সিলেটেই চূড়ান্ত হবে শেষ চারের দল

প্রকাশ : ২৭ জানুয়ারি ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  স্পোর্টস রিপোর্টার

ঢাকা-চট্টগ্রাম-ঢাকার পর বিপিএল এখন সিলেটে। সময় যতো গড়াচ্ছে ততই বাড়ছে উত্তেজনা। দৃশ্যমান হতে শুরু করেছে শেষ চারের লড়াই। কোন চার দল শেষ চারে যাবে, তা সিলেট পর্ব শেষে অনেকটা ধারণা পাওয়া যাবে। এমন কি কোনো কোনো দল নিশ্চিতও করে ফেলবে তাদের যাওয়াটা। শেষ চারে যাওয়ার লড়াইয়ে এগিয়ে আছে সিলেট স্ট্রাইকার্স। ৭ ম্যাচে তাদের পয়েন্ট ১২। সিলেটে খেলবে আর ৩টি ম্যাচ। এর মধ্যে একটি ম্যাচ জিতলে তাদের দরজা খুলে যাবে অনেকটা। দুইটা জিতলে নিশ্চিত হবে শেষ চার। সিলেটের পরই আছে ফরচুন বরিশাল। ঢাকায় আসরের সবচেয়ে টানটান উত্তেজনাকর লড়াই উপহার দিয়েছে সিলেটের বিপক্ষে বরিশাল। ৭ ম্যাচে ১০ পয়েন্ট নিয়ে তারা পয়েন্ট টেবিলের দুইয়ে থেকে আসর শুরু করবে। সিলেটে তারা ম্যাচ খেলবে ২টি। ২টি ম্যাচই জিততে পারলে বরিশালেরও শেষ চার অনেকটা নিশ্চিত হয়ে যাবে। ১টি জিতলে তারা অনেকদূর এগিয়ে যাবে।

৭ ম্যাচে ৮ পয়েন্ট নিয়ে তিনে আছে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানস। তারা সিলেটে খেলবে ২টি ম্যাচ। ২টি জয় তাদের শেষ চারে যাওয়ার সম্ভাবনার দুয়ার অনেকটা সহজ করে দেবে। ১টি জিতলে তৃতীয় দল হিসেবে লড়াইয়ে থাকবে। ২টিতে হেরে গেলে তারা পড়ে যাবে বিপাকে। রংপুর রাইডার্সের পয়েন্ট ৬ ম্যাচে ৬। সিলেটে তাদের ম্যাচ ২টি। সবচেয় কম ম্যাচ খেলেছে তারাই। তাদের সমান ম্যাচ খেলেছে খুলনা টাইগার্সও। কিন্তু খুলনার পয়েন্ট ৪। কিছুটা সুবিধাজনক অবস্থানে আছে রংপুর। ২টি ম্যাচ জিততে পারলে ১০ পয়েন্ট নিয়ে তারা শেষ চারের জন্য নিজেদের অবস্থানকে বেশ পোক্ত কেরে ফেলবে। ১টিতে জিতে, অপরটিতে হারলেও তাদের অবস্থান দুর্বল হবে না। কিন্তু খুলনা সিলেটে খেলবে ৩টি ম্যাচ। তাদের জন্য ৩টি ম্যাচ জেতাই জরুরি। কারণ পয়েন্ট টেবিলের অবস্থান বিবেচনায় শেষ চারের লড়াইয়ে শেষ স্থানের জন্যই তাদের লড়তে হতে পারে। সিলেটে ৩টি ম্যাচই জয়, তাদের অবস্থানকে পোক্ত করে তুলবে। চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের পয়েন্টও ৪। কিন্তু তাদের ম্যাচ খেলার সংখ্যা ৭। বাকি আছে ৫ ম্যাচ। সবকটি ম্যাচ জিততে পারলে তাদের পয়েন্ট হবে ১৪। কিন্তু তা হবে কঠিন। আপাতত লক্ষ্য সিলেটের ২টি ম্যাচ জেতা। পয়েন্ট টেবিলে সবচেয়ে বাজে অবস্থানে আছে ঢাকা ডমিনেটরস। ৮ ম্যাচ খেলে তাদের পয়েন্ট মাত্র ৪। ঢাকায় শেষ ম্যাচে খুলনার বিপক্ষে হারতে হারতে পরে ম্যাচ জিতে কোনো রকমে টিকে আছে শেষ চারের লড়াইয়ে। আইসিইউতে ঢুকে গেছে তারা। শেষ চারে যাওয়ার জন্য শ্বাস নিচ্ছে অক্সিজেন দিয়ে। বাকি ৪ ম্যাচ জিততেই হবে। তারপরও নিশ্চিত হবে না নাসির হোসেনের দলের।

বিপিএলে হোম অ্যান্ড অ্যাওয়ে খেলার সুযোগ এখনো হয়নি। তারপরও এই সুযোগ পেয়ে থাকে তিনটি দল ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেট। বিভিন্ন সময় ফ্রাঞ্চাইজির পরিবর্তন ঘটলেও স্বাগতিক হওয়ার সুবিধা থেকেই যায়। এবারের বিপিএলে তৃতীয় স্বাগতিক হিসেবে আজ শুক্রবার থেকে খেলা শুরু হবে সিলেটে। এর আগে ঢাকা ও চট্টগ্রামে খেলা হয়েছে। কিন্তু ঢাকা ও চট্টগ্রাম পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে থেকে খেলা শুরু করতে পারনি। যা পারছে সিলেট। শুধু তাই নয়। সিলেট স্ট্রাইকার্সের ক্রিকেটাররা সিলেটে পৌছার পর তাদেরকে নিয়ে রোড শো করা হয়েছে। যা অন্য স্বাগতিকদের ক্ষেত্রে দেখা যায়নি।

বিপিএলের যাত্রা শুরু হয়েছিল ঢাকা থেকে। সিলেট স্ট্রাইকার্স ও রংপুর রাইডর্সের মতো ঢাকা ডমিনেটরসও জয় দিয়ে যাত্রা শুরু করেছিল। কিন্তু এই যাত্রা ছিল ক্ষনস্থায়ী। দ্বিতীয় ম্যাচেই তারা হার মেনেছিল সিলেট স্ট্রাইকর্সের কাছে ৬২ রানের বিশাল ব্যাবধানে। ঢাকার পর বিপিএল চলে যায় চট্টগ্রামে। নিজেদের মাটিতে তারা খেলা শুরু করেছিল ২ ম্যাচে ১টি জয় নিয়ে। সবার উপরে ছিল সিলেট। স্বাগতিক হিসেবে চট্টগ্রাম ম্যাচ খেলেছিল ৪টি। জয় পেয়েছিল মাত্র ১টিতে। চট্টগ্রামের পর বিপিএল চলে আসে আবার ঢাকাতে। চট্টগ্রাম যাওয়ার সময় ঢাকার অবস্থা ছিল বেশ ভালো। ২ ম্যাচে ১ জয়। কিন্তু আবার যখন ঢাকাতে আসে, অবস্থা তখন বেশ নাজুক। চট্টগ্রামে তাার ৪ ম্যাচের সব কটিতেই হেরেছিল। ৬ ম্যাচের মাত্র ১ জয়ে তারা পয়েন্ট টেবিলের তলানিতে। ঢাকায় ফিরে এসেও তারা প্রথম ম্যাচে আবার হেরে যায়। পরে দ্বিতীয় ম্যাচে জয় খুলনাকে ২৪ রানে হারিয়ে। এই খুলনাকেই তারা আসরে নিজেদের প্রথম ম্যাচে ৬ উইকেটে হারিয়েছিল। মাঝে হরেছে টানা ৫ ম্যাচে। পয়েন্ট টেবিলে তাদের অবস্থান এখন সাত থেকে উন্নতি ঘটে হয়েছে ছয়। ঢাকা-চট্টগ্রাম-ঢাকা তিন দফাই খেলাতে সিলেট স্ট্রাইকার্স নিজেদের শীর্ষ স্থান শুরু থেকেই ধরে রেখেছে। যে কারণে এবারের আসরে তারা একামাত্র দল হিসেবে শীর্ষে থেকে স্বাগতিক হিসেবে মাঠে নামতে যাচ্ছে। আজ প্রথম ম্যাচে তাদের প্রতিপক্ষ রংপুর রাইডার্স। সাত ম্যাচে সিলেটের জয় ৬টি। পয়েন্ট ১২। তারা হেরেছে একমাত্র কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানসের কাছে ৫ উইকেটে। এই কুমিল্লাকেই আবার তারি হারিয়েছিল ৫ উইকেটে। বাকি ৫ ম্যাচের মাঝে বরিশাল ও ঢাকাকে হারিয়েছে ২ বার করে। বরিশালকে ৬ উইকেটে ও ২ রানে এবং ঢাকা ডমিনেটরসকে ৬২ রানে ও ৫ উইকেটে। এ ছাড়া চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সকে হারিয়েছিল ৮ উইকেটে। সিলেটে ৪ দিনে স্বাগতিকরা খেলবে ৩টি ম্যাচ। দেখার বিষয় সিলেট ছাড়ার সময় স্বাগতিকরা নিজেদের শীর্ষ ধরে রাখতে পারে কি না? সিলেটের উপর গরম নিঃশ্বাস ফেলছে বরিশাল। সাত ম্যাচে তাদের পয়েন্ট ১০। এ ছাড়া কুমিল্লার পয়েন্ট ৭ ম্যাচে ৮।