ক্রীড়া পুরস্কারের দাবি নিয়ে আলোচনায়

প্রকাশ : ১৭ জানুয়ারি ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  স্পোর্টস রিপোর্টার

২০০৪ সালে দেশে পুনরায় নারী ফুটবল চর্চা শুরু হলেও ছিল না দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা, মহিলা ক্রীড়া সংস্থার চার দেয়ালবন্দি মাঠে হতো আন্তঃজেলা টুর্নামেন্ট। হাতেগোনা কয়েকটি জেলার মেয়েদের বিভিন্ন জেলা দলে ভাগ করে খেলাতেন মহিলা ক্রীড়া সংস্থার নারী নেত্রীরা। একটা সময় উগ্র মৌলবাদীদের তীব্র রোষানলের মধ্যে পড়তে হয়েছিল দেশের নারী ফুটবলকে। সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়ানো মেয়েরা এখন স্বপ্ন দেখছেন বিশ্বকাপ খেলার। সুইনু, মাইনু, তৃষ্ণা, ফারহানা, নুবাই, ইতি, লিমাদের গড়ে দেয়া ভিতে দাঁড়িয়ে সাবিনা, সানজিদা, মারিয়া, মনিকারা এখন দক্ষিণ এশিয়া ছাড়িয়ে দাপটে দেখাতে শুরু করেছেন গোটা এশিয়ার ফুটবলে। পরাশক্তি অস্ট্রেলিয়াকে রুখে দিয়েছে ২-২ গোলে, থাইল্যান্ড জিতেছে ১-০ গোলে, লেবানন, বাহরাইন, ভিয়েতনাম, চীনা তাইপের পর মালয়েশিয়া, হংকংকেও হারিয়েছে। দক্ষিণ এশিয়ার নারী ফুটবলে পরাশক্তি ভারত ও নেপালও এখন বাংলাদেশের নিচে। দেশের নারী ফুটবল পাল্টে যেতে থাকে ২০০৮ সালে কাজী সালাহউদ্দিন প্রথমবার বাফুফে সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার পর। প্রয়াত সিরাজুল ইসলাম বাচ্চুর সাথে মহিলা উইংয়ে জুড়ে দেন মাহফুজা আক্তার কিরনকে, পাল্টে যেতে থাকে নারী ফুটবল। সাংগঠনিক কার্যক্রম দেখেন প্রয়াত বাচ্চু, আর নিজের মেধা-দক্ষতায় পৃষ্ঠপোষকদের নারী ফুটবলে আগ্রহী করেন কিরন। মেয়েদের নিয়মিত মাঠে রাখতে টুর্নামেন্টের সংখ্যা বাড়াতে থাকে মহিলা উইং। ২০০৪ থেকে ২০০৭ পর্যন্ত নারী ফুটবল বন্দী ছিল আন্তঃজেলা টুর্নামেন্টে (২০০৪, ২০০৬, ২০০৭)। ২০০৯ সালে শুরু হয় জাতীয় নারী চ্যাম্পিয়নশিপ, মহানগরী স্কুল ফুটবল, ২০১১ সালে সুপার ফোর, করপোরেট লিগ ও মহানগরী ক্লাব লিগ আয়োজন হয়। নানা জটিলতা কাটিয়ে গত তিন বছর ধরে মেয়েদের ক্লাব লিগ নিয়মিত হচ্ছে। মোটা অংকের পারিশ্রমিক পাচ্ছেন নারী ফুটবলাররা। ২০১০ সালে মেয়েদের প্রথম সাফও আয়োজন হয় বাংলাদেশ; এক যুগের মধ্যে ভারত, নেপালকে হারিয়ে সাফে চ্যাম্পিয়ন লাল-সবুজ মেয়েরা। গত ৮ থেকে ১০ বছর ধরে মেয়েদের বাফুফে ভবনে আবাসিক কাম্পে রাখা হচ্ছে। মূলত মাহফুজা আক্তার কিরনের সাংগঠনিক দক্ষতাতেই মেয়েদের ফুটবলের পাল্টে যাওয়া। ফিফাও দক্ষতার মূল্যায়ন করে দুইবার নির্বাচিত করেছেন নির্বাহী সদস্য। ছিলেন ফিফা প্লেয়ার্স স্ট্যাটাস কমিটির ডেপুটি চেয়ারম্যান। ২০১২ ও ২০১৬ অনূর্ধ্ব-২০ নারী বিশ^কাপের সাংগঠনিক কমিটিতে ছিলেন। ২০১৯ সাল থেকে এএফসির নির্বাহী কমিটির সদস্য, নারী কমিটির চেয়ারপারসন। ছিলেন অলিম্পিক কাউন্সিল অব এশিয়ার অ্যাথলেট মেম্বার। মেয়েদের ক্রীড়া সংগঠক হিসেবে শেখ জামাল পুরস্কারজয়ী মাহফুজা ২০১৭ সালে পেয়েছেন নারী উদ্যোক্তা অ্যাসোসিয়েশনের স্বীকৃতি। সম্প্রতি ক্রীড়াঙ্গনে তাকে জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কার দেয়া নিয়েও আলোচনা শুরু হয়েছে। ক্রীড়াবোদ্ধারা মনে করে দেশের নারী ফুটবলকে বদলে দেয়া ও এগিয়ে নেয়ায় সংগঠক কোটায় মাহফুজাকে জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কার সম্মাননা দেওয়া উচিত।