বিশ্বকাপের পর প্রথম ম্যাচ খেলতে নেমেই বিপাকে পড়েছে বার্সেলোনা। লা লিগায় বার্সেলোনা-এস্পানিওলের ম্যাচে আলোচনার কেন্দ্রে ছিলেন রেফারি অ্যান্তোনিও মাতেও লাহোস। ম্যাচজুড়ে ছিল কার্ডের ছড়াছড়ি। তবে রেফারিকে কোনো দায় দিচ্ছেন না জাভি হারনান্দেজ, নিজেদের ভুলে পয়েন্ট হারিয়েছেন বলে মনে করেন বার্সেলোনা কোচ। ক্যাম্প ন্যু শনিবার লিগ ম্যাচটি ১-১ গোলে ড্র হয়। পুরো ম্যাচে মোট ১৫টি হলুদ কার্ড দেখান রেফারি। ম্যাচের সপ্তম মিনিটেই হেডে গোল করে বার্সেলোনাকে এগিয়ে নেন মার্কোস আলোনসো। এরপর অনেক সুযোগ পেয়েও ব্যবধান বাড়াতে পারেনি স্বাগতিকরা। ১৫ ম্যাচে ৩৮ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে আছে বার্সেলোনা। সমান ম্যাচে রিয়ালেরও পয়েন্ট ৩৮। গোল পার্থক্যে পিছিয়ে দুইয়ে কার্লো আনচেলত্তির দল।
আলোনসো ‘নায়ক’ থেকে ‘খলনায়ক’ হয়ে যান ৭২ মিনিটে। এস্পানিওলের হোসেলুকে বার্সেলোনা ডিফেন্ডার ফাউল করলে পেনাল্টি দেন রেফারি। নিজেই সমতা টানেন স্প্যানিশ ফরোয়ার্ড। গোলের পর ২ মিনিটের মধ্যে স্প্যানিশ রেফারি লাহোস দেখান পাঁচটি হলুদ কার্ড। ৭৮তম মিনিটে রেফারির সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন বার্সেলোনার জর্দি আলবা।
কাতার বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনা ও নেদারল্যান্ডসের কোয়ার্টার-ফাইনালে ১৬টি হলুদ কার্ড দেখিয়ে প্রবল সমালোচিত হওয়া লাহোস ৮০তম মিনিটে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখান সোসাকে। ১০ জনের দলে পরিণত হয় এস্পানিওলও। পরে এস্পানিওল অধিনায়ক লিওনার্দো কারবেরাকেও লাল কার্ড দেখান রেফারি। তবে ভিএআরের সাহায্য নিয়ে বদলান সিদ্ধান্ত।
শুরুতে এগিয়ে গিয়েও পয়েন্ট হারানোয় ম্যাচ শেষে অবশ্য নিজেদেরই দুষলেন জাভি, ‘আমরা রেফারির ব্যাপারে কথা বলতে পারি, কিন্তু ভুলগুলো আমাদের। ম্যাচে এত বেশি ভুল করলে এবং যথেষ্ট কার্যকর হতে না পারলে এমনটা হতে পারে, এই ম্যাচগুলি জেতা উচিত। ইতিবাচক ফল দিয়ে বছর শেষ করা গুরুত্বপূর্ণ ছিল। এটি ঠিক যে এখনও লিগের শীর্ষে আছি, রিয়াল মাদ্রিদের পাশে আছি। কিন্তু নিজেদের ভুলে আমরা দুই পয়েন্ট হারিয়েছি।’
ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ জয়ের আগাম উৎসব কী তবে শুরু হলো আর্সেনাল শিবিরে? বছরের প্রথম দিনই উদযাপন করতে পেরেছে আগের দিন দুর্দান্ত জয়ে। শুধু জয়ই নয়, অন্যদিকে তাদের মূল প্রতিদ্বন্দ্বী ম্যানচেস্টার সিটি যে মূল্যবান দুটি পয়েন্ট হারিয়ে ফেলেছে। ফলে দ্বিতীয় স্থানে থাকা ম্যান সিটির সঙ্গে ৭ পয়েন্টের দূরত্ব তৈরি করে নিতে পারল আর্সেনাল। বছরের শেষ দিন ব্রাইটন অ্যান্ড হোভ আলবিওনের মাঠে স্বাগতিকদের বিপক্ষে খেললেও সমস্যায় পড়েনি গানাররা, স্বাগতিকদের ৪-২ গোলে হারিয়ে এসেছে মাইকেল আর্তেতার শিষ্যরা। তবে ঘরের মাঠে এভারটনের বিপক্ষে শুরুতে আর্লিং হালান্ডের গোলে এগিয়ে গিয়েও জয় পায়নি ম্যানচেস্টার সিটি। শেষ মুহূর্তে গোল হজম করে ১-১ গোলে ড্র মেনেই মাঠ ছাড়তে হলো পেপ গার্দিওলার শিষ্যদের। জয়ের পর আর্সেনালের পয়েন্ট ১৬ ম্যাচে ৪৩। সমান ম্যাচে ৩৬ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে ম্যানসিটি। ১৭ ম্যাচে ৩৪ পয়েন্ট নিয়ে তিনে নিউক্যাসল ইউনাইটেড। ব্রাইটন অস্টম ও এভারটন রয়েছে ১৬তম স্থানে।
ব্রাইটনের মাঠ অ্যামেক্স স্টেডিয়ামে ম্যাচের শুরুতেই গোল আদায় করে নেয় আর্সেনাল। দ্বিতীয় মিনিটের মাথায় গোল করেন বুকায়ো সাকা। ৩৯ মিনিটে মার্টিন ওডেগার্ড ব্যবধান দ্বিগুন করেন। ২-০ গোলে দ্বিতীয়ার্ধ শুরুর পরপরই ব্যবধান দ্বিগুন করে আর্সেনাল। ৪৭ মিনিটে গোল করেন এডওয়ার্ড এনকেতিয়া। ৬৫ মিনিটে একটি গোল পরিশোধ করে দেন ব্রাইটনের কাওরু মিতোমা। ৭ মিনিট পর ব্রাইটনের জালে চতুর্থবার বল জড়ান ব্রাজিলিয়ান গ্যাব্রিয়েল মার্টিনেলি। তবে ৭৭ মিনিটে ব্যবধান ২-৪ করে ব্রাইটনের ইভান ফার্গুসন।
শেষ দিকে ম্যাচটি কঠিন হয়ে গেলেও স্কাই স্পোর্টসকে আর্সেনাল কোচ মিকেল আর্তেতা বলেন, দলের সামগ্রিক পারফরম্যান্সে তিনি সন্তুষ্ট, ‘দারুণ কিছু মুহূর্ত যেমন ছিল, তেমনি কিছু সময়ে আবার আমাদের একটু পিছু হটতে হয়েছে এবং ভুগতে হয়েছে, কারণ ওরা আমাদেরকে বিপাকে ফেলে দিয়েছে। ওরা তো ভালো দল। ভালো একটি দলের বিপক্ষে এটি সত্যিই বড় এক জয়। ম্যাচের গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তগুলো আমরা নিজেদের করে নিতে পেরেছি, বিশেষ করে আক্রমণভাগে আমরা জায়গা বের করতে পেরেছি এবং দাপটে কাজ সেরে নেয়েছি। আমরা সত্যিই নিখুঁত ছিলাম।’ বছরের শেষটা যেমন তৃপ্তিদায়ক হলো, নতুন বছরও সেভাবেই শুরু করতে চান আর্সেনাল কোচ। নিজেদের আরও গুছিয়ে নিয়ে এগোতে চান তিনি সামনের দিকে, ‘প্রতিটি ম্যাচ ধরে এগোতে হবে আমাদের। আবার গুছিয়ে নিতে হবে, ম্যাচটি পর্যালোচনা করতে হবে। অনেক কিছু আমরা দারুণ করেছি, অনেক জায়গায় উন্নতি করতে হবে এবং সেসবকে পরের ম্যাচে বয়ে নিতে হবে।