আত্মবিশ্বাসী ইংল্যান্ডের স্পিন ভয়

প্রকাশ : ০১ মার্চ ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  স্পোর্টস রিপোর্টার

ইংল্যান্ডের ক্রিকেটের আক্রমণাত্মক ব্র্যান্ডকে আমলে না নিয়ে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে থ্রি লায়ন্সের মুখোমুখি হতে প্রস্তুত বাংলাদেশ। আজ বাংলাদেশ সময় দুপুর ১২টায় সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে মাঠে নামবে বাংলাদেশ ও ইংল্যান্ড। সিরিজে এগিয়ে থাকতে ভালো শুরুর লক্ষ্য বাংলাদেশের। সিরিজ শুরুর আগে গতকাল মঙ্গলবার বাংলাদেশের ওয়ানডে অধিনায়ক তামিম ইকবাল বলেন, ‘প্রথম লক্ষ্যই হলো সিরিজ জয়। আমরা সর্বশেষ পাঁচ বা ছয়টি সিরিজের সবগুলোতেই জিতেছি। ইংল্যান্ডকে হারানোর আত্মবিশ্বাস আমাদের আছে।’ ২০১৫ সালের পর একমাত্র দল হিসেবে বাংলাদেশের মাটিতে দ্বিপাক্ষীক সিরিজ জিতেছে ইংল্যান্ড।

বাংলাদেশে সিরিজ জয়ের পর থেকে ধীরে ধীরে শক্তিশালী হয়ে ওঠা ইংল্যান্ড দল আক্রমণাত্মক ব্র্যান্ডের খেলা শুরু করে, যা বিশ্বের যে কোনো দেশে খেলতে সহায়ক হয়েছে ইংলিশদের জন্য। তাদের খেলার ধরন এতটাই কার্যকরী হয়েছে, যার সুবাদে বর্তমানে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ড। এই সিরিজ দিয়ে প্রধান কোচ হিসেবে বাংলাদেশের হয়ে দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করবেন চন্ডিকা হাথুরুসিংহে। ইংল্যান্ডের আক্রমনাত্মক ব্র্যান্ডের ক্রিকেটকে ‘অভূতপূর্ব’ অভিহিত করে হাথুরু বলেন কিভাবে উইকেট ইস্যুকে পরিকল্পনার বাইরে রাখা যায়, সেটি তারা জানে। হাথুরুসিংহে বলেন, ‘আমরা যদি ইংল্যান্ডের মত খেলতে গেলে সেটা ঠিক হবেনা। তারা বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন দল। তবে আমরা আমরা ভাল ক্রিকেট, আমাদের সেরাটা খেলতে চাই। দের একটি দল অন্য জায়গায় খেলছে, এখানে আরেকটি দল খেলছে। তাদের প্রতিভার একটা গভীরতা আছে। আমরা দেখতে চাই, আমরা কোথায় আছি এবং লক্ষ্য পূরণে ভুলগুলো খুঁজে বের করতে হবে। আমরা যদি এই কন্ডিশনে ভালো করতে পারি এটি আমাদের আত্মবিশ্বাস জোগাবে।’

ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টির বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের বিপক্ষে ব্যাটিং, বোলিং ও ফিল্ডিং- সব বিভাগে আগ্রাসী ক্রিকেটের পরিকল্পনা করেছেন বাংলাদেশের কোচ হাথুরুসিংহ। ক্রিকেটের তিন সংস্করণেই নিজেদের খেলার ধরনে নজরকাড়া পরিবর্তন এনেছে ইংল্যান্ড। যে কোনো পরিস্থিতিতে আগ্রাসী ক্রিকেট খেলে সাফল্যও পেয়েছে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টির বর্তমান বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা। তাদের বিপক্ষে মাঠে নামার আগে ওই একই পথে হাঁটার বার্তা দিলেন চান্দিকা হাথুরুসিংহে। প্রধান কোচ হয়ে দ্বিতীয় মেয়াদে বাংলাদেশে ফিরে হাথুরুসিংহের প্রথম চ্যালেঞ্জ ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজটিই। আজ মাঠে নামার আগে এক সপ্তাহ কাজ করার সুযোগ পেয়েছেন দলের সঙ্গে। খুব বেশি সময় না হলেও, দলের মধ্যে আগ্রাসী ক্রিকেটের মানসিকতা বয়ে আনার কথাই বলেছেন

শ্রীলঙ্কান কোচ।

বাংলাদেশের নিচু ও ধীর গতির উইকেট বিশ্বের যে কোন দলের জন্যই কঠিন। ভারতের মতো দলও এমন সমস্যায় পড়েছিল। ২০১৫ সাল থেকে এখানে দুবার খেলে দুটি ওয়ানডে সিরিজই হেরেছে টিম ইন্ডিয়া। তবে এবার নিজেদের মাঠে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে বাংলাদেশের আধিপত্য। কারণ ইংল্যান্ড অধিনায়ক জশ বাটলার বলেছেন ভারতের মাটিতে ওয়ানডে বিশ্বকাপের আগে এখানকার কঠিন কন্ডিশনে নিজেদের পরীক্ষা করে নিতে চান তারা। বাটলার বলেন, ‘আমরা জানি এখানকার কন্ডিশন আমাদের জন্য কঠিন হবে তবে আমরা ঠিক এটিই চাই। এটি এমন একটি চ্যালেঞ্জ, দল হিসাবে কঠিন কন্ডিশনে নিজেদেরকে পরীক্ষা করতে চাই। সম্ভবত ভারত ও এখানকার কন্ডিশন প্রায় একই রকম। এটি আমাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হবে, এই সিরিজ নিয়ে আমরা অনেক বেশি রোমাঞ্চিত।’ হাথুরুসিংহে জানান, ইংল্যান্ডকে হারাতে নিজেদের শক্তি ও দক্ষতার উপর নির্ভর করবে বাংলাদেশ, ‘আমরা পূর্ণ শক্তি নিয়ে খেলবো। আমার মনে করি না, তারা পূর্ণ শক্তি নিয়ে খেলতে এসেছে। তাদের মধ্যে কয়েকজন টেস্ট ক্রিকেট খেলছে। আমাদের দক্ষতা ও শক্তির প্রতি আমার পুর্ন সমর্থন আছে। তারা অবিশ্বাস্য শক্তিশালী দল। ইংলিশ ক্রিকেটে দারুণ গভীরতা গড়ে তুলেছে তারা। প্রতিটি টেস্ট প্লেয়িং দলের জন্য তারা ঈর্ষণীয়। আমি আশা করি, আমার মেয়াদ শেষে ভালো কিছু রেখে যেতে পারব।’

বাংলাদেশের অনুশীলনেও দেখা গেছে আগ্রাসী ছাপ, নিজেদের মধ্যে প্রস্তুতি ম্যাচের পাশাপাশি ম্যাচের আবহে ব্যাটিং-বোলিং ঝালিয়ে নিয়েছেন তামিম ইকবাল, মুশফিকুর রহিম, তাসকিন আহমেদরা। ব্যাটসম্যানদের মধ্যে তৌহিদ হৃদয়, আফিফ হোসেনদের দেখা গেছে হাত খুলে খেলতে। মুশফিক-মাহমুদউল্লাহরাও চেষ্টা করেছেন উদ্ভাবনী কিছু শট খেলার। মুস্তাফিজুর রহমান, তাসকিন আহমেদরা ভিন্ন ভিন্ন ফিল্ড সেটআপে সেরেছেন বোলিং প্রস্তুতি। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ শুরুর আগের দিন গতকাল সংবাদ সম্মেলনে প্রধান কোচ জানান, ‘আমার শেষ দফার দায়িত্বে আমরা আগ্রাসী ক্রিকেট খেলেছি। যদি বলেন, বাংলাদেশ আগ্রাসী ক্রিকেট খেলে না, সেটি বিশ্বাস করি না। আমরা আগ্রাসী ক্রিকেট খেলি।’ শুধু ব্যাটিংয়ে আগ্রাসন না এনে তিন বিভাগেই এই মানসিকতা আনার কথা বলেন বাংলাদেশের প্রধান কোচ।

টাইটেল স্পন্সর মধুমতি ব্যাংক

দীর্ঘ ৭ বছর পর বাংলাদেশ সফর করেছে ইংলিশরা। তিন ওয়ানডে ও তিন টি-টোয়েন্টি ম্যাচের পূর্ণাঙ্গ সিরিজের জন্য মধুমতি ব্যাংক টাইটেল স্পন্সর হিসেবে থাকবে। ২০১৩ সালে এই ব্যাংকের যাত্রা শুরু হয়। দশম বছরে মধুমতি ব্যাংকের পদার্পণ উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ-ইংল্যান্ড সিরিজকে বেছে নিয়েছে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিসিবির পরিচালক জালাল ইউনুসসহ টাইটেল স্পন্সরদের কর্মকর্তারা।