ঢাকা ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

কুমিল্লাকে উড়িয়ে সিলেটের টানা তিন

কুমিল্লাকে উড়িয়ে সিলেটের টানা তিন

চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স ও ফরচুন বরিশালের পর গতকাল কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স- টানা ৩ ম্যাচে সিলেট স্ট্রাইকার্সের কাছে পাত্তা পেলো না কোনো দলই। বিপিএলে টানা ৩ জয়ে মাশরাফির সিলেট অন্য দলগুলোর চেয়ে খানিকটা এগিয়ে গেল। সোমবার কুমিল্লার দেয়া ১৫০ রানের জবাবে খেলতে নেমে তৌহিদ হৃদয়ের টানা দ্বিতীয় হাফসেঞ্চুরিতে ৫ উইকেট হারিয়েই লক্ষ্যে পৌঁছেছে সিলেট। এই জয়ে তিন ম্যাচে পুরো ৬ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষেও অবস্থান করছে তারা।

মিরপুর স্টেডিয়ামে সিলেট স্ট্রাইকার্সের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে ১৪৯ রানে থামে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লা। জবাবে তরুণ ব্যাটসম্যানদের হাত ধরে ১৪ বল আগেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় মাশরাফির দল। শুরুটা অবশ্য ভালো হয়নি। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে ফিরে যান মোহাম্মদ হারিস (৬)। দ্বিতীয় উইকেটে নাজমুল হোসেন শান্ত ও তৌহিদ হৃদয় মিলে ৪৩ রানের জুটি গড়েন। শান্ত ২১ বলে ১৯ রান করে আউট হলে ক্রিজে নামেন জাকির হাসান। তার ১০ বলে ২০ রানের ক্যামিও ইনিংস অনেকটুকু পথ এগিয়ে যেতে অবদানও রাখে।

আগের ম্যাচের মতো এই ম্যাচেও দায়িত্বশীল ভূমিকাতে দেখা গেছে তৌহিদ হৃদয়কে। বরিশালের বিপক্ষে ৫৫ রানের ইনিংস খেলে ম্যাচ সেরার পুরস্কার পাওয়া তৌহিদ আজও ম্যাচ সেরা ইনিংস খেলেছেন। ৩৭ বলে ৩ চার ও ৪ ছক্কায় ৫৬ রানের ইনিংস খেলে জয়ের পথটা প্রশস্ত করেছেন মূলত তিনি। এরপর মুশফিক ২৫ বলে ২৮ এবং আকবর আলী ৬ বলে ৮ রান করলে সিলেট ১৪ বল আগেই ৫ উইকেট হাতে রেখে জয় নিশ্চিত করেছে। কুমিল্লার বোলারদের কেউই সিলেটের ব্যাটারদের তেমন পরীক্ষায় ফেলতে পারেননি। খুশদিল শাহ ও মোহাম্মদ নবী দুটি করে উইকেট নিয়েছেন। এছাড়া আবু হায়দার নিয়েছেন একটি উইকেট।

এর আগে টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নামলেও কুমিল্লার হয়ে দারুণ শুরুর ইঙ্গিত দিচ্ছিলেন লিটন দাস। প্রত্যাশা করা হচ্ছিল দিনটি নিজের করে নেবেন। কিন্তু দিনের প্রথম ওভারেই থিসারা পেরেরার বলে মোহাম্মদ হারিসকে ক্যাচ দিয়ে লিটন ব্যক্তিগত ৮ রানে ফিরেছেন। সৈকত আলী ও ডেভিড মালানও প্রাথমিক বিপর্যয় সামাল দিতে ব্যর্থ হয়েছেন। সৈকত ১২ বলে ২০ রানে আউট হলে অধিনায়ক ইমরুলও দ্রুত বিদায় নেন (২)। তার পর দলকে টেনে তুলতে জাকির আলীকে সঙ্গে নিয়ে ডেভিড মালান ৫৩ রানের জুটি গড়েছেন। কিন্তু দারুণ ব্যাটিং করা মালান (৩৭) আউট হতেই বড় সংগ্রহের পথটা বন্ধ হয়ে যায় কুমিল্লার। কুমিল্লার সিনিয়র ব্যাটারদের কেউই তার পর প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেননি। জাকির আলীর একার লড়াইয়ে কুমিল্লা কোনওমতে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৪৯ রান সংগ্রহ করতে পেরেছে। জাকির ৪৩ বলে ২ চার ও ৩ ছক্কায় ৫৭ রানের ইনিংস খেলেছেন। সিলেটের বোলারদের মধ্যে মোহাম্মদ আমির ও থিসারা পেরেরা দুটি করে উইকেট নিয়েছেন। মাশরাফি ও ইমাদ ওয়াসিম নেন একটি করে উইকেট।

টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে ১৪৯ রানের সংগ্রহ দাঁড় করায় কুমিল্লা, যার পেছনে মূল কৃতিত্ব জাকের আলীর। ৪৩ বলে ২ চার ও ৩ ছক্কায় ৫৭ রানে অপরাজিত ছিলেন এই ব্যাটসম্যানের। বিপিএলে এটাই তার প্রথম ফিফটি। কিন্তু দিনশেষে ভেস্তে যায় হৃদয়ের অসাধারণ ইনিংসে। হারের পেছনে অবশ্য নিজেকেও দুষছেন জাকের। কেননা স্লগে প্রত্যাশা অনুযায়ী খেলতে পারেননি তিনি। হারের পর সংবাদ সম্মেলনে জাকের বলেন, ‘প্রথম ফিফটি করে তো অবশ্যই ভালো লাগছে তবে জিতলে আরও ভালো লাগত । আসলে আমরা সবাই তো ম্যাচ জেতার জন্য খেলি। আমার মনে হয় ফিফটিটা কাজে লাগত যদি আমরা ম্যাচটা জিততে পারতাম। আবহাওয়া কিছুটা ভালো ছিল। কিন্তু প্রথম ইনিংসে ব্যাট করা সবসময় কঠিন, যেহেতু ওভারকাস্ট কন্ডিশন। তারপরও আমরা চেষ্টা করেছি। দল হিসেবে আমরা ১৫-২০ রান কম করেছি। বিশেষ করে আমিও স্লগে এতোটা রান করতে পারিনি। দুটো ছয় মারলে সহজ হয়ে যেত, যেহেতু সেট ছিলাম।’ বিপিএলের আগে বিসিএলে টানা দুই ম্যাচে সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছেন জাকের। বাংলা টাইগার্সের ক্যাম্পে থাকার পাশাপাশি ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও ভারতের বিপক্ষে ‘এ’ দলের সিরিজেও খেলেছেন তিনি। তাতেই খুঁজে পেয়েছেন রান করার আত্মবিশ্বাস, ‘আত্মবিশ্বাসটা আসলে নিজে থেকেই আসে। আমি দলে আসার পর সবাই আমাকে বুস্ট করতেছে যে, তুই অনেক ফর্মে আছিস। এমনকি প্রস্তুতি ম্যাচেও আমি ভালো খেলেছি। ইমরুল ভাইও বলছিল তুমি ব্যাটিংইয়ে গেলে এমনিতেই রান হবে। তোমাকে দেখলেই বুঝা যাইতেছে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত