ঢাকা ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

ফিরছে কোটি টাকার সুপার কাপ

ফিরছে কোটি টাকার সুপার কাপ

কাজী সালাহউদ্দিন ২০০৮ সালে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার পর কোটি টাকা প্রাইজমানির সুপার কাপ আয়োজনের ঘোষণা দিয়ে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন; বলা হয়েছিল স্ট্যানবাজি। পরের বছর কোটি টাকা প্রাইজমানির ঘরোয়া টুর্নামেন্ট আয়োজন করে সমালোচনার জবাব দেন কাজী সালাহউদ্দিন। পরবর্তীতে ২০১১ ও ২০১৩ সালেও আয়োজন হয় আলোচিত টুর্নামেন্ট। কিন্তু পরে অনেকবার গুঞ্জন শোনা গেলেও আলোচিত সুপার কাপ আলোর মুখ দেখেনি। দীর্ঘ ৯ বছর পর আবার মাঠে গড়াতে যাচ্ছে সেই কোটি টাকা প্রাইজমানির সুপার কাপ। চলতি মাসেই শুরু হবে বাছাই পর্ব, চূড়ান্ত পর্ব হবে এপ্রিলে- মোটামুটি এই দিনক্ষণ ঠিক করে রেখেছে (বাফুফে)। দিন দুয়েকের মধ্যে পৃষ্ঠপোষক প্রতিষ্ঠানের সবুজ সংকেত পেলে চূড়ান্ত ঘোষণা দেয়া হবে।

জাতীয় দলের সাবেক কোচ জেমি ডের পাওনা পরিশোধের ইস্যু নিয়ে বাফুফে ভবনে গতকাল গণমাধ্যমকর্মীরা ভিড় করে মূলত দেশের ফুটবলের নিয়ন্তা সংস্থাটির অবস্থান জানতে। তবে এ বিষয়ে কথা বলতে নারাজ বাফুফে সাধারণ সম্পাদক আবু নাইম সোহাগ, বরং কথা বলেন, কোটি টাকার সুপার কাপ নিয়ে, যে আসরটি ২০১৩ সাল থেকে আছে হিমাগারে। চলতি বছর সুপার কাপ আয়োজনের আশ্বাস আগেই দিয়েছেন বাফুফে সভাপতি কাজী সালাহউদ্দিন; তা এখন আলোর মুখ দেখার পথে। বাফুফে সাধারণ সম্পাদকও জানালেন মোটামুটি একটি কাঠামো দাঁড় করিয়ে ফেলার কথা, ‘ছয় দল নিয়ে সুপার কাপ হবে এপ্রিলে। ২ এপ্রিল শুরু হয়ে শেষ হবে ১৩ তারিখে-এটা চূড়ান্ত পর্ব। তিনটি করে দল দুই গ্রুপে খেলবে, প্রতি গ্রুপ থেকে সেরা দুটি করে দল সেমি-ফাইনাল খেলবে, এরপর ফাইনাল। এই ছয়টি দল নির্বাচনের জন্য আমাদের বাছাই প্রক্রিয়া আছে। গত মৌসুমের লিগ টেবিলের শীর্ষ চার দল সরাসরি চুড়ান্ত পর্বে খেলবে। ১৪ ও ২৮ ফেব্রুয়ারি গত বছরের লিগ টেবিলের বাকি ৭টি দলের মধ্যে বাছাই পর্ব হবে, সেখান থেকে ২টি দল খেলবে মূল পর্বে। টুর্নামেন্ট নিয়ে পৃষ্ঠপোষক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আজও আলোচনা হয়েছে। আশা করি, আগামী দু’দিনের মধ্যে স্পন্সরশিপের বিষয়টি চূড়ান্ত করতে পারব। ১৪ ফেব্রুয়ারি খুব সম্ভবত ৩টি ম্যাচ থাকবে, এখান থেকে জয়ী তিন দল ও বাকি এক দলসহ মোট ৪ দল নিয়ে ২৮ ফেব্রুয়ারি বাছাইয়ের দ্বিতীয় পর্ব অনুষ্ঠিত হবে।’

২০১১ সালের সুপার কাপ জেতা আবাহনী গত লিগ টেবিলে সেরা চারে থাকায় সরাসরি মূল পর্বে খেলবে। তাদের মতো বসুন্ধরা কিংস ও শেখ জামাল ধানমণ্ডি ক্লাবও সুযোগ পাবে সরাসরি খেলার। গত লিগে তৃতীয় হওয়া সাইফ স্পোর্টিং সিনিয়র দলের কর্মকাণ্ড বন্ধ করে দেওয়ায় পঞ্চম স্থানে থাকা মোহামেডান স্পোর্টিংকে বাছাই পেরুতে হবে না বলে জানালেন সোহাগ। সুপার কাপের তিন আসরে দুইবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব; ২০০৯ ও ২০১৩ সালে। ভেন্যুর বিষয়টিও এখনো চূড়ান্ত করতে পারেনি বাফুফে। বরাবরের মতোই বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে আয়োজনের ভাবনা ছিল, কিন্তু সংস্কার কাজ চলায় তা হচ্ছে না। ফলে প্রিমিয়ার লিগ, ফেডারেশন কাপ ও স্বাধীনতা কাপের মতো সুপার কাপও হবে ঢাকার বাইরে, তবে এক ভেন্যুতে। ভেন্যু প্রসঙ্গে বাফুফে সাধারণ সম্পাদক জানান, ‘ভেন্যু নিয়ে বাফুফে কাজ করছে। আশা করছি, পেশাদার লিগ কমিটির মিটিংয়ে খুব শিঘ্রই সুপার কাপের ভেন্যু চূড়ান্ত হবে। যদিও বছরের শুরুতে কমিটির একটা ফিডব্যাক ছিল, সুপার কাপ ঢাকায় বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে করতে পারি কিনা। কিন্তু অবস্থাদৃষ্টে বোঝা যাচ্ছে বঙ্গবন্ধুতে সুপার কাপ হওয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। বাছাই পর্ব হয়তো প্রিমিয়ার লিগের ভেন্যুগুলোতে করতে পারব, কিন্তু মূল পর্ব হবে সেন্ট্রালাইজড ভেন্যুতে, ধরে নেয়া যায় ঢাকার বাইরে। সে সময় লিগ ও অন্যান্য খেলা বন্ধ থাকবে।’

প্রথম তিন আসরে চ্যাম্পিয়ন দল প্রাইজমানি পেয়েছিল ১ কোটি টাকা; রানার্সআপরা ৫০ লাখ এবং তৃতীয় ও চতুর্থ দল পেয়েছিল ২৫ লাখ টাকা। এবারের প্রাইজমানি ও দলগুলোর অংশগ্রহণ ফি বাড়তে পারে বলেও ইঙ্গিত দিয়েছেন সোহাগ, ‘এটা নিয়ে বোর্ড মিটিংয়েও আলোচনা হয়েছে। ফেডারেশনের পক্ষ থেকে বলেছি, প্রাইজমানি ও পার্টিসিপেশন ফি যেন আরও বেশি আশাব্যাঞ্জক হয়, এবং বাফুফের পক্ষ থেকে যেন টুর্নামেন্ট আরও বর্ণিল করা হয়, এগুলো নিয়ে পৃষ্ঠপোষক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে নিবিড়ভাবে কাজ করব।’

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত