ঢাকা ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

রাসুল (সা.) যেভাবে পথ চলতেন

শরিফ আহমাদ
রাসুল (সা.) যেভাবে পথ চলতেন

কোরআনে বর্ণিত হয়েছে, রহমানের বান্দা তারাই যারা পৃথিবীতে অত্যন্ত নম্রভাবে চলাফেরা করে এবং যখন অজ্ঞ ও জাহেলরা তাদের (অশালীন ভাষায়) সম্বোধন করে তখন তারা বলে সালাম। (সুরা ফোরকান : ৬৩)। রাসুলুল্লাহ (সা.) ছিলেন এ আয়াতের জীবন্ত প্রতিচ্ছবি। চলার সময় সর্বদা তিনি ভারসাম্য রক্ষা করতেন। এর মাধ্যমে তার নম্রতা, বিনয় ও সৌজন্যতা প্রকাশ পেতো। রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর পথ চলার পদ্ধতি থেকে উম্মতের জন্য শেখার আছে অনেক কিছু।

পথচলার প্রধান বৈশিষ্ট্য : রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর চলাফেরা ছিল প্রাণবন্ত ও উদ্যমী পুরুষের মতো। তার হাঁটার গতি ছিল স্বাভাবিকের চেয়ে একটু দ্রুত। অল্প সময়ে অনেক পথ অতিক্রম করতেন। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নবী কারিম (সা.)-এর চেয়ে অধিক সুন্দর আর কিছু দেখিনি। যেন তার চেহারায় দীপ্তিমান সূর্য বিরাজ করছে। আর পথ চলার ব্যাপারে রাসূল অপেক্ষা অধিক দ্রুত আর কাউকে হাঁটতে দেখিনি। মনে হত জমিন যেন তার পায়ের নিচে গুটিয়ে আসছে। তার সাথে পথ চলতে গিয়ে আমরা ক্লান্ত হয়ে যেতাম অথচ তিনি স্বাভাবিকভাইে হাঁটতেন। (মুসনাদে আহমাদ : ৪৯৪৩)।

সহজ এবং বিনম্রভাবে হাঁটা : রাসুলুল্লাহ (সা.) হাঁটার সময় কখনো অহঙ্কার করতেন না। তিনি অত্যন্ত নম্রতা এবং শালীনতার সাথে পথ চলতেন। সামনের দিকে কিছুটা ঝুঁকে চলতেন । আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) ছিলেন ফর্সা উজ্জ্বল বর্ণের। তার ঘাম যেন মুক্তা। তিনি চলার সময় সামনের দিকে দিকে ঝুঁকে চলতেন। আমি এমন কোন মোলায়েম কাপড় বা রেশম স্পর্শ করিনি যা তার (মুবারক) হাতের তালুর মতো কোমল এবং মেশক ও আম্বরের মধ্যেও আমি ঐ সুগন্ধ পাইনি যা আমি তার মুবারক দেহে পেয়েছি। ( মুসলিম:৫৮৪৬)

দৃষ্টির শালীনতা বজায় রাখা : রাসুলুল্লাহ (সা.) কখনোই দৃষ্টি অবাধে ঘুরাতেন না। তিনি দৃষ্টির সংযম বজায় রাখতেন এবং পথ চলার সময় তার দৃষ্টি অনেকটা নিচের দিকে থাকত। এটাই শালীনতা ও বিনয়ের চূড়ান্ত নমুনা।

আলি ইবনে আবু তালিব (রা.)-এর নাতী ইবরাহিম ইবনে মুহাম্মাদ (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আলি (রা.) যখন রাসুলুল্লাহ (সা.) এর চরিত্র ও বৈশিষ্ট্য বর্ণনা করতেন তখন বলতেন, তিনি যখন পথ চলতেন, তখন পা তুলে এমনভাবে চলতেন যে, মনে হতো তিনি যেন উঁচু স্থান থেকে নিচে অবতরণ করছেন। (তিরমিজি : ৩৬৩৮, শরহুস সুন্নাহ : ৩৩৫৩)।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত