প্রচলিত ঈদে মিলাদুন্নাবী (সা.) : তত্ত্ব ও বিশ্লেষণ

ইকরামুল ইসলাম

প্রকাশ : ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

মিলাদ শব্দের অর্থ জন্মসময় বা জন্মদিবস। ‘মিলাদুন্নাবী’ অর্থ মহানবী হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জন্মসময় বা জন্মদিবস। স্বভাবত সাধারণ মুসলমানরা ‘মিলাদুন্নাবী’ বলতে শুধুমাত্র নবীজি (সা.)-এর জন্মের সময়ের আলোচনা করা বুঝান না; তারা ‘মিলাদুন্নাবী’ বলতে নবীজি (সা.)-এর জন্মের সময় বা জন্মদিনকে বিশেষ পদ্ধতিতে উদযাপন করাকেই বোঝান। আর মিলাদুন্নাবী কেন্দ্রিক প্রচলিত উৎসব-উদযাপন ও আয়োজনকে বলা হয় ‘ঈদে মিলাদুন্নাবী’।

জন্মবার : রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জন্মবার সম্পর্কে আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) সোমবারে জন্মগ্রহণ করেন, সোমবারে নবুওয়াত লাভ করেন, সোমবারে ইন্তেকাল করেন, সোমবারে মক্কা থেকে হিজরত করে মদিনার পথে রওনা করেন, সোমবারে মদিনায় পৌঁছান এবং সোমবারেই তিনি হাজরে আসওয়াদ (কালো পাথর) উত্তোলন করেন।’ - মুসনাদে আহমাদ, হাদিস : ২৫০৬।

জন্মসাল : রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জন্মসাল সম্পর্কে কায়েস ইবনে মাখরামা (রা.) বলেন, ‘আমি ও রাসুলুল্লাহ (সা.) দু’জনই ‘হাতির বছর’ জন্মগ্রহণ করেছি...।’ -জামে তিরমিজি, হাদিস : ৩৬১৯

আর হাতির বছর অর্থাৎ যে বছর আবরাহা হাতি নিয়ে কাবা ঘর ধ্বংসের জন্য মক্কা শরীফ আক্রমণ করেছিল। ঐতিহাসিকদের মতে এটি ছিল খ্রিষ্টাব্দ ৫৭১ সালের ২০ এপ্রিল। আর-রাহীকুল মাখতূম : ৫৪।

জন্মমাস ও জন্মতারিখ : সহিহ হাদিসের মাধ্যমে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জন্মবার ও জন্মসাল প্রমাণিত হলেও তার জন্মের মাস ও তারিখ সম্পর্কে হাদিসের গ্রন্থসমূহে নির্ভরযোগ্য কোনো বর্ণনা পাওয়া যায় না। একারণে পরবর্তীতে আলেম ও ঐতিহাসিকদের মাঝে বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক মতবিরোধ দেখা যায় এবং একাধিক মতের অবতরণ ঘটে। কারো মতে তিনি মুহাররম মাসে, কারো মতে সফর মাসে, আর করো মতে রমজান মাসে জন্মগ্রহণ করেন।

কারো কারো মতে তিনি রবিউল আওয়ালের ২, ৮, ৯, ১০, ১২, ১৭ ও ২২ তারিখে জন্মগ্রহণ করেন। আবার কারো মতে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর জন্মমাস ও জন্মতারিখ অজ্ঞাত। তবে আধুনিক জ্যোতির্বিজ্ঞানের হিসাব মতে ৮-১২ রবিউল আওয়ালের মধ্যে কেবল ৯ রবিউল আওয়াল সোমবার ছিল। সেই হিসেবে বলা হয় রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর জন্ম ৯ রবিউল আওয়াল, সোমবারে। বিশিষ্ট আলেম মুহাম্মাদ সোলায়মান মনসুরপুরী এবং প্রখ্যাত জ্যোতির্বিজ্ঞানী মাহমুদ পাশাও গবেষণা করে এমন তথ্যই প্রকাশ করেছেন। -ইবনে সাদ, আত-তাবাকাতুল কুবরা : ১/৮২; ইবনে হিশাম, আস-সীরাতুন নাবাবিয়্যাহ : ১/১৮৩; আর-রাহীকুল মাখতূম : ৫৪

 

ইতিহাসের মানদ-ে : আমরা এখানে ‘মিলাদুন্নাবী’র উদ্ভাবন, উদযাপন ও বিস্তারের ইতিহাস জানার চেষ্টা করব।

উপরের আলোচনা থেকে আমরা জেনেছি- রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জন্মবার ও জন্মসাল সহিহ হাদিস দ্বারা প্রমাণিত। কিন্তু তার জন্মমাস ও জন্মতারিখ হাদিসের গ্রন্থসমূহে নির্ভরযোগ্য কোনো বর্ণনা পাওয়া যায় না। এ থেকে সহজে অনুমেয়- ইসলামের তিন কল্যাণ যুগ, অর্থাৎ সাহাবি, তাবেয়ি এবং তাবে-তাবেয়িদের যুগেও ‘মিলাদুন্নাবী’ উদযাপনের কোনো প্রচলন ছিল না। এ ব্যাপারে আল্লামা ইবনে হাজর আল-আসকালানী লিখেছেন, ‘ইসলামের সম্মানিত প্রথম তিন শতাব্দীর সালফে সালেহিনের কোনো একজনও এই কাজ (মিলাদুন্নাবী উদযাপন) করেননি।’ -আস-সালেহী, সুবুলুল হুদা : ১/৩৬৬।

প্রখ্যাত আলেম সাইয়্যেদ দিলদার আলী বলেন, ‘মিলাদের কোনো আসল বা সূত্র প্রথম তিন যুগের কোনো সালফে সালেহিন থেকে বর্ণিত হয়নি; বরং তাদের যুগের পরে এর উদ্ভাবন ঘটেছে।’ -সাইয়্যেদ দিলদার আলী, রাসুলুল কালাম ফিল মাওলিদ ও ওয়াল কিয়াম : ১৫

দুই ঈদের বাইরে কোনো দিবসকে সামাজিকভাবে উদযাপন শুরু হয় শিয়াদের উদ্যোগে হিজরি ৪র্থ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময় থেকে। ঈদে মিলাদুন্নাবী উদযাপনে শিয়াগণ অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। আহমাদ ইবনে আলী আল-কালকাশান্দী লিখেছেন, ‘রবিউল আওয়াল মাসের ১২ তারিখে ফাতেমী শাসকগণ মিলাদুন্নাবী উদযাপন করতেন। এ উপলক্ষে বিপুল পরিমাণে উন্নত মানের মিষ্টান্ন তৈরি করা হতো এবং এই মিষ্টান্ন ৩০০ পিতলের খাঞ্চায় ভরে মিলাদের রাত্রে তালিকাভুক্ত রাষ্ট্রীয় দায়িত্বশীলদের মধ্যে বিতরণ করা হতো...। এভাবে তারা আলী (রা.)-এর জন্মদিনও পালন করতেন...।’ -আল-কালকাশান্দী, সুবহুল আশা : ৩/৫০২-৫০৩।

যিনি ঈদে মিলাদুন্নাবীর প্রবর্তক হিসাবে সর্বাধিক প্রসিদ্ধ এবং ঈদে মিলাদুন্নাবীকে মুসলমানদের অন্যতম উৎসব হিসাবে প্রতিষ্ঠা দানের দাবিদার তিনি হচ্ছেন- ইরাকের ইরবিল প্রদেশের শাসক আবু সাঈদ মুজাফ্ফারুদ্দীন কুকুবূরী। সীরাতুন্নাবী গবেষক ও ঐতিহাসিকগণ তাকেই মিলাদুন্নাবীর প্রকৃত উদ্ভাবক বলে আখ্যা দিয়েছেন। ব্যক্তি জীবনে অত্যন্ত ধার্মিক ছিলেন তিনি। দানশীলতা ও মানবসেবায় তার অবদান অনন্য। দীর্ঘ ৪৫ বছর তিনি শাসনকার্য পরিচালনা করেন। কুকুবূরী মিলাদ উদযাপন শুরু করেন হিজরি ৬০৪ সাল থেকে। রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর জন্মতারিখ নিয়ে মতবিরোধ থাকায় তিনি এক বছর ৮ রবিউল আওয়াল, অন্য বছর ১২ রবিউল আওয়াল ঈদে মিলাদুন্নাবী উদযাপন করতেন। তবে এই যুগটা ছিল বিশ্ব মুসলিমের জন্য অত্যন্ত বিপদসংকুল যুগ। অভ্যন্তরীণ যুদ্ধ-বিগ্রহ ও বহির্শত্রুর আক্রমণে বিপর্যস্ত মুসলিম জনপদগুলোতে কুকুবূরীর মিলাদণ্ডউৎসব অভূতপূর্ব সাড়া জাগায় এবং বিস্তার লাভ করে। -আস-সালেহী, সুবুলুল হুদা : ১/৩৬২; মোহাম্মদ বেশারাতুল্লাহ, হাকিকতে মোহাম্মদী ও মীলাদে আহমাদী : ৩০১-৩০২।

পরবর্তীতে ‘মিলাদ’ উদযাপনে ক্রমান্বয়ে বিবর্তন ঘটতে থাকে। বর্তমানে বার্ষিক ঈদে মিলাদুন্নাবী পালনে বিভিন্ন নতুন অনুষ্ঠানাদির সংযোজন হয়েছে। বিভিন্ন মুসলিম দেশে এবং সংখ্যালঘু মুসলিম সমাজে এ উপলক্ষে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর জন্মালোচনা, খাওয়া-দাওয়া বা দান-সাদকার অনুষ্ঠানের পাশাপাশি সম্মিলিত গান-বাজনা, সভা-সমাবেশ, মিছিল, র‌্যালি, জশনে জুলুস ইত্যাদির ব্যবস্থা থাকে।

সুন্নাহের আলোকে :

আমরা এখন সুন্নাহের আলোকে ‘মিলাদুন্নাবী’ পালনের বিষয়টি জানার চেষ্টা করব। সহিহ হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার জন্মদিন স্মরণ করতেন সাপ্তাহিকভাবে এবং তা করতেন সোমবার রোজা পালনের মাধ্যমে।

আবু কাতাদা (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) কে সোমবার রোজা রাখা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, ‘এই দিনে আমি জন্মগ্রহণ করেছি এবং এই দিনেই আমি নবুওয়াত পেয়েছি।’ -সহিহ মুসলিম, হাদিস : ১১৬২

ইসলামের অন্যতম ইবাদত ও ইমানের অবিচ্ছেদ্য অংশ সর্বাধিক গুরুত্বের সঙ্গে মুমিনহৃদয়ে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর ভক্তি-সম্মান ও ভালোবাসার জায়গা দেওয়া এবং উত্তরত্তোর তা বৃদ্ধিতে সচেষ্ট থাকা মুমিনের একান্ত কর্তব্য। এক্ষেত্রে কার্যকর উপায় হলো- রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর প্রতি দরুদ ও সালাম পাঠ করা। এটি একটি সুন্নাহসম্মত ইবাদত। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘আল্লাহতায়ালা বহুসংখ্যক ফেরেশতা এ কাজের জন্য নিয়োগ দিয়েছেন যে, তারা পৃথিবীর জমিনে বিচরণ করতে থাকবে এবং আমার উম্মাতের যে ব্যক্তি আমার জন্য দরুদ ও সালাম পাঠাবে তারা তা আমার কাছে পৌঁছে দেবে।’ -সুনানে নাসায়ি, হাদিস : ১২৮০

পৃথিবীতে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আগমন বিশ্ববাসীর জন্য বিশেষ এক রহমত। সুতরাং তার জন্মণ্ডজীবনী, কর্ম-প্রকৃতি, আচার-আচরণ, জীবনাদর্শ ইত্যাদি আলোচনা করাও সুন্নাহসম্মত ইবাদত। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘তোমাদের মধ্য থেকে যারা পরকালে আল্লাহর সঙ্গে সাক্ষাতের আশা রাখে এবং আল্লাহকে অধিক স্মরণ করে, তাদের জন্য আল্লাহর রাসুলের মাঝে রয়েছে সর্বোত্তম আদর্শ।’ -সুরা আহযাব, আয়াত : ২১।

মিলাদুন্নাবী উদযাপন :

প্রচলিত ঈদে মিলাদুন্নাবীর পক্ষে এবং বিপক্ষে নানা যুক্তি-তর্ক, দলিল-প্রমাণ, মতামত ও আলোচনা রয়েছে। তবে মিলাদুন্নাবী তথা নবীজি (সা.)-এর জন্মদিন পালনের তুলনায় সিরাতুন্নাবী অর্থাৎ রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর জীবনাদর্শ অনুসরণে মানবজাতির প্রভূত কল্যাণ নিহিত রয়েছে। নবীজি (সা.)-এর জন্ম সম্পর্কিত বিষয় অবশ্যই আলোচনার দাবি রাখে। এক্ষেত্রে অতিরঞ্জন ও বাড়াবাড়ি এবং জাকজমকপূর্ণ আয়োজন কোনোভাবেই কাম্য নয়। কেননা, হাদিসের বিশুদ্ধ গ্রন্থগুলো, যেখানে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র কর্ম, কথা, আচরণ, অনুমোদন ইত্যাদি সংকলিত হয়েছে এবং সাহাবায়ে কেরাম ও তাবেয়িদের মতামত সংকলিত হয়েছে, সেসকল গ্রন্থে একটি সহিহ বা যয়িফ (দুর্বল) হাদিস পাওয়া যায় না যে, রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর জীবদ্দশায় বা তার ইন্তেকালের পর কোনো সাহাবি ব্যক্তিগত বা সামাজিকভাবে তার জন্মদিন উদযাপন বা এ উপলক্ষে আনন্দ প্রকাশের জন্য নির্দিষ্ট কোনো দিনে বা অনির্দিষ্টভাবে বছরের কোনো সময়ে কোনো আয়োজন বা অনুষ্ঠান করেছেন। অথচ তারাই হলেন- রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর আদর্শ অনুসারণে সবার থেকে অগ্রগামী এবং তাদের যুগকেই নবীজি (সা.) শ্রেষ্ঠ ও সোনালি যুগ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন।

করণীয় :

পবিত্র কোরআনে সুরা মায়িদার ৩ নম্বর আয়াতে আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘আজ আমি তোমাদের জন্য তোমাদের দ্বীনকে পূর্ণাঙ্গ করে দিলাম, তোমাদের ওপর আমার নিয়ামতকে পরিপূর্ণ করলাম এবং তোমাদের জন্য দ্বীন হিসেবে ইসলামকে (চিরদিনের জন্য) পছন্দ করে নিলাম।’ সাহাবি আবু নাজীহ আল-ইরবাদ (রা.) বর্ণিত, তিনি বলেন, একদিন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের নিয়ে সালাত আদায় করলেন। অতঃপর আমাদের দিকে ফিরে এক জ্বালাময়ী ভাষণ দেন। ফলে চোখগুলো অশ্রুসিক্ত হলো এবং অন্তরগুলো বিগলিত হলো। এ সময় এক ব্যক্তি বলেন, হে আল্লাহর রাসুল, এ যেন বিদায়ী ভাষণ! অতএব, আপনি আমাদের কী নির্দেশ দেন! তিনি বলেন, ‘আমি তোমাদের আল্লাহভীতি এবং (আমীরকে) মান্য ও আনুগত্যের উপদেশ দিচ্ছি, যদিও হাবশী গোলাম হয়। আমার পরে তোমাদের মধ্যে যারা জীবিত থাকবে তারা অচিরেই প্রচুর মতবিরোধ দেখবে। তখন তোমরা অবশ্যই আমার সুন্নাত এবং আমার হিদায়াতপ্রাপ্ত খলিফাগণের সুন্নাত অনুসরণ করবে; তা মাড়ির দাঁত দিয়ে কামড়ে ধরবে। সাবধান! (ধর্মে) প্রতিটি নব আবিষ্কৃত বিষয় সম্পর্কে! কেননা, প্রতিটি নব আবিষ্কৃত বিষয় বিদআত। আর প্রতিটি বিদআতই ভ্রষ্টতা।’ -সুনানে আবু দাউদ, হাদিস : ৪৬০৭।

উপরোক্ত আয়াত ও হাদিস থেকে জানতে পারি- মহান আল্লাহর মনোনীত ধর্ম ইসলাম পূর্ণতা পেয়েছে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর মাধ্যমে; তার জীবদ্দশায়। তাতে নতুন কোনো বিষয়ের সংযোজন-বিয়োজন নিষ্প্রয়োজন। তার তিরোধানের পর তার জীবনচরিত এবং হিদায়াতপ্রাপ্ত সাহাবায়ে কেরামের পদঙ্ক অনুসরণই উম্মাতের জন্য নিরাপদ আশ্রয়। অন্যথা বিপথগামী হওয়ার সমূহ আশংকা থেকে যায়।

তাছাড়া মিলাদুন্নাবী উদযাপনের সুন্নাহসম্মত পদ্ধতি নবীজি (সা.) নিজেই আমাদের জানিয়ে গেছেন। তা বাৎসরিক কোনো উৎসব-অনুষ্ঠানের মাধ্যমে নয়; সাপ্তাহিকভাবে সোমবার রোজা পালনের মাধ্যমে। নতুন উদ্ভাবনের পিছে না পড়ে প্রমাণিত সুন্নাতের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকাই বুদ্ধিমানের পরিচায়ক। মালিক ইবনে আনাস (রহ.) থেকে (মুরসালরূপে) বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘আমি তোমাদের মধ্যে দু’টি জিনিস রেখে যাচ্ছি। যতক্ষণ তোমরা সে দু’টি জিনিস আঁকড়ে ধরে থাকবে, ততক্ষণ পর্যন্ত পথভ্রষ্ট হবে না; আল্লাহর কিতাব এবং তার রাসুলের সুন্নাহ।’ -মুয়াত্তা মালেক, হাদিস : ১৮৭৪।

ইসলামের মূল শিক্ষা- সত্যকে আঁকড়ে ধরা এবং সুন্নাহ মোতাবেক জীবন গড়া। এ ব্যাপারে সতর্ক থাকা ও সঠিক তথ্য জেনে আমল করা মুমিনের একান্ত কর্তব্য। আল্লাহতায়ালা আমাদের তার সন্তুষ্টির পথে চলতে সহায়ক হোন এবং পার্থিব ও পরকালে সফলতা দান করুন- আমীন।

তথ্যসূত্র

আল-মাকতাবাহ আশ্-শামেলাহ

আর-রাহীকুল মাখতূম

আল-বিদায়াহ ওয়ান নেহায়াহ

এহ্ইয়াউস সুনান

বিভিন্ন ইসলামিক পত্রিকা ও ওয়েবসাইট

[email protected]