ঢাকা ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

হিজরতে তাওহিদের বার্তা

দীদার মাহদী
হিজরতে তাওহিদের বার্তা

নবী (সা.)-এর জীবনের প্রতিটি অধ্যায় মানব জাতির জন্য পথনির্দেশক। রাসুল (সা.)-এর প্রতিটি কাজে কোনো না কোনো শিক্ষা থাকেই উম্মতের জন্য। মক্কার জীবনে কাফেররা তার ওপর বহু নির্যাতন করে। তিনি নীরবে তা সহ্য করে যান। এক পর্যায়ে আল্লাহতায়ালা তাকে মদিনায় হিজরতের আদেশ দেন। আল্লাহর আদেশ পেয়ে তিনি আবু বকর (রা.)-কে সঙ্গে নিয়ে মদিনায় হিজরত করেন। হিজরতের শুরু-শেষ এমন কিছু ঘটনা রয়েছে, যা আল্লাহর কুদরতের নিদর্শন ও তাওহিদের আলোকবর্তিকা হিসেবে প্রকাশিত হয়েছে।

নবীজিকে হত্যার পরিকল্পনা

নীতি-আদর্শে যখন মানুষ কুলিয়ে উঠতে পারে না, তখন গোপন ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়। বিভিন্ন কলা-কৌশলে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার চেষ্টা করে। মক্কার কাফেররা এর ব্যতিক্রম ছিল না। রাসুল (সা.) মক্কাবাসীকে মূর্তির পূজা ছেড়ে এক আল্লাহর ইবাদত করার জন্য আহ্বান করতেন। পূজারিরা তা মেনে নিতে পারেনি। তাই এক পর্যায়ে তারা মহানবীকে হত্যার পরিকল্পনা গ্রহণ করে। আর এ জঘন্যতম কাজটা সম্পন্ন করতে প্রত্যেক গোত্রের শক্তিশালী যুবকদের নির্বাচন করল তারা, যাতে হত্যা-পরবর্তীকালে নবীর গোত্রের লোকেরা সব গোত্রের বিপক্ষে হত্যার প্রতিশোধ নিতে না পারে। সিদ্ধান্ত নিয়ে তারা ঘোষণা করল, মুহাম্মদ (সা.)-কে যে জীবিত অথবা মৃত ‘নদওয়া’ গৃহে হাজির করতে পারবে, তাকে ১০০ উট পুরস্কার দেওয়া হবে। মক্কার সব গোত্রের শক্তিশালী যুবকরা একত্রিত হয়ে শপথ নেয়, সেদিন রাতেই মুহাম্মদ (সা.)-এর বাড়ি ঘেরাও করা হবে এবং তাকে চিরতরে শেষ করে দেওয়া হবে।

তাদের সব পরিকল্পনা আল্লাহ নস্যাৎ করে দিলেন। রাতেই আল্লাহ তায়ালা ওহির মাধ্যমে এই চক্রান্তের কথা তাঁর রাসুলকে জানিয়ে দিলেন। আল্লাহ বলেন, ‘হে নবী, আপনি ওই সময়টি স্মরণ করুন, যখন কাফেররা চক্রান্ত আঁটছিল যে, তারা আপনাকে বন্দি করবে অথবা হত্যা করবে কিংবা করবে দেশান্তর। তারা তাদের ষড়যন্ত্র করছিল আর আল্লাহ আপন কৌশল করছিলেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ সর্বোত্তম কৌশলী।’ (সুরা আনফাল : ৩০)।

শত্রুবেষ্টিত গৃহত্যাগ

শত্রুরা রাসুল (সা.)-এর গৃহ বেষ্টন করে আছে। অপেক্ষায় আছে রাসুল (সা.) ঘর থেকে বের হলেই তারা তাঁকে হত্যা করবে। এদিকে আল্লাহতায়ালা ওহির মাধ্যমে সবকিছু জানিয়ে দিলেন নবী (সা.)-কে। আল্লাহ নবীজিকে নির্দেশ দিলেন, রাতে স্বীয় গৃহে শয়ন না করে তাঁর স্থানে হজরত আলী (রা.)-কে রাখতে। প্রিয়নবী (সা.) হজরত আলী (রা.)-কে বললেন, ‘তুমি আমার এই সবুজ হাদরামি চাদর গায়ে দিয়ে আমার বিছানায় শুয়ে থাকো। ওদের হাতে তোমার কোনো ক্ষতি হবে না।’ প্রিয়নবী (সা.) এই চাদর গায়ে জড়িয়ে রাতে ঘুমাতেন। (ইবনে হিশাম, প্রথম খণ্ড, পৃ.৪৮২, ৪৮৩)। নবীজি হিজরতের জন্য আল্লাহর আদেশের অপেক্ষায় ছিলেন। যে রাতে শত্রুরা তাঁকে হত্যার ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছিল, সে রাতেই হিজরতের নির্দেশ পান। জিবরিল (আ.) হিজরতের নির্দেশ সংবলিত আসমানি বার্তা নিয়ে এলেন। আয়াত নাজিল হলো, ‘আর হে নবী! আপনি বলুন, হে আমার রব! আমাকে প্রবেশ করান কল্যাণের সঙ্গে এবং আমাকে বের করান কল্যাণের সঙ্গে। আর আমাকে আপনার পক্ষ থেকে দান করুন সাহায্যকারী শক্তি।’ (সুরা বনি ইসরাইল : ৮০)। এর পর রাসুলুল্লাহ (সা.) এক মুঠো ধুলো নিয়ে বাইরে এলেন এবং কাফেরদের দিকে নিক্ষেপ করলেন। ধুলো গিয়ে পড়ল সবার চোখে-মুখে। এতেই আল্লাহতায়ালা তাদের অন্ধ করে দিলেন। ফলে তারা আল্লাহর রাসুলকে দেখতে পেল না। সে সময় নবীজি (সা.) এই আয়াত তেলাওয়াত করছিলেন যে, ‘আমি ওদের সামনে প্রাচীর ও পশ্চাতে প্রাচীর স্থাপন করছি এবং ওদেরকে আবৃত করছি। ফলে ওরা দেখতে পায় না।’ (সুরা ইয়াসিন : ৯)

এর পর তাদের ওই অন্ধ অবস্থায় তিনি ধীর পায়ে এগিয়ে গেলেন। ওতপেতে থাকাদের কেউ কিছুই দেখতে পেল না। নবীজি তখন হজরত আবু বকরের বাড়িতে গিয়ে উপস্থিত হলেন। সেই ঘরের একটি জানালা পথে বেরিয়ে উভয়ে মদিনার উদ্দেশে যাত্রা করলেন। কয়েক মাইল দূরে অবস্থিত সওর পাহাড়ের একটি গুহায় তাঁরা যাত্রাবিরতি করলেন। (ইবনে হিশাম, প্রথম খণ্ড, পৃ.৪৮৩; জাদুল মাআদ : দ্বিতীয় খণ্ড, পৃ.৫২)। রাসুল (সা.) তাদের সামনে দিয়েই চলে গেলেন; অথচ তারা তাঁকে দেখতে পেল না। এটা ছিল আল্লাহর কুদরতের প্রকাশ। তাওহিদের নিদর্শন।

আসমা (রা.)-এর সাহায্য

বিশ্বনবী যে তাঁর ঘরে নেই কাফেররা তা জানতে পারল সূর্যোদয়ের পরে। তখন অনেক দেরি হয়ে গেছে। কিন্তু কূটবুদ্ধির কুমির আবু জাহেল আবু বকর (রা.)-এর ঘরের দিকে ছুটল। তখনো সে জানত না আবু বকর (রা.) ও আল্লাহর রাসুল (সা.) একসঙ্গে হিজরত করেছেন। তবে এতটুকু সে বুঝেছে নবীজির কথা আবু বকর জেনে থাকবে। বাড়ি পৌঁছেই আবু জাহেল প্রচণ্ডভাবে দরজায় ধাক্কা দিতে থাকল। আসমা (রা.) দরজা খুললেন। সে জানতে চাইল আবু বকর (রা.) কোথায়? আসমা (রা.) খুব শান্তভাবে উত্তর দিলেন- ‘আমি কী করে জানব?’ আবু জাহেল এতে প্রচণ্ড রেগে গিয়ে আসমা বিনতে আবু বকরকে এত জোরে চড় মারল যে, তার কানের দুল ছিটকে পড়ে গেল।

মক্কায় তখন থমথমে। সেই সময় বিশ্বনবীর হিজরতের খবর লুকোনোই না বরং তিন দিন পর্যন্ত আসমা (রা.) এমনভাবে তাদের কাছে খাবার পৌঁছে দিতেন যেন কেউ টের না পায়। পুরো বিশ্বের মুসলিমদের জন্য তিনি আল্লাহর ওপর নির্ভরতার, সাহসিকতার এক মূর্ত প্রতীক। একজন নারী দ্বীন ধর্মের জন্য, আল্লাহর নবীর মহব্বতে কতটা ত্যাগ ও বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দিয়েছেন তা অভাবনীয়।

সে মুহূর্তটা ছিল খুবই ভয়ংকর। আসমা (রা.) এই সময় ভড়কে গেলে কিংবা ভেঙে পড়লে বিশ্বনীর হিজরত বাধার মুখে পড়ে যেতে পারত। এই বিপন্ন মুহূর্তে ঠিক বাবার মতোই শক্ত ভূমিকা পালন করলেন তিনি। আর আল্লাহর প্রতি দৃঢ় বিশ্বাসের অধিকারী আসমা বিনতে আবু বকর মক্কার সব থেকে প্রতাপশালী নেতার মুখোমুখি হয়েছিলেন দৃঢ়তার সঙ্গে।

নবীপত্নী আয়েশা (রা.) বলেন, মহানবী (সা.) মদিনায় হিজরতের উদ্দেশে রওয়ানা করার সময় আমরা তাড়াতাড়ি করে কিছু খাবার পাকিয়ে একটি থলেতে করে রেখে দিলাম। কিন্তু থলেটি বাঁধার জন্য রশি-দড়ি জাতীয় কোনো কিছু পাওয়া যাচ্ছিল না। তাই বড় বোন আসমা (রা.) কোমরবন্ধ খুলে দুই টুকরো করে এক টুকরা দিয়ে থলেটির মুখ বাঁধলেন। এ কাজটি তাঁর এত সম্মান বয়ে এনেছে যে, ইতিহাসে তাকে জাতুন-নিতাকাইন বলে স্মরণ করা হয়। (বোখারি : ৩৯০৫)।

সাওর গুহায় আত্মগোপন

মক্কা থেকে উল্টো পথ ধরলেন নবীজি (সা.)। যাতে শত্রুরা আঁচ করতে না পারে। প্রায় পাঁচ মাইল পথ দক্ষিণে ইয়েমেনের দিকে হেঁটে সাওর নামক পর্বতের গুহায় এসে যাত্রাবিরতি করেন। পাহাড়টি ছিল খুব উঁচু, পর্বত শীর্ষে আরোহণের পথ ছিল আঁকাবাঁকা ও পাঁক জড়ানো। আরোহণের ব্যাপারটিও ছিল অত্যন্ত কষ্ট ও আয়াশ-সাধ্য। নবীজি উঠতে গিয়ে আঘাতে রক্তাক্ত হয়েছিলেন। পদচিহ্ন মুছে দিতে আঙুলে ভর দিয়ে হেঁটে আসায় যাত্রা ছিল আরও কষ্টসাধ্য।

গুহায় আবু বকর (রা.) আগে প্রবেশ করলেন। পরিচ্ছন্ন করে গুছিয়ে নিলেন। কাপড় ছিঁড়ে গর্তগুলো আটকে নিলেন। কাপড়ের টুকরোর ঘাটতির কারণে দুটো ছিদ্রমুখ বন্ধ করা সম্ভব হলো না। সে দুটো গর্তমুখ নিজের পা দিয়ে বন্ধ করে রাখলেন।

আবদুল্লাহ ও আমির ইবনে ফুহাইরা

আবু বকর (রা.) এর পুত্র আবদুল্লাহও তাদের সঙ্গে রাত্রীযাপন করতেন। তবে সুবহে সাদিকের আগেই মক্কায় এসে সবার সঙ্গে মিশে যেতেন। মুশরিকরা নবীজি (সা.) এর বিরুদ্ধে কী ষড়যন্ত্র করত সে তথ্য অত্যন্ত সঙ্গোপনে তিনি সরবরাহ করতেন। অন্যদিকে আবু বকর (রা.) এর গোলাম আমির ইবন ফুহাইরা পাহাড়ের পাদদেশে ছাগল চরাত এবং যখন রাতের একাংশ অতিবাহিত হয়ে যেত তখন সে ছাগল নিয়ে গারে সওরের কাছে যেত এবং নবী (সা.) এবং তাঁর সাহাবিকে (রা.) দুগ্ধপান করাত। আবার প্রভাত হওয়ার প্রাক্কালে সে ছাগলের পাল নিয়ে দূরে চলে যেত। পরপর তিন রাতেই সে এরূপ করল। অধিকন্তু আবদুল্লাহ ইবন আবু বকরের গমনাগমন পথে তাঁর পদচিহ্নগুলো যাতে মিশে যায় তার জন্য আমির বিন ফুহাইরা সেই পথে ছাগল খেদিয়ে নিয়ে যেত। ভালো কাজে আল্লাহর পক্ষ থেকে সাহায্য আসে। সার্বিক বিবেচনায় কাজটি নির্ভুল হয়। এটি আল্লাহর কুদরতের একটি নিদর্শন।

গুহামুখে এসেও ফিরে গেল

মক্কার কাফেররা থেমে নেই। হন্যে হয়ে খুঁজছে নবীজিকে। একশত উট প্রাপ্যের নেশা তাদের আচ্ছন্ন করে রেখেছে। তারা এমন তুখোড় মেধা ও পদচিহ্ন বিশারদ ছিল যে, খুঁজতে খুঁজতে সাওর পর্বতের মুখে এসে উপস্থিত হলো। নবীজির জীবন শঙ্কায় আবু বকর (রা.) আঁতকে উঠলেন। এই বুঝি নিচে তাকাল। আর দেখে ফেলল! কী হবে প্রাণপ্রিয় নবীর? শত প্রশ্ন মনে। এ সময় রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছিলেন ‘চিন্তা করবেন না। অবশ্যই আল্লাহতায়ালা আমাদের সঙ্গে আছেন।’ বিষয়টির বর্ণনা আল্লাহ দিয়েছেন এভাবে, ‘যদি তোমরা তাকে (রাসুলকে) সাহায্য না কর, তবে মনে রেখো আল্লাহ তাকে সাহায্য করেছিলেন যখন কাফেররা তাঁকে বের করেছিল, যখন তিনি ছিলেন দু’জনের দ্বিতীয়জন। যখন তারা গুহার মধ্যে ছিল। যখন সে তার সাথিকে বলেছিল, চিন্তিত হয়ো না, আল্লাহ আমাদের সঙ্গে আছেন। অতঃপর আল্লাহ তার প্রতি স্বীয় প্রশান্তি নাজিল করলেন এবং তার সাহায্যে এমন বাহিনী পাঠালেন, যা তোমরা দেখনি। আর আল্লাহতায়ালা কাফেরদের শিরকি কালেমা নিচু করে দিলেন। বস্তুত আল্লাহর তাওহিদের কালিমা সদা উন্নত আছেই। আল্লাহ হলেন পরাক্রমশালী ও প্রজ্ঞাময়।’ (সুরা তাওবা : ৪০)।

রক্তপিপাসু শত্রুকে সামনে রেখে ওই সময়ের নাজুক অবস্থায় ‘চিন্তিত হয়ো না, আল্লাহ আমাদের সঙ্গে আছেন’- এই ছোট্ট কথাটি মুখ দিয়ে বের হওয়া শুধু তখনই সম্ভব, যখন একজন মানুষ সম্পূর্ণরূপে নিজেকে আল্লাহর ওপরে সোপর্দ করে দেন। বিশ্বনবী জানতেন আল্লাহ অবশ্যই সাহায্য করবেন। শক্তিতে ওদের সঙ্গে কুলিয়ে ওঠা সম্ভব নয়। স্বয়ং আল্লাহর নুসরত ছাড়া। আর আল্লাহই সাহায্য করেছেন। মোমিন বান্দার বিপদে আল্লাহ তার সঙ্গে থাকেন যদি বান্দা আল্লাহর ওপর ভরসা রাখেন। গুহামুখ থেকে শত্রুরা ফিরে যাওয়া এ যে সাক্ষাৎ রবের কুদরতের প্রকাশ!

আল্লাহর সাহায্য

সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো তারা সারা পর্বতজুড়ে? নবীজিকে খুঁজেছে। তন্ন তন্ন করে খুঁজে গুহামুখে পৌঁছে কী মনে করে গুহার ভেতরে দৃষ্টি দেয়নি! অথচ নবীজি শুধু তাদের পায়ের আওয়াজ শুধু শোনেননি, তাদের দেখেছেনও। ‘গুহামুখ থেকে ফিরে যাওয়া’ তাদের এই মনের পরিবর্তনটাই আল্লাহর পক্ষ থেকে ছিল সরাসরি গায়েবি মদদ এবং রাসুল (সা.)-এর অন্যতম মুজিজা। আল্লাহ বলেন, ‘তোমার প্রভুর সেনাবাহিনীর খবর তোমার প্রভু ব্যতীত কেউ জানে না।’ (সুরা মুদ্দাছছির : ৩১)। আর এ কারণেই হাজারো প্রস্তুতি নিয়েও অবশেষে কুফরির ঝান্ডা অবনমিত হয় ও তাওহিদের ঝান্ডা সমুন্নত হয়। আল্লাহ বলেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তাদের সঙ্গে থাকেন যারা আল্লাহ ভীরুতা অবলম্বন করে এবং যারা সৎকর্মশীল।’ (সুরা নাহল : ১২৮)।

হিজরতের উপকারিতা

যে মুসলিমরা সহিষ্ণুতার পাশাপাশি নিপীড়ন ও নির্যাতনের শিকার হন, হিজরত তাদের জন্য নতুন কোনো স্থানে স্বাধীনভাবে ধর্ম পালনে উদ্বুদ্ধ করে। মহান আল্লাহতায়ালা কোরআনে বলেছেন, ‘যারা নির্যাতিত হওয়ার পর আল্লাহর জন্য গৃহত্যাগ করেছে, আমি অবশ্যই তাদের দুনিয়ায় উত্তম আবাস দেব এবং পরকালের পুরস্কার তো সর্বাধিক; হায়! যদি তারা জানত।’ (সুরা নাহল : ৪১)।

হিজরতের তাৎপর্য ও শিক্ষা

হিজরত প্রকৃতপক্ষে নির্যাতন থেকে সাময়িক বিরতি মাত্র। সহিংসতা উপেক্ষা করে শক্তি সঞ্চয় করে অপ্রতিরোধ্য সাহস গড়ে তোলার প্রশিক্ষণ। হিজরত অত্যন্ত শক্তভাবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার ক্ষেত্রে এবং সর্বশক্তিমান আল্লাহতায়ালার প্রতি আনুগত্য প্রদর্শন করে। মুসলিমরা শুধু কোনো নির্দিষ্ট জমিন বা সময়ের জন্য নয়, বরং বিশ্বময় সর্বকালে আল্লাহর দ্বীন প্রতিষ্ঠায় বিশেষ নেতৃত্ব ও প্রতিনিধিত্বের জন্য নির্বাচিত এক জাতি। নবী (সা.)-এর পথ ধরে গাইরুল্লাহকে ছেড়ে এক আল্লাহর পথে নিজের স্বার্থ ত্যাগ করাই হিজরতের মূল শিক্ষা।

লেখক : প্রধান শিক্ষক, দারুল হুদা মডেল মাদ্রাসা কোদালপুর (ডিএস)

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত