ঢাকা ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

কেন্দ্রীয় চুক্তিতে ‘৬ মাসের রিভিউ’

কেন্দ্রীয় চুক্তিতে ‘৬ মাসের রিভিউ’

চলতি বছর খেলোয়াড়দের কেন্দ্রীয় চুক্তিতে ‘ছয় মাসের রিভিউ’ ধারা চালু করার পরিকল্পনা করছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। জাতীয় নির্বাচক প্যানেলের সুপারিশে এই প্রক্রিয়ায় কেন্দ্রীয় চুক্তি করার পরিকল্পনা করতে যা"েছ বিসিবি। যেখানে ক্রিকেটারদের সঙ্গে ১২ মাসের চুক্তি করা হবে। ছয় মাস পর সেই চুক্তির রিভিউ করা হবে। ক্রিকেটারদের পারফরম্যান্স বিবেচনা করে এই রিভিউ করা হবে। পারফরম্যান্স বিবেচনায় কেউ চুক্তি থেকে বাদ পড়তেও পারেন। কেউ নতুন করে ঢুকতেও পারেন। বিসিবির পরিচালক ও ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের চেয়ারম্যান জালাল ইউনুস নিশ্চিত করে জানান, ‘আগামী বোর্ড মিটিংয়ে এ প্রস্তাব তোলা হবে। বোর্ড সভায় পাশ হলে নতুন কেন্দ্রীয় চুক্তিতে বাস্তবায়ন করা হবে। আমরা প্রতি ছয় মাস পর কেন্দ্রীয়ভাবে চুক্তিবদ্ধ ক্রিকেটারদের পর্যালোচনা করব। এখন থেকে আমরা চাই ছেলেরা কেন্দ্রীয় চুক্তিকে মূল্যায়ন করুক এবং সেই অনুযায়ী কাজ করুক।’

কেন্দ্রীয় চুক্তি রিভিউ করে ক্রিকেটার বাদ কিংবা যোগ দেওয়া হবে কিনা সেই বিষয়টি জানতে চাইলে জালাল ইউনুস বলেছেন, ‘আমরা এখনও সিদ্ধান্ত নিইনি যে কেউ যদি গড় পড়তার নিচে পারফর্ম করে তবে আমরা চুক্তি বাতিল করব কি না।’ এই রিভিউয়ের উদ্দেশ্য নিয়ে জালাল ইউনুস বলেছেন, ‘কেন্দ্রীয় চুক্তিপ্রাপ্ত ক্রিকেটারদের মধ্যে প্রতিযোগিতামূলক পরিবেশ তৈরি করতে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।’

মার্চে ক্রিকেটারদের চুক্তি প্রকাশ করবে বিসিবি। গত বছর লাল ও সাদা বলে আলাদা করে চুক্তি করেছিল। এবারও ২১ সদস্েযর চুক্তি হবে লাল ও সাদা বলে। জানা গেছে, গত বছরের কেন্দ্রীয় চুক্তি থেকে মোহাম্মদ নাঈম, সাদমান ইসলাম, মাহমুদুল হাসান জয় বাদ পড়বেন। নতুন করে জাকির হাসান, হাসান মাহমুদ চুক্তিতে ঢুকবেন। এদিকে চন্ডিকা হাথুরুসিংহের কাছ থেকে সবুজসংকেত পাওয়ার পরই রাসেল ডমিঙ্গোর ব্যাপারে সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পেরেছে বিসিবি। চুক্তির শর্ত বি"েছদ পর্যায়ে পৌঁছাতেই উভয় পরে সম্মতিতে তিন মাসের নোটিশে চাকরি ছাড়েন ডমিঙ্গো। প্রধান কোচের পদ শূন্য হওয়ার পর থেকেই নতুন কোচ নিয়োগের প্রক্রিয়া এগিয়ে নেয় বোর্ড। হাথুরুসিংহ ও শ্রীধরন শ্রীরামের সঙ্গে যোগাযোগ চালিয়ে গেছে এতদিন। শ্রীরাম ঢাকায় এসে একবার আলোচনাও করে গেছেন নাজমুল হাসান পাপনের সঙ্গে। আগামী মাসে আবার আসার কথা রয়েছে তাঁর। তিনি আসেন কিনা- সেটাই এখন দেখার বিষয়। কারণ, জাতীয় দলের তিন সংস্করণের প্রধান কোচ চূড়ান্ত করে ফেলেছে বিসিবি। হাথুরুসিংহেই কোচ। তিনিই চেয়েছিলেন, তিন সংস্করণের প্রধান কোচের পদ। একইভাবে শ্রীরাম চেয়েছেন, সাদা বলের প্রধান কোচ হতে। এ কারণেই প্রধান কোচ বেছে নিতে এতটা সময় লেগেছে বিসিবির। হাথুরুসিংহেকে নিয়োগ দিতে শ্রীরামকে সহকারী কোচ হওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। যদিও টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সাকিবদের পরামর্শকের অন্তরালে প্রধান কোচের দায়িত্ব পালন করেছিলেন শ্রীরাম। তিনি এখন হাথুরুসিংহের সহকারী হতে চান না। বিসিবির একজন কর্মকর্তাকে সম্প্রতি ফোনে শ্রীরাম আনঅফিসিয়ালি জানিয়েছেন, সহকারী কোচ হতে চান না তিনি। পাপন ও জালাল ইউনুসও বুঝে গেছেন হাথুরুসিংহে বা শ্রীরামের যে কোনো একজনকে বেছে নিতে হবে। তাই পরীতি কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহকেই বেছে নিয়েছেন তাঁরা। প্রধান কোচ চূড়ান্ত হলেও অফিসিয়ালি নাম প্রকাশ করা হয়নি। হাথুরুসিংহের নিয়োগ ওপেন সিক্রেট হলেও আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয়নি বিসিবির পরিচালকদের। তবে জালাল ইউনুস একাধিক টেলিভিশন চ্যানেলকে জানান, ‘আমরা চেষ্টা করছি, ইংল্যান্ড সিরিজের আগেই হেড কোচ নিয়োগ দিতে। কোচের সঙ্গে আলোচনার পর্ব শেষ। একপ্রকার চূড়ান্ত হয়ে আছে। তবে চুক্তি না হওয়া পর্যন্ত নাম প্রকাশ করতে পারছি না। আশা করি, ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে প্রধান কোচের নাম ঘোষণা করতে পারব।’

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ চলাকালে বিসিবি সভাপতি এবং কয়েকজন বোর্ড পরিচালকের সঙ্গে সিডনিতে মিটিং হয় হাথুরুসিংহের। সেখানেই বাংলাদেশের চাকরিতে ফেরার আগ্রহ দেখান অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী এ লঙ্কান। এদিকে ক্রিকেটাররা চা"িছলেন, হাথুরুসিংহের সঙ্গে শ্রীরামও যেন টি-টোয়েন্টি দলের কোচ থাকেন। টি২০ বিশ্বকাপ চলাকালে ভারতীয় এ কোচের সঙ্গে কাজ করে খুশি ক্রিকেটাররা। ক্রিকেটারদের আগ্রহে বিসিবিও চেষ্টা করছে শ্রীরামকে জাতীয় দলের সঙ্গে যুক্ত করতে। ৬ জানুয়ারি বিসিবি কার্যালয়ে কথাবার্তাও বলে গেছেন শ্রীরাম। আইপিএল চলাকালে ছুটি পাওয়ার শর্তও জুড়ে দিয়েছেন তিনি। জালাল ইউনুস জানান, হেড কোচ আসার পর শ্রীরামের সঙ্গে আবারও আলোচনা হবে। তিনি বলেন, 'শ্রীরাম জানাতে এসেছিলেন, সে অ্যাভেল অ্যাভেল। তাঁর আইপিএলেরও একটা ব্যাপার আছে। এগুলো নিয়েই আলাপ-আলোচনা করতে এসেছিলেন। আগামী মাসে আবার আসবেন। আমরা হেড কোচকে নিয়েই তাঁর সঙ্গে কথা বলব। আইপিএলে শ্রীরাম চলে গেলে, কে দায়িত্ব নেবে। সে কখন থেকে কীভাবে কাজ করবে- সেগুলো ঠিক করার বিষয় আছে। এ ছাড়া শ্রীরামের কোচিং রোল ঠিক করার বিষয় থাকবে।’

হাথুরুসিংহে এবং শ্রীরামের সঙ্গে আরও কয়েকজন কোচের নাম জুড়ে দেওয়া হলেও সেগুলো 'ডামি কোচ' বলা যায়। কারণ ২০১৪ থেকে ২০১৭ সাল- এই সময় পর্যন্ত হাথুরুসিংহে প্রধান কোচ হিসেবে খুব পছন্দ ছিল বিসিবি কর্মকর্তাদের। এই কোচের অভিভাবকসুলভ আচরণ বেশি পছন্দ। গতকালও জালাল ইউনুস বলেছেন, উপমহাদেশের ক্রিকেটারদের সেন্টিমেন্ট বোঝেন এমন একজনকেই হেড কোচ করা হ"েছ। সে েেত্র হাথুরুসিংহে বা শ্রীরাম ছাড়া উপমহাদেশের সেন্টিমেন্ট বোঝা ত"তীয় কোনো কোচের নাম নেই তালিকায়। জালাল ইউনুসের মতে, 'বাংলাদেশ দলের জন্য যে কোচ উপযুক্ত হবে, সে ধরনের কোচ আমরা চাই। শ্রীলঙ্কা, পাকিস্তান, ভারত- এই দেশগুলোতে যে ধরনের কোচ হ্যান্ডেল করতে পারে, সে ধরনের কোচ চাই। যাঁদের সঙ্গে বোঝাপড়া ভালো থাকে, যোগাযোগ ভালো হয়, সে ধরনের কোচ।’

হাথুরুসিংহেকে প্রধান কোচ করা হয়ে গেছে। বাকি শুধু আনুষ্ঠানিকতা। প্রশ্ন হ"েছ চন্ডিকার অধীনে সহকারী কোচ হিসেবে শ্রীরাম কাজ করবেন কিনা। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বাংলাদেশ দলের সহকারী কোচ হবেন না এ ভারতীয়। অস্ট্রেলিয়া দলে সহকারী কোচ থাকার পর স্বাভাবিকভাবেই প্রধান কোচ হতে চাইবেন তিনি। স্বল্প সময়ের জন্য হলেও সে স্বাদ তিনি পেয়েছেন বাংলাদেশে। সেখান থেকে অবনমন চাইবেন না নিশ্চয়ই। বিসিবির একজন কর্মকর্তাকে সম্প্রতি ফোনে শ্রীরাম জানিয়েও দিয়েছেন, হাথুরুসিংহের সহকারী কোচ হবে না তিনি।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত