ঢাকা ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

বিসিবির ‘নতুন’ পদে ডেভিড মুর

বিসিবির ‘নতুন’ পদে ডেভিড মুর

বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) হেড অব প্রোগ্রামস হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে ডেভিড মুরকে। দুই বছরের জন্য দেশের ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থার সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন তিনি। গতকাল সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ৫৮ বছর বয়সী মুরকে নতুন সৃষ্ট পদে দায়িত্ব দেওয়ার কথা নিশ্চিত করেছে বিসিবি। আগামী মাস থেকে কাজ শুরু করবেন এই অস্ট্রেলিয়ান। হাইপারফরম্যান্স (এইচপি) দল ও বাংলা টাইগার্সের জন্য পরিকল্পনা ও কৌশল সাজানো এবং সেগুলো বাস্তবায়নের জন্য দায়বদ্ধ থাকবেন মুর। তার কাজের মূল উদ্দেশ্য হলো বাংলাদেশ দল যাতে এইচপি ও টাইগার্স থেকে সরাসরি সুবিধা পায় সেটা নিশ্চিত করা, অর্থাৎ জাতীয় দলের পাইপলাইন শক্তিশালী করার দায়িত্ব থাকবে তার। কোচদের উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন প্রোগ্রামেরও তদারক করবেন তিনি। হেড অব প্রোগ্রামসের দায়িত্ব পেয়ে বাংলাদেশ ক্রিকেটের উন্নয়নে ভূমিকা রাখার সুযোগ মিলেছে মুরের, প্রসঙ্গে ভীষণ উচ্ছ্বাসের সঙ্গে বলেন, ‘বিসিবিতে হেড অব প্রোগ্রামস হিসেবে আমার ভুমিকা শুরু করা নিয়ে খুবই রোমাঞ্চিত। আমি প্রধান কোচ, তার কোচিং-সাপোর্ট স্টাফ ও খেলোয়াড়দের সঙ্গে কাজ করতে এবং তাদের সম্ভাবনার দুয়ার উন্মুক্ত করায় সাহায্য করতে মুখিয়ে আছি।’ অস্ট্রেলিয়ার ঘরোয়া দল নিউসাউথ ওয়েলসের ক্রিকেট পারফরম্যান্সের মহাব্যবস্থাপক ও কোচ ডেভেলপমেন্টের প্রধান হিসেবে কাজ করেছেন মুর। প্রধান কোচ হিসেবেও দায়িত্ব পালনের অভিজ্ঞতা আছে তার। ২০০৭ সালে ইংল্যান্ড সফরে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ভারপ্রাপ্ত প্রধান কোচ ছিলেন তিনি। বারমুডা জাতীয় দলের কোচ হিসেবেও কাজ করেছেন তিনি।

বিসিবি পরিচালক ও টিম ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদের বিশ্বাস, চন্দিকা হাথুরুসিংহে আবার কোচ হয়ে এলে ভালো হবে বাংলাদেশের। পুরোনো অধ্যায়ের নতুন পর্ব শুরুর গুঞ্জন চলছে বাংলাদেশের ক্রিকেটে। জাতীয় দলের কোচ হয়ে আবার এদেশের ক্রিকেটে ফিরতে পারেন চন্দিকা হাথুরুসিংহে। এখনো যদিও নিশ্চিত নয়। তবে বিসিবি পরিচালক ও বাংলাদেশ দলের টিম ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদের মতে, এই দায়িত্বের জন্য হাথুরুসিংহে অনেক দিক থেকেই উপযুক্ত। গত মাসে রাসেল ডমিঙ্গো পদত্যাগ করার পর আপাতত বাংলাদেশ দলের কোনো প্রধান কোচ নেই। সম্ভাব্য নতুন কোচ হিসেবে যারা বিবেচনায় আছেন, সেখানে হাথুরুসিংহের সম্ভাবনাই সবচেয়ে উজ্জ্বল বলে শোনা যাচ্ছে।

২০১৪ সালের জুন থেকে ২০১৭ সালের অক্টোবর পর্যন্ত বাংলাদেশের কোচের দায়িত্বে ছিলেন হাথুরুসিংহে। তার সময়ে অভাবনীয় ও স্মরণীয় কিছু সাফল্য পেয়েছে বাংলাদেশ দল। তবে নানা সময়ে তাকে ঘিরে বিতর্কও ছিল অনেক। সেবার তার দায়িত্বে শেষটা যেভাবে হয়েছিল, বিসিবির জন্য যথেষ্ট বিব্রতকর ছিল তা। চুক্তির মেয়াদ পূরণ না করে এবং শেষ সিরিজে কোচের প্রতিবেদন জমা না দিয়েই তিনি চলে গিয়েছিলেন। বিসিবির কর্তাদের সঙ্গে আলোচনাতেও সেভাবে আন্তরিক ছিলেন না ও সাড়া দেননি বলে জানা গিয়েছিল তখন। পরে শ্রীলঙ্কা জাতীয় দলের দায়িত্ব নিয়েছিলেন তিনি বাংলাদেশের চেয়ে বেশি বড় অঙ্কের পারিশ্রমিকে। যদিও পরে শ্রীলঙ্কাতেও তার শেষটা ভালো হয়নি। ৩ বছরের মেয়াদের অর্ধেকও শেষ হয়নি তার। নানা বিতর্কিত ঘটনার পর তাকে বরখাস্ত করে বোর্ড। আর্থিক বিষয়াদি নিয়ে অবশ্য তার সঙ্গে লঙ্কান বোর্ডের টানাপোড়েন চলতে থাকে আরও অনেক দিন ধরে। তবে হাথুরুসিংহে এখন আগের চেয়ে পরিণত বলে বিশ্বাস খালেদ মাহমুদের।

চলতি বিপিএলে খুলনা টাইগার্সের কোচের দায়িত্বে থাকা এই বোর্ড পরিচালক গণমাধ্যমের চট্টগ্রামে গণমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে বলেছেন, বাংলাদেশের দায়িত্বে ভালো পছন্দ হতে পারেন হাথুরুসিংহে। ‘হাথুরুর ব্যাপারটা এখনো নিশ্চিত বলতে পারব না আসবে কী আসবে না। তবে যদি আসে, অবশ্যই ভালো। হাথুরু এখানে কাজ করে গেছে, ওর কোচিংয়ে বাংলাদেশের অনেক পারফরম্যান্সও ছিল। আমার বিশ্বাস, হাথুরু এখন হয়তো আরও বেশি পরিণত, অবশ্যই আমাদের সেটা কাজে লাগবে। আবার যদি আসে তো ভালো। (আগেরবার) ও এসে বাংলাদেশ ক্রিকেটের অনেক কিছু বদলে দিয়েছিল এবং পারফরম্যান্স তখন আমাদের ভালো হচ্ছিল। দ্বিতীয়বার আসাটা খারাপ হবে না, আমি খারাপভাবে দেখি না। যেহেতু আমাদের উপমহাদেশের মানুষ, আমাদের সম্পর্কে ভালো জানেন, বোঝেন। ওর অভিজ্ঞতা এখন অনেক, সত্যি বলতে গেলে।’

শ্রীলঙ্কার দায়িত্ব শেষে গত প্রায় সাড়ে ৩ বছরে শীর্ষ পর্যায়ে কোচিংয়ের অভিজ্ঞতা নেই হাথুরুসিংহে। ২০২০ সালে অস্ট্রেলিয়ায় নিউ সাউথ ওয়েলসের ব্যাটিং কোচের দায়িত্বে ছিলেন কিছুদিন। এখন তিনি সিডনিতে ক্লাব কোচিং করান। হাথুরুসিংহে কোচ হয়ে এলে কয়টি সংস্করণের দায়িত্বে থাকবেন এবং সেক্ষেত্রে শ্রীধরন শ্রীরামের ভূমিকা কী হবে, এসব নিয়েও নানা আলোচনা চলছে। গত ২৭ ডিসেম্বর বিসিবির ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের প্রধান জালাল ইউনুস বলেছিলেন, টি-টোয়েন্টি দলের টেকনিক্যাল কনসালটেন্টের দায়িত্বে ফিরবেন শ্রীরাম। এখন খালেদ মাহমুদের কথা থেকে হাথুরুসিংহে, শ্রীরামের ভূমিকা নিয়ে ইঙ্গিত পাওয়া গেল না। ‘আসলে বিসিবিতে আমরা চিন্তা করি আমাদের জন্য কোনটা ভালো। বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য কে ভালো হবে। সেটা যদি হাথুরু হয় বা শ্রীরাম, বা যে কেউ হোক না কেন, বা দুইজনই যদি হয়, সেটাও ভালো, তিনজন হলেও ভালো। যেটা দেশের জন্য, দলের জন্য ভালো, সেটা চিন্তা করব। যে আসে, সে যেন দলকে, দেশকে সার্ভিস দিতে পারে। লম্বা সময় যেন কোচিং করাতে পারে, এটাও একটা গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার।’

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত