ঢাকা ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

খুলনার টানা দ্বিতীয় জয়

খুলনার টানা দ্বিতীয় জয়

টানা তিন হারে আসর শুরুর পর টানা দুই জয়ে পয়েন্ট টেবিলে চারে উঠেছে খুলনা টাইগার্স। চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের সংগ্রহ নাগালের মধ্যে রেখে জয়ের মঞ্চ সাজান বোলাররা। রান তাড়ায় তামিম ইকবাল ও মাহমুদুল হাসান জয়ের বড় জুটির ওপর দাঁড়িয়ে ঝড়ো ব্যাটিংয়ে বাকি কাজ সারলেন ইয়াসির আলি। দারুণ জয়ে চট্টগ্রাম পর্ব শেষ করল খুলনা টাইগার্স। গতকাল শুক্রবার চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরি স্টেডিয়ামে স্বাগতিক দলকে ৭ উইকেটে হারিয়েছে খুলনা। ১৫৮ রানের লক্ষ্য ৪ বল আগে ছুঁয়ে ফেলে তারা।

বল হাতে ৪ উইকেট নিয়ে এই সংস্করণে ক্যারিয়ারে ৪০০ উইকেট পূরণ করেন খুলনার পাকিস্তানি পেসার ওয়াহাব রিয়াজ। পরে ব্যাটিংয়ে ৪০ রানের ইনিংস খেলার পথে ৭ হাজারি ক্লাবে পা রাখেন তামিম ইকবাল। তাদের ছাপিয়ে খুলনার জয়ের নায়ক মাহমুদুল হাসান জয়। ২০ ওভারের ক্রিকেটে চতুর্থ ফিফটিতে ৪৪ বলে ৫৯ রানের ইনিংস খেলেন তিনি। ৫ চার ও ১ ছক্কায় সাজানো ইনিংসে তার হাতেই ওঠে ম্যাচ সেরার পুরস্কার। শেষ দিকে ২ চার ও ৪ ছক্কায় ১৭ বলে ৩৬ রান করে দলের জয় নিশ্চিত করেন অধিনায়ক ইয়াসির। টানা তিন পরাজয়ে আসর শুরু করা খুলনা জিতল পরপর দুই ম্যাচ। ৪ পয়েন্ট নিয়ে তালিকার চারে উঠে এসেছে তারা। ৬ ম্যাচে চট্টগ্রামের চতুর্থ হার এটি। টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে দ্বিতীয় ওভারেই ড্রেসিংরুমের পথ ধরেন ম্যাক্স ও’ডাউড। মোহাম্মদ সাইফ উদ্দিনের বল মিড অনে তামিম ইকবালের হাত সহজ ক্যাচ দেন ডাচ ওপেনার।

দ্বিতীয় উইকেটে শুরুর ধাক্কা সামাল দেন উসমান খান ও আফিফ হোসেন। মারমুখী ব্যাটিংয়ে ৭.১ ওভারে ৭০ রান যোগ করেন তারা। দশম ওভারে আমাদ বাটের খাটো লেংথের ডেলিভারি পুল করে উসমান ডিপ মিড উইকেটে ধরা পড়লে ভাঙে জুটি। ৭ চার ও ১ ছক্কায় ৩১ বলে তিনি করেন ৪৫ রান। উইকেটে গিয়ে প্রথম বলেই চার মারেন দারভিশ রাসুলি। কিন্তু এরপর যেন বড় শট হাঁকাতেই ভুলে যায় তারা, পরের বাউন্ডারি আসে ১৫তম ওভারের পঞ্চম বলে। ষোড়শ ওভারে আক্রমণে ফিরে আফিফকে আউট করেন ওয়াহাব। ওয়ানডে ঘরানার ব্যাটিংয়ে ৩১ বলে ৩৫ রান করেন বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। একই ওভারে সাজঘরে ফেরেন স্বীকৃত ক্রিকেটে অভিষিক্ত খাওয়াজা নাফে। ইনিংসের শেষ ওভারেও জোড়া উইকেট নেন ওয়াহাব। ফরহাদ রেজার ৯ বলে অপরাজিত ২১ রানের ক্যামিওতে দেড়শ ছাড়ায় চট্টগ্রামের সংগ্রহ। ৪ ওভারে ৩৬ রান খরচায় ৪ উইকেট নেন পাকিস্তানি পেসার। পরপর দুই ম্যাচে ৪ উইকেটসহ ১১ উইকেট নিয়ে তিনিই এখন আসরের সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি। রান তাড়ায় খুলনার শুরুটাও ভালো ছিল না। ইনিংসের দ্বিতীয় বলে শুভাগতর হাতে ফিরতি ক্যাচ দিয়ে ফেরেন মুনিম শাহরিয়ার। এরপর ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নেন তামিম ও মাহমুদুল। আগের ম্যাচে ৮৯ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়া এই দুই ব্যাটসম্যান এবার খেলেন ১০৪ রানের জুটি। একপ্রান্তে রয়েসয়ে খেলেন তামিম। চতুর্থ ওভারে ফরহাদ রেজার বলে বাউন্ডারি মেরে টি-টোয়েন্টি সংস্করণে ৭ হাজার পূরণ করেন অভিজ্ঞ এই ব্যাটসম্যান। মাহমুদুল সাবলীল ব্যাটিংয়ে বাড়তে দেননি বলের সঙ্গে রানের ব্যবধান। টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের চতুর্থ ফিফটি করতে ৩৫ বল খেলেন তিনি। ৪টি চার ও ১টি ছক্কা মারেন তিনি। ত্রয়োদশ ওভারে প্রথমবার আক্রমণে এসেই জুটি ভাঙেন নিহাদউজ্জামান। বড় শট খেলতে গিয়ে ডিপ মিড উইকেটে ধরা পড়েন তামিম। ডান দিকে ঝাঁপিয়ে দারুণ ক্যাচ নেন আফিফ। নিহাদউজ্জামানের পরের ওভারে কাট করতে গিয়ে বোল্ড হন মাহমুদুল। আরেক বাঁহাতি স্পিনার তাইজুল ইসলাম ষোড়শ ওভারে হিসেবি বোলিংয়ে দেন স্রেফ ১ রান। শেষ ৪ ওভারে খুলনার প্রয়োজন দাঁড়ায় ৪৪ রান। তবে দলকে দুর্ভাবনায় পড়তে দেননি ইয়াসির ও আজম খান। নিহাদউজ্জামানের করা ১৭তম ওভারে জোড়া বাউন্ডারি মারেন আজম। পরের ওভারে ফরহাদ রেজার বলে দুই ছক্কা ও এক চারে ১৯ রান তোলেন ইয়াসির। শেষ ওভারে নিহাদউজ্জামানকে লং অফ দিয়ে ছক্কা মেরে জয় তুলে নেন অধিনায়ক ইয়াসির।

সংক্ষিপ্ত স্কোর

চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স : ২০ ওভারে ১৫৭/৯ (উসমান ৪৫, ও’ডাউড ৬, আফিফ ৩৫, রাসুলি ২৫, নাফে ৫, জিয়াউর ১১, শুভাগত ১, ফরহাদ ২১*, মেহেদি ০, নিহাদউজ্জামান ০, তাইজুল ০*; নাসুম ২-০-১০-০, সাইফ উদ্দিন ৪-০-৪০-২, নাহিদুল ২-০-১৯-০, মিকেরেন ৪-০-২৪-০, ওয়াহাব ৪-০-৩৬-৪, আমাদ ৪-০-২৬-১)

খুলনা টাইগার্স : ১৯.২ ওভারে ১৫৯/৩ (মুনিম ০, তামিম ৪৪, মাহমুদুল ৫৯, আজম ১৫*, ইয়াসির ৩৬*; শুভাগত ৩-০-১৭-১, মেহেদি ৩-০-২৬-০, ফরহাদ ৩-০-৩৬-০, তাইজুল ৪-০-১৬-০, জিয়াউর ২-০-১৮-০, আফিফ ১-০-১৩-০, নিহাদউজ্জামান ৩.২-০-৩২-২)

ফল : খুলনা টাইগার্স ৭ উইকেটে জয়ী

ম্যান অব দ্য ম্যাচ : মাহমুদুল হাসান জয়

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত