ঢাকা ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

দ্বন্দ্ব অস্বীকার করেননি তামিম

দ্বন্দ্ব অস্বীকার করেননি তামিম

বেশ অনেক দিন ধরেই সাকিব আল হাসান ও তামিম ইকবালের মধ্যে চলছে সম্পর্কের টানাপড়েন। বিষয়টি এতদিন ‘ওপেন সিক্রেট’ হয়ে থাকলেও এখন অফিসিয়াল করে দিয়েছেন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। ক্রিকেট ওয়েবসাইট ক্রিকবাজকে দেয়া তার সাক্ষাৎকারের পর গত দুই দিন ধরে বিষয়টি উত্তাপ ছড়াচ্ছে দেশের ক্রিকেটে। ওয়ানডে অধিনায়ক তামিমও জানতেন সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে আসবে বিভিন্ন প্রশ্ন। হোমওয়ার্ক করেই তাই সেসব সামলাতে এসেছিলেন ওয়ানডে অধিনায়ক।

সাকিব-তামিম দ্বন্দ্ব

ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের পূর্বে সংবাদ সম্মেলনে গতকাল তামিমকে প্রথম প্রশ্নই হলো সাকিবের সঙ্গে তার সম্পর্ক নিয়ে। পরে ঘুরেফিরে সেই প্রসঙ্গ এলো বারবার। পেশাদার জায়গায় সব কিছু ঠিক থাকলেও নিজেদের মধ্যে দ্বন্দ্ব থাকার কথা একবারও অস্বীকার করেননি তামিম। এমনকি এই তেতো সম্পর্ক একদিন ঠিক যাওয়া যাওয়ার সম্ভাবনাও দেখেন তিনি। নিজেদের মধ্যে সম্পর্কটা আসলে কোনো জায়গায় এ নিয়ে শুধু মাঠের পেশাদার সময়টুকুর কথা বলেন তামিম, ‘আমার কাছে সবচেয় গুরুত্বপূর্ণ জিনিস হলো আমি, সাকিব যখন বাংলাদেশ দলের জার্সি পরি, মাঠে যখন নামি সেরাটা দেই, সে তার সেরাটা দেয়। আমি যখন অধিনায়কত্ব করি তখন যেকোনো পরামর্শ চাই। সে আমাকে পরামর্শ দেয়। আবার সে যখন অধিনায়কত্ব করে তখন তার কোনো পরামর্শের প্রয়োজন হলে আমি সেটার জন্য প্রস্তুত থাকি। এর বাইরে কিছু নেই। আমি একটা সংস্করণের অধিনায়ক, যখনই সহায়তার প্রয়োজন হয় সে করে। আমি এটা নিশ্চিত করছি সে যখন অধিনায়কত্ব করে, এবং আমি টেস্ট খেলি কোনো পরামর্শের প্রয়োজন হলে আমি সবসময় আছি। এটাই গুরুত্বপূর্ণ জিনিস। এর বাইরে কিছু নেই।’ দুজনের মধ্যে বিবাদ মেটানোর চেষ্টা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। আলোচনায় বসে শেষ পর্যন্ত তা আর শেষ করা যায়নি। এসব সমঝোতা বৈঠকে কি হয়েছে তা বিস্তারিত বলতে চাইলেন না তামিম, ‘যা হয়েছে, দুজন ব্যক্তির মধ্যে হয়েছে। তারা দলের গুরুত্বপূর্ণ দুজন। এটা ওই রুমেই আটকে থাকা দরকার, এটা নিয়ে মন্তব্য করতে চাই না।’

দলের ভেতর গ্রুপিং

বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনের এই মুহূর্তে সবচেয়ে উদ্বেগের বিষয়,খেলোয়াড়দের মধ্যে দলাদলি। তবে বোর্ড প্রধানের সঙ্গে এক্ষেত্রে ভিন্ন জায়গায় ওয়ানডে অধিনায়ক তামিম। গ্রুপিং নিয়ে সমস্যা দূরে থাক, দলে এসবের কোন ছায়া দেখেন না তিনি। বিসিবি সুত্রে জানা যায়, সাকিব-তামিমের মধ্যে বিরোধের জেরে তৈরি হয়েছে এসব গ্রুপ বা বলয়। দুই শীর্ষ তারকার দ্বন্দ্বে অন্য ক্রিকেটাররাও ভাগ হয়ে আছেন দুই দলে। এমনকি আছে কিছু উপদলও। তবে গ্রুপ থাকার কথা অস্বীকার করেছেন তামিম, ‘আমি ১৭ বছর ধরে জাতীয় দলে খেলছি, আজ, ৫, ১০ বছর, ১৬ বছর আগে হোক যখন দল ভালো খেলতো না তখনই গ্রুপিং ব্যবহার করা হতো। বিভিন্নভাবে এই গ্রুপ, ওই গ্রুপ। সবশেষ ৬ মাসে দলের সঙ্গে ছিলাম না, এই জিনিসটা যদি এই ৬ মাসে যদি হয়ে থাকে তা জানি না। ড্রেসিং রুম সবশেষ ৩ থেকে ৪ দিন ধরে আছি এরকম কিছু দেখিনি।’

সিরিজের সাথে বিশ্বকাপ ভাবনা

২০০০ সাল থেকে এখন পর্যন্ত ২৩ বছরে ইংলিশদের বিপক্ষে বাংলাদেশ ১৭টি ওয়ানডে খেলে। জয় মাত্র চারটি। সবশেষ জয় ঘরের মাঠে ২০১৬ সালে, মিরপুর স্টেডিয়ামে। চন্ডিকা হাথুরুসিংহের অধীনে পাওয়া সেই জয়ের পর তিনবারের দেখায় প্রত্যেকবার হেরেছে। একমাত্র ইংল্যান্ডের বিপক্ষে কোনো সংস্করণে সিরিজ জিততে পারেনি বাংলাদেশ। নিজেদের প্রিয় সংস্করণ ওয়ানডে দিয়ে এবার সেই আক্ষেপ ঘোচাতে মরিয়া লাল সবুজের দল। ক’দিন আগে ভারতকে সিরিজ হারানো বাংলাদেশ দেখছে ইংলিশ বধের স্বপ্ন। ঘরের মাঠের সাহায্য কাজে লাগানোর আভাস ছিল তামিমের কথায়, বিশেষ কিছু সিরিজ থাকে যেগুলো গুরুত্বপূর্ণ। বিশ্বের যে কোনো দলই চায় জিততে। কিন্তু বিশ্বকাপের কথা মাথায় রেখে ভালো উইকেটে খেলার বিষয়টি মাথায় আছে। সে জন্যই নাকি সিরিজের শেষ ম্যাচটা চট্টগ্রামে নেয়া হয়েছে। তবে নিজেদের শক্তির জায়গা কাজে লাগানোর চেষ্টা থেকে বেরিয়ে নতুন কিছু করার ক্ষেত্রে যে ঝুঁকি থাকে, সেটি মনে করিয়ে দিয়ে তামিম বলেছেন, ‘যখন আমরা বিশ্বকাপে খেলতে যাব, তখন স্পোর্টিং উইকেট হবে। বেশির ভাগই ব্যাটিংবান্ধব উইকেট হবে। আমাদের ওখানেও মানিয়ে নিতে হবে।

ভাবনায় টপ অর্ডার

সবশেষ ভারত সিরিজে বাংলাদেশ জিতলেও বড় সমস্যা ছিল টপ অর্ডার। জয়ী দুই ম্যাচেই দলের হাল ধরেছেন মেহেদি হাসান মিরাজ। ইংল্যান্ড সিরিজ শুরুর আগেও ভাবনা টপ অর্ডার নিয়ে। তবে তামিম বলছেন মানিয়ে নেয়ার কথা যাতে লেজের ব্যাটসম্যানদের চাপ না বাড়ে। বাংলাদেশ অধিনায়ক বলেন, ‘ভারত সিরিজে দুই দলেরই টপ-অর্ডারে ইস্যু ছিল, এতে বুঝা যায় এ ধরনের উইকেটে টপ অর্ডারের ব্যাট করা কঠিন ছিল। এটা যদি একটা দলের হতো, তাহলে আমি মেনে নিতাম আমি কোথাও ভুল করছি। চট্টগ্রাম বাদ দিয়ে আপনি যদি দেখেন দুই দলেই দ্রুত উইকেট হারিয়েছে। বল পুরান হলে রান করা সহজ হয় মিডল অর্ডারের জন্য। মিরপুরে নতুন বলে টপ-অর্ডারের জন্য একটু কঠিন। এটা অনেক ম্যাচেই হচ্ছে। মানিয়ে নেয়ার চেষ্টা করতে হবে নিচের দিকে চাপ না বাড়াতে।’

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত