প্রশ্ন : বদলি হজ করানোর পর মাহরাম পাওয়া গেলে কী করণীয়?
উত্তর : মাহরাম না থাকলে বা মাহরাম দরিদ্র হলে বিত্তবান স্ত্রী যদি বদলি হজ করিয়ে ফেলে এবং হজ করানোর পর যদি মাহরাম মিলে যায়, তাহলে তার আদায়কৃত হজ নফল হজ হিসেবে ধর্তব্য হবে। পুনরায় স্বশরীরে মাহরামের সঙ্গে হজ আদায় করতে হবে। এ ক্ষেত্রে মাহরামবিহীন নারীদের পূর্ণ অক্ষম হবার আগ পর্যন্ত বদলি হজ না করিয়ে অপেক্ষা করা উচিত। যাতে নিশ্চিতরূপে বদলি হজ আদায় করা যায়। তবে যদি বদলি হজ করিয়ে ফেলে এবং মৃত্যু পর্যন্ত আর মাহরাম পাওয়া না যায়, তাহলে তার আদায়কৃত হজ ফরজ হিসেবেই আদায় হয়ে যাবে। (ফতোয়ায়ে শামি : ৩/৪৬৪)।
প্রশ্ন : নারীদের ইহরাম বাঁধার ক্ষেত্রে কীরূপ পোশাক পরিধান করতে হয়?
উত্তর : নারীরা ইহরাম অবস্থায় নিজ অভিরুচিমাফিক স্বাভাবিক পোশাক পরবে। (মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বা : ১৪৪১৯)। তবে মনে রাখতে হবে, খুব রংচটে (যা অপরের দৃষ্টি আকর্ষণ করে), আঁটসাঁট কিংবা পুরুষদের মতো পোশাক সর্বাবস্থায় নারীদের জন্য নিষিদ্ধ। (আসান ফিকহ : ১৬৩)।
প্রশ্ন : নারীরা ইহরাম অবস্থায় জুতাণ্ডমোজা ব্যবহার করতে পারবে?
উত্তর : নারীরা ইহরাম অবস্থায় জুতাণ্ডমোজা ব্যবহার করতে পারবে। আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) নারীদের ইহরাম অবস্থায় চামড়ার মোজা এবং পাজামা পরার অনুমতি দিতেন। তিনি বলেন, ‘সফিয়্যা (রা.) চামড়ার মোজা পরিধান করতেন। যা তার হাঁটু পর্যন্ত ছিল। (মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বা : ১৫৯৬৯, ১৫৯৬৫)। নারীরা হাত মোজা ব্যবহার করতে পারবে। আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, ‘নারীরা ইহরাম অবস্থায় হাত মোজা এবং পাজামা পরিধান করতে পারবে।’ (মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বা : ১৪৪৪০)।
প্রশ্ন : ঋতুবতী নারীরা কীভাবে ইহরাম বাঁধবে?
উত্তর : হায়েজ ও নেফাসগ্রস্ত নারীদের ইহরাম বাঁধার আগে গোসল করা মুস্তাহাব। রাসুল (সা.) বলেন, ‘নারীরা হায়েজ বা নেফাস অবস্থায় মিকাতে এলে, গোসল করবে এবং ইহরাম গ্রহণ করবে। এরপর তওয়াফ ছাড়া হজের অন্য আমল সম্পন্ন করবে। (সুনানে আবি দাউদ : ১/২৪৩)। গোসল করা সম্ভব না হলে বা অসুবিধা বোধ করলে অজু করবে। (আসান ফিকহ : ২/১৬২)।
প্রশ্ন : ইহরাম অবস্থায় নারীরা কি চেহারা খোলা রাখবে?
উত্তর : ইহরাম গ্রহণকারিনী পূর্ণ মুখমণ্ডল আবৃত রাখবে। (মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বা : ১৫৯৬৮)।
প্রশ্ন : ইহরাম অবস্থায় নেকাব ব্যবহার করতে পারবে?
উত্তর : আলী (রা.) ইহরাম অবস্থায় নারীদের নেকাব ব্যবহার করতে নিষেধ করতেন। তবে চেহারার ওপর দিয়ে তারা কাপড় ঝুলিয়ে দেবে। (মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বা : ১৪৫৩৯)।
প্রশ্ন : নারীরা কোন সময় তওয়াফ করবে?
উত্তর : নারীরা তওয়াফের জন্য রাতের সময়টিকে বেছে নেবে অথবা এমন সময়, যখন ভীড় তুলনামূলক কম থাকে। (ফতোয়ায়ে শামি : ৩/৪২২)।
প্রশ্ন : নারীরা কীভাবে তালবিয়া পাঠ করবে?
উত্তর : নারীরা ক্ষীণ আওয়াজে তালবিয়া পাঠ করবে। কারণ, তাদের আওয়াজও সতর। (মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বা : ১৪৮৮২)।
প্রশ্ন : হজে তো চুল কাটতে হয়; অথচ নারীদের জন্য চুল কাটার তো কোনো নিয়ম নেই। এ ক্ষেত্রে করণীয় কী?
উত্তর : নারীরা তাদের চুল প্রায় এক ইঞ্চি পরিমাণ ছোট করবে। (মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বা : ১৩০৬৫)। ইব্রাহিম (রহ.) বলেন, ‘নারীরা আঙুলের এক কর পরিমাণ চুল ছোট করবে।’ (মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বা : ১৩০৭৩)।