ঢাকা ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

তিন দিনেই ইনিংস ব্যবধানে হার!

নাগপুর টেস্টে তৃতীয় দিনে ৯১ রানে অলআউট অস্ট্রেলিয়া
তিন দিনেই ইনিংস ব্যবধানে হার!

রবীন্দ্র জাদেজা-আকসার প্যাটেল জুটি বেঁধে ব্যাট করলেন ৩৫ ওভারের বেশি। দ্বিতীয় ইনিংসে পুরো অস্ট্রেলিয়া দল মিলে টিকতে পারল স্রেফ ৩২.২ ওভার। নাগপুর টেস্টের ছবিটা এতেই পরিষ্কার। ভারতের বড় লিডের পর রবীচন্দ্রন অশ্বিনের অফ স্পিনে চোখে সর্ষে ফুল দেখেছেন ডেভিড ওয়ার্নাররা। তাতে নাগপুর টেস্টের তিন দিন না যেতেই অস্ট্রেলিয়াকে উড়িয়ে ইনিংস ব্যবধানে জয় নিশ্চিত করেছে রোহিত শর্মার দল! প্রথম ইনিংসে অসিরা ১৭৭ রানে অলআউট হয়। জবাবে ভারত করে ৪০০ রান। ২২৩ রানের লিড মাথায় নিয়ে খেলতে নেমে মাত্র ৯১ রানে অলআউট হয় অস্ট্রেলিয়া। ইনিংস ও ১৩২ রানের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে ভারত। বোর্ডার-গাভাস্কার ট্রফিতে স্বপ্নের মতো শুরু হয়েছে ভারতের। চার ম্যাচের সিরিজে ভারত এগিয়ে গেল ১-০ ব্যবধানে। গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন ৫ মাস পর ফেরা রবীন্দ্র জাদেজা। ব্যাটে-বলে সমানতালে পারফর্ম করে জয় এনে দিয়েছেন দেশকে, প্রথম ইনিংসে ৫ উইকেটের পাশাপাশি ব্যাট হাতে ৭০ রান ও দ্বিতীয় ইনিংসে ২ উইকেট নিয়ে হয়েছেন ম্যাচসেরা।

প্রথম ইনিংসে অহিদের ১৭৭ রানের জবাবে ৪০০ রান করেছিল ভারত। ২২৩ রানে পিছিয়ে খেলতে নেমে সফরকারীদের দ্বিতীয় ইনিংস শেষ হয়ে যায় মাত্র ৯১ রানে, তিন দিনেই শেষ হয়ে যায় খেলা। অসিদের বিধ্বস্ত করতে ১২ ওভার বল করে ৩৭ রান দিয়ে ৫ উইকেট নেন অশ্বিন।

৭ উইকেটে ৩২১ রান নিয়ে তৃতীয় দিন শুরু করে জুটিটা আর লম্বা হয়নি জাদেজা-আকসারের। চোয়ালবদ্ধ দৃঢ়তায় ইনিংস চালিয়ে নেয়া জাদেজাকে শিকার ধরেন অভিষেকে আলো ছড়ানো টড মার্ফি। তার অফ স্টাম্পের সামান্য বাইরে পড়া বলের লাইন বুঝতে না পেরে ছেড়ে দিয়েছিলেন জাদেজা। বল ভেতরে ঢুকে ভেঙে দেয় তার স্টাম্প। জাদেজার বিদায়ের পর দ্রুত ইনিংস মুড়ে যেতে পারত, তা হতে দেননি আকসার। মোহাম্মদ শামিকে নিয়ে আরেকটি কার্যকর জুটি পান তিনি। দুই অঙ্কে যাওয়ার আগে ক্যাচ দিয়ে জীবন পাওয়া শামি খেলতে থাকেন আগ্রাসী মেজাজে। ৮৬ বলে নবম উইকেট জুটিতে আরও ৫২ রান যোগ করে নেয় ভারত। শামির বিদায়ের পর মোহাম্মদ সিরাজকে এক পাশে রেখেও ছুটছিলেন আকসার। প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরিরও আভাস দিচ্ছিলেন তিনি। ৮৪ রানে এই বাঁ-হাতিকে বোল্ড করে ফেরান প্যাট কামিন্স।

২২৩ রানে পিছিয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে নেমে একদমই নিবেদন দেখাতে পারেননি অসি ব্যাটাররা। স্পিনের জন্য ভীষণ সহায়ক নাগপুরের বাইশগজ কঠিন ধাঁধার মতো লেগেছে তাদের। বল ঘুরেছে, বাড়তি বাউন্স তৈরি করেছে অস্বস্তি। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভার থেকেই অশ্বিনের ঘূর্ণিতে নাজেহাল অবস্থা হয় তাদের।

উসমান খাওয়াজাকে বিরাট কোহলির ক্যাচ বানিয়ে অশ্বিনের উইকেট শিকার শুরু, উইকেট পড়েছে খানিক পর পরই। মারনাশ লাবুশানে টিকে থাকার চেষ্টায় ব্যর্থ হন জাদেজার বলে। ডেভিড ওয়ার্নারকে ছাঁটেন অশ্বিন। ম্যাট রেনশো টিকতে পারেন মোটে ৭ বল। অশ্বিনের বল পড়তে না পেরে তিনিও বিদায় এলবিডব্লিউতে। আলেক্স কেয়ারি ক্রিজে নেমেই মেরে খেলার চেষ্টায় ছিলেন। ৬ বলে ২ চার মেরে ইতি তারও। এই বাঁ হাতিও অশ্বিনের অফ স্পিনে দেখেছেন অন্ধকার। পিটার হ্যান্ডসকবও দেখাতে পারেননি দৃঢ়তা। অধিনায়ক কামিন্স জাদেজার বলে ক্রিস ছেড়ে বেরিয়ে নেন বিদায় নিলে ল-ভ- হয়ে যায় অজি ইনিংস। পরে আকসার আর শামি মিলে পরে দ্রুতই মুড়ে দেন ইনিংস। দলের বাকিদের ব্যর্থতা অবশ্য চেয়ে চেয়ে দেখেছেন স্মিথ। অস্ট্রেলিয়ার সবচেয়ে অভিজ্ঞ ব্যাটার ৫১ বলে ২৫ রান করে অপরাজিত ছিলেন এক প্রান্তে।

এই টেস্টে ভারতের বড় জয়ে অবদান কয়েকজনের। প্রথম ইনিংসে অজিদের ২০০ নিচে গুটিয়ে দিতে ৫ উইকেট নিয়েছিলেন জাদেজা, তাকে সঙ্গত করে ৩ উইকেট তুলেছিলেন অশ্বিন। ব্যাট হাতে অধিনায়ক রোহিতের সেঞ্চুরির পর নিবেদন দেখান জাদেজা আর আকসার। দ্বিতীয় ইনিংসে বল হাতে সব আলো কেড়ে নেন অশ্বিন। তার পাঁচ শিকারের সঙ্গে জাদেজাও নিয়েছেন ২ উইকেট। অলরাউন্ড নৈপুণ্যের কারণে কিছুটা এগিয়ে থেকে ম্যাচসেরা হয়েছেন জাদেজা।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত