবে?
উত্তর : না, নারীরা ঈদের জামাতে উপস্থিত হবে না। তাদের ওপর ঈদের নামাজ ওয়াজিব নয়। (বাদায়েউস সানায়ে : ১/৬১৭, মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা : ৫৮৪৬)।
প্রশ্ন : ঈদের নামাজ কোথায় পড়বে?
উত্তর : ঈদের নামাজ ঈদগাহে বা উন্মুক্ত স্থানে পড়া সুন্নত। ঈদগাহে ঈদের নামাজ পড়ার ব্যবস্থা থাকা সত্ত্বেও মসজিদে ঈদের নামাজ পড়া উচিত নয়। তবে বৃষ্টি বা অন্য কোনো কারণে ঈদের জামাত মসজিদে করলে সুন্নতের খেলাফ হবে না। (সুনানে আবি দাউদ : ১১৫৩)।
প্রশ্ন : মাঠ রেখে মসজিদের ছাদে ঈদের জামাত পড়া যাবে?
উত্তর : সুযোগ থাকার পরও মসজিদের ছাদে ঈদের জামাত করা উচিত নয়। কারণ, ঈদের জামাত রাসুল (সা.) সর্বদাই মাঠে গিয়ে আদায় করেছেন। বৃষ্টির কারণে একবার শুধু মসজিদে আদায় করেছেন। যা প্রমাণ করে, ঈদের জামাতের সুন্নাহসম্মত পদ্ধতি হলো মাঠে আদায় করা। বাকি যদি কেউ মসজিদে আদায় করে, তাহলেও তার নামাজ হয়ে যাবে। তবে ইচ্ছাকৃত সুন্নতকে ছেড়ে দেয়া উচিত হবে না। তাই সামর্থ্য থাকা অবস্থায় ঈদের জন্য মাঠ রাখাই শরিয়তের নির্দেশ। (ফতোয়ায়ে শামি : ৩/৪৯)।
প্রশ্ন : ঈদের জামাতের পর খুতবা শোনা কি জরুরি?
উত্তর : হ্যাঁ, ঈদের নামাজের পর দুটি খুতবা শোনা মুসল্লিদের জন্য ওয়াজিব। মনোযোগের সঙ্গে খুতবা শুনতে হবে। অন্যথায় গোনাহগার হবে। (কিতাবুল আসল : ১/৩১৮, বাদায়েউস সানায়ে : ১/৬১৮)।
প্রশ্ন : ঈদের খুতবায় ইমামের তাকবির বলার সময় মুসল্লিরাও তাকবির বলবে নাকি চুপ থাকবে?
উত্তর : ঈদের খুতবা চলাকালীন উপস্থিত লোকদের জন্য সম্পূর্ণ চুপ থেকে খুতবা শোনা ওয়াজিব। তাই খুতবার সময় মুসল্লিরা তাকবির বলবে না; বরং চুপ থেকে খুতবা শুনবে। আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) সূত্রে বর্ণিত; তিনি বলেন, চারটি স্থানে চুপ থাকা ওয়াজিব- জুমা, ঈদুল ফিতর, ঈদুল আজহা এবং ইসতিসকার খুতবার সময়। (মুসান্নাফে আবদির রাজ্জাক : ৫৬৪২)।
প্রশ্ন : খুতবা চলাকালীন সশব্দে তাকবির ও দরুদ শরিফ পড়া যাবে?
উত্তর : খুতবার মধ্যে ইমাম তাকবিরে তাশরিক পাঠ করলে বা রাসুল (সা.)-এর নাম উচ্চারণ করলে মুখে উচ্চারণ করে তাকবির ও দরুদ শরিফ পড়া যাবে না। তবে মনে মনে পড়তে পারবে। উল্লেখ্য, জুমার খুতবার মতো ঈদের খুতবাও চুপ থেকে মনোযোগসহ শোনা ওয়াজিব। (মুসান্নাফে আবদির রাজ্জাক : ৫৬৪২, কিতাবুল আসল : ১/৩২৮, বাদায়েউস সানায়ে : ১/৫৯৪, ফাতহুল কাদির : ২/৩৮, মাজমাউল আনহুর : ১/২৫৩, রদ্দুল মুহতার ২/১৫৯)।
প্রশ্ন : কেউ ঈদের জামাত না পেলে কী করবে?
উত্তর : ঈদের জামাত না পেলে নিকটস্থ অন্য কোথাও জামাতে শরিক হওয়ার চেষ্টা করবে। জামাত ছুটে যাওয়ার পর আর কোথাও জামাত পাওয়ার কোনো সম্ভাবনা না থাকলে তওবা-ইস্তেগফার করবে। (আল মুহিতুল বোরহানি : ২/৪৯৮)।
প্রশ্ন : ঈদের নামাজের দ্বিতীয় রাকাতের তাশাহুদে কেউ এসে নামাজে শরিক হলে সে কি জামাত পেয়েছে বলে ধর্তব্য হবে?
উত্তর : হ্যাঁ, সে জামাত পেয়েছে বলে ধর্তব্য হবে। তবে ইমাম সালাম ফেরানোর পর দাঁড়িয়ে স্বাভাবিক নিয়মে সে দু’রাকাত নামাজ পড়ে নেবে। প্রথম রাকাতে কেরাতের আগে আর দ্বিতীয় রাকাতে কেরাতের পর অতিরিক্ত তাকবিরগুলো বলে নামাজ আদায় করবে। (ফতোয়ায়ে খানিয়া : ১/১৮৫)।
প্রশ্ন : কেউ এক দেশে ঈদের নামাজ পড়ে অন্য দেশে গিয়ে ঈদের জামাত হতে দেখলে কী করবে?
উত্তর : একবার ঈদের নামাজ পড়ার পর দ্বিতীয়বার ঈদের জামাতে শরিক হতে হবে না। এটা তার জন্য আবশ্যক নয়। (ফতোয়ায়ে সিরাজিয়া : ১৮)।