প্রশ্ন : কাউকে দাড়ি রাখতে বললে সে যদি বলে, ‘আমি বুড়ো হয়ে গেছি নাকি যে, দাড়ি রাখব? দাড়ি রাখলে আমাকে ভাল্লুকের মতো লাগবে।’ দাড়ি নিয়ে এরূপ মন্তব্য করলে ঈমান থাকবে? স্ত্রী থাকলে বিয়ে ভেঙে যাবে?
উত্তর : কথাটি যদি নবীজি (সা.)-এর এ সুন্নতকে সুন্নত হওয়া অস্বীকার করে ঠাট্টা করে থাকে, তাহলে তার ঈমান চলে যাবে। তার জন্য তওবা করে নতুন করে ঈমান আনা আবশ্যক। আর যদি এমনিই বলে থাকে, তাহলে কাজটি গোনাহের হলেও তার ঈমান চলে যাবে না। উল্লেখ্য, দাড়ি ইসলামের শুধু ওয়াজিব বিধান নয়, বরং ইসলাম ও মুসলমানের ধর্মীয় প্রতীক। কোনো জাতি-গোষ্ঠী বা রাষ্ট্রের প্রতীক নিয়ে কটূ মন্তব্য করা খুবই গর্হিত কাজ, অমার্জনীয়ও বটে। তাই ইসলামের প্রতীকের সম্মান করা ফরজ। বিদ্রূপ করলে ঈমানহারা হওয়ার আশঙ্কা থাকে। (মাজমাউল আনহুর : ১/৬৯২, আল মুহিতুল বোরহানি : ৭/৪১০, ৫/২৩৬)।
প্রশ্ন : বর্তমানে বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন উপলক্ষ্যে শান্তির প্রতীক হিসেবে জ্বলন্ত মোমবাতি হাতে নিয়ে কিছু লোককে হাঁটতে দেখা যায়। এটা আগুনের পূজা হিসেবে শিরকের শামিল হবে? শিখা চিরন্তন, শিখা অনির্বাণ আর মোমবাতি জ্বালিয়ে শান্তি প্রদর্শনের মধ্যে পার্থক্য কী?
উত্তর : আগুন কখনোই শান্তির প্রতীক নয়। আগুনকে শান্তির প্রতীক মনে করা অগ্নিপূজকদের বিশ্বাস। শিখা চিরন্তন, শিখা অনির্বাণ বা মোমবাতি প্রজ্বলন- সব ক’টিই অগ্নি উপাসকদের নিদর্শন। অন্য ধর্মের পূজনীয় বস্তু হওয়ায় অগ্নিকে শ্রদ্ধা জানানোর মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করা ইসলামে তাওহিদের চেতনা ও বৈশিষ্ট্যের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। এ জাতীয় প্রয়াস জাতিকে পৌত্তলিকতার দিকেও ঠেলে দেবে। তাই এ থেকে বিরত থাকা আবশ্যক। মদিনা আসার পর নবীজি (সা.) নামাজের জন্য সমবেত হওয়ার ঘোষণা বিষয়ে পরামর্শ করলে, আগুন জ্বালিয়ে সবাইকে সতর্ক করা প্রসঙ্গে পরামর্শ এলো। নবীজি (সা.) বিধর্মীদের সঙ্গে সাদৃশ্য থাকায় তা নাকচ করে দেন। হাদিসে বর্ণিত হয়েছে; আনাস (রা.) বলেন, (নামাজে সমবেত হওয়ার জন্য) সাহাবায়ে কেরাম (রা.) আগুন জ্বালানো অথবা নাকুস বাজানোর কথা আলোচনা করেন। আবার এগুলোকে (যথাক্রমে) ইহুদি ও নাসারাদের প্রথা বলে উল্লেখ করা হয়। (বোখারি : ৬০৩, ফাতহুল বারি : ২/১২০)।