বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) মানেই যেন বিতর্ক। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। টুর্নামেন্ট শুরুর দুদিন আগে আয়োজন নিয়ে প্রশ্ন তোলেন সাকিব আল হাসান। বাংলাদেশের টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক বলেছেন, সদিচ্ছার অভাব রয়েছে বিসিবির। ডিআরএস আনতে না পারা, বাজেট না থাকা, গোছালো আসর করতে না পারা বিপিএল আয়োজক কমিটির ব্যর্থতা। খেলোয়াড়রা ঠিক মতো জার্সিও পায়নি। দলগুলো স্পন্সর জোগাড় করতে পারেনি। ক্রিকেট পাগল একটি দেশে এগুলোকে ব্যর্থতা হিসেবে দেখছেন তিনি। তার কথাকে যৌক্তিক বলে মত দিয়েছেন মাশরাফি বিন মর্তুজা ও কোচ মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন।
গত আসর চলার সময় সাকিব বলেছিলেন, বিশ্বের ভেতর ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ হিসেবে বিপিএলের অবস্থান পাঁচ-ছয় নম্বরে। এবার টুর্নামেন্টকে বলেছেন ‘যা-তা’। তাহলে কি র্যাঙ্কিংয়ে ফেলার মতো অবস্থায় নেই বিপিএল? এমন প্রশ্নে মাশরাফি বিন মর্তুজা বলেছেন, ‘পরিবেশ দেখলে তাই মনে হবে। কারণ, এক মাঠে ৬-৭ টি দল অনুশীলন করছে। রংপুর যেমন তাদের নিজ দায়িত্বে নিজেদের মাঠে অনুশীলন করছে। এ বিষয়গুলো কিন্তু ম্যাটার করে। আমাদের ওই নির্দিষ্ট দলের সুযোগ-সুবিধা। আয়োজন সঠিক পন্থায় করতে হবে। তখন হয়তো বা এটা হবে। খালি চোখে যে কেউ এসে দেখে যে, একই মাঠে সবকিছু হচ্ছে, অনুশীলন হচ্ছে। এটা হ-য-ব-র-ল ব্যাপার, বলতে পারে। কিন্তু দিন শেষে খেলার মাঠে খেলা কিন্তু খেলার মতোই হয়। একটা টুর্নামেন্টের সৌন্দর্য আছে, শুরুর দিকে হাইপ তোলার ব্যাপার আছে, এটা হয়তো শুরু থেকে পারিনি, এটা সত্য। এই ছোট ছোট জিনিসগুলো নিয়ে ক্রিকেট বোর্ড চিন্তা করলে কিন্তু বড় আকার ধারণ করে। এগুলো পরিবর্তন করলে তো পরিবর্তন হবেই। পরিবর্তন না হওয়ার কোনো কারণ নেই। এমনও না যে, আমাদের মাঠ নেই। ফতুল্লা পড়ে আছে, আরও কিছু মাঠ পড়ে আছে। বাইরেও আছে। এগুলো যদি একটু ব্যবস্থা করা যায় খারাপ হয় না।’ প্রথম আসরের আগে যেমন প্রশ্ন এসেছিল, ১০ বছর পরও বদলায়নি। মাশরাফি বলেন, ‘শুরু থেকে দুটো জিনিসের সমন্বয়টা ভালো হয়নি। মিডিয়ার সঙ্গে বোর্ড, বোর্ডের সঙ্গে খেলোয়াড়- ত্রিমুখী বিষয় ঘটেছে। প্রথমত বিপিএল নিয়ে কেউ ইতিবাচক ছিল না মিডিয়ায়। খেলার মাঠে যখন এসেছে, টি-টোয়েন্টি ফরম্যাট তখন ওই জায়গায় ছিল না। এ নিয়ে অনেক আলোচনা হয়েছে। কারো জায়গা থেকে কেউ আক্রমণাত্মক হতে পারেনি। খুবই দুর্ভাগ্যজনক সারা বিশ্বের সবাই এগিয়ে গেছে। তাদের দেশের মিডিয়াও নিজ দেশের টুর্নামেন্টকে প্রচার করছে সারা বিশ্বে। আমরা হয়তো তা পারিনি। এখানে একতরফা বললেই হবে না, চ্যালেঞ্জও আছে। আমরা হয় তো কখনো ঢুকিনি। বোর্ড থেকে হয় তো মার্কেটভ্যালু যে উপরে উঠালে আরও উপরে উঠতে পারে, এই কাজটা হয় তো আমরা করে দেখিনি।’
বিপিএল নিয়ে সাকিবের মন্তব্যের সমর্থন দিয়েছেন ঘরোয়া ক্রিকেটে দেশের অন্যতম সেরা কোচ সালাউদ্দিন। সাকিব তাকে ‘গুরু’ মানেন। সেই অনূর্ধ্ব-১৯ পরবর্তী সময় থেকে প্রয়োজন হলেই সালাউদ্দিনের থেকে পরামর্শ নিয়েছেন তিনি। কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের কোচের দায়িত্বে থাকা সালাউদ্দিন গণমাধ্যমকে বলেন, ‘সাকিব বিপিএল নিয়ে বাস্তবসম্মত কথা বলেছে। একটু চেষ্টা করলে বিপিএলে আয়োজনের ক্ষেত্রে বেশ ভালো রকম উন্নতি করা যেত। সাকিব যা বলেছে ঠিকই বলেছে। যদি বিপিএল উন্নয়নে আমরা এখনই কাজ করা শুরু না করি, তাহলে অনেক পিছিয়ে পড়বো।’
