সত্যের জয় ও প্রতিদান

জুনাইদ মাহদি

প্রকাশ : ১১ জুলাই ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

সত্য ও সততা ছাড়া মানুষ, মানুষ থাকে না। পশুতে পরিণত হয়। মিথ্যার চর্চা মানুষকে ইতর প্রাণীতে রূপান্তরিত করে। আকার ও আকৃতিতে মানুষ হলেও কিংবা সমাজে বাস করলেও সে আর মানুষ থাকে না, যদি মনুষ্যত্ব না থাকে। তাই সত্য ও সততা মানুষের জন্য এক অবশ্যম্ভাবী বিষয়। যা থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়া মানে মানুষ নিজের নিজস্বতা ও অস্তিত্বকে ভুলে থাকার নামান্তর। উপরন্তু মিথ্যা সর্বদাই বর্জনীয়। পাপ ও পাপের আহ্বায়ক। কথায় বলে সত্যে মুক্তি মিথ্যায় ধ্বংস। এটা হাদিসেরই বাণী। অতীত ইতিহাসে দেখা যায়, সততার পুরস্কারের কথা। সুদ ঘুষ থেকে বেঁচে থাকার নানান গল্প। আজ তা প্রায় বিরল ঘটনার মতো। অথচ সত্যের জয় চিরকাল। আগে বা পরে শুধু এইটুকু পার্থক্য। আমরা সততা শিখব কোত্থেকে সাহাবাদের থেকে। নবীর আদর্শ থেকে। মহানবী (সা.)-এর কাছ থেকে সততার সবক শিখেছেন সাহাবায়ে কেরাম। তারাই প্রথম শুনেছেন সততার পুরস্কার সংক্রান্ত হাদিসগুলো এবং তারাই প্রথম আমল করে ব্যবসা-বাণিজ্যে বরকতের ভান্ডার খুলেছেন। নবীজি (সা.) ইরশাদ করেছেন, যদি ক্রেতা-বিক্রেতা সত্য বলে এবং ভালো-মন্দ প্রকাশ করে দেয়, তাহলে তাদের লেনদেন বরকতময় হবে। আর যদি উভয়ে মিথ্যা বলে এবং দোষত্রুটি গোপন করে তাহলে এই লেনদেন থেকে বরকত উঠিয়ে নেওয়া হবে। (মুসলিম : ১৫৩২)।

সঠিক পথে থাকার উপায় : ন্যায় পথে থাকার জন্য প্রথম শর্ত হলো সদিচ্ছা। মানুষ না ঠকানো দ্বিতীয় শর্ত। বাস্তবতা হলো, মানুষের সততার চাবি তার নিজের হাতে। কে তা ভেঙে ফেলবে আর কে যতনে রাখবে, এটা তার একান্তই নিজের ইচ্ছা ও সাধনার বিষয়। তবে সততার সঙ্গে হকের ওপর অবিচল থাকা বুদ্ধিমানের কাজ। তাদের জন্য মহান আল¬াহর নির্দেশনা, হে ঈমানদাররা! আল্লাহকে ভয় করো এবং সত্যবাদীদের সঙ্গে থাক। (সুরা তাওবা : ১১৯)। এই আয়াত থেকে প্রমাণিত হলো, সততা বজায় রাখতে হলে সৎ লোকদের সংস্পর্শে থাকা জরুরি। অসৎ লোকের সঙ্গ পরিহার করা আবশ্যক। সত্যবাদী কারা এবং তাদের সঙ্গে থাকার গুরুত্ব বোঝানোর লক্ষ্যে মহান আল্লাহ আরো বলেন, আর যে কেউ আল্লাহর হুকুম এবং তার রাসুলের হুকুম মান্য করবে, তাহলে যাদের প্রতি আল্লাহ নেয়ামত দান করেছেন, সে তাদের সঙ্গী হবে। তারা হলেন নবী, সিদ্দিক, শহীদ ও সৎকর্মশীল ব্যক্তিবর্গ। আর তাদের সান্নিধ্যই হলো উত্তম। (সুরা আননিসা : ৬৯)। উলি¬খিত ব্যক্তিবর্গের অনুসরণ কিংবা তাদের সঙ্গে থেকে সততার পুরস্কারের যোগ্য বলে গণ্য হওয়া মিথ্যার জয়জয়কার এ যুগে প্রত্যেকটি মুসলিমের জন্য একান্ত প্রয়োজন।