ঢাকা ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

মালানের ব্যাটে বাংলাদেশের স্বপ্ন ভঙ্গ

মালানের ব্যাটে বাংলাদেশের স্বপ্ন ভঙ্গ

আগে ব্যাটিং বেছে নাজমুল হোসেন শান্ত ছাড়া কেউই পেলেন না বলার মতো রান। ব্যাটিং ব্যর্থতায় ৪৭.২ ওভারে ২০৯ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ, বাকিরা বিশের ঘরও ছুঁতে পারেননি। উইকেটে বোলারদের অনেক রসদ থাকায় অল্প পুঁজি নিয়েও আশা ছিল। তাসকিন আহমেদ, তাইজুল ইসলাম ও সাকিবের ঝলকে সেই আশা চওড়াও হয়েছিল একটা সময়, ইংল্যান্ড ৪০ ওভারে ১৬৬ রানে ৭ উইকেট হারিয়ে ফেলে বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা। তবে চাপে থাকা দলকে উদ্ধার করে দারুণ সেঞ্চুরিতে কাজ সারলেন দাবিদ মালান (১১৪*)। ৩ উইকেটে জিতে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেছে ইংলিশরা, ২১২/৭। ২১০ রানের লক্ষ্যে পৌঁছে গেছে ৮ বল বাকি থাকতে।

কঠিন উইকেটে কীভাবে খেলতে হয়, যেন সেটাই দেখালেন মালান। সতীর্থদের ব্যর্থতার দিনে এক প্রান্ত আগলে রেখে দলকে লক্ষ্যের দিকে একাই টানলেন তিনি। উপহার দিলেন চমৎকার সেঞ্চুরি। ইংল্যান্ডের জয়ের নায়ক মালান তিনে নেমে খেলেন ১১৪ রানের অপরাজিত ইনিংস। ১৪৫ বলের ইনিংসটি সাজান তিনি ৪ ছক্কা ও ৮ চারে। ইংল্যান্ডের জয়ে বড় অবদান রাখেন আদিল রশিদও। মালানের সঙ্গে অষ্টম উইকেটে ৫১ রানের জুটিতে ১৭ রান করেন তিনি।

বোর্ডে বড় পুঁজি মাত্র ২০৯ রানের। এই পুঁজি নিয়ে ইংল্যান্ডের মতো দলের বিপক্ষে জিততে হলে বোলারদের অবিশ্বাস্য কিছু করতে হবে। শুরুটাও দারুণ হয়েছিল বাংলাদেশের, প্রথম ওভারেই সাকিব আল হাসানের হাতে বল তুলে দেন অধিনায়ক তামিম ইকবাল। বল হাতে নিয়েই ইংলিশ শিবিরে কাঁপন ধরিয়েছেন সাকিব। ওভারের প্রথম বলেই পেতে পারতেন উইকেট, ফিরতি ক্যাচ দিয়েছিলেন জেসন রয়। কিন্তু সাকিব ধরে রাখতে পারেননি। শেষ বলে সাকিবকে তুলে মারতে গিয়ে মিডঅফে ক্যাচ তুলে দেন ইংলিশ ওপেনার। তামিম ইকবাল ধরেন ক্যাচ। এসে সাকিবের সঙ্গে হাত মিলিয়ে মাতেন উদযাপনে। অন্য ওপেনার ফিল সল্ট ১২ রান করে তাইজুলের বলে বোল্ড হয়েছেন। এরপর বাঁ-হাতি স্পিনার তাইজুল জেমস ভিন্সিকে (৬) স্টাম্পিংয়ের ফাঁদে ফেলেন। তাসকিনের জোরের ওপর করা বলে জস বাটলার খোঁচা দিয়ে সিøপে নাজমুল শান্তর হাতে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফিরে যান। দলের রান তখন ৬৫। এরপর ৩৮ রানের জুটি দিয়ে মিরাজের বলে ক্যাচ দিয়ে আউট হয়েছেন জ্যাক (২৬)। সেট হওয়া মঈন আলীকে ১৪ রানে বোল্ড করেছেন মিরাজ। ব্যাটিংয়ে শুরুটা হয়েছিল হতাশায়। মাঝে কেবল নাজমুল হোসেন শান্ত ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের লড়াই। অনেক বল খরচায় শান্ত পঞ্চাশোর্ধ ইনিংস খেললেও মাহমুদউল্লাহ অবশ্য তা পারেননি। তামিম ইকবাল, মুশফিকুর রহিমরা উইকেটে থিতু হয়েও হতাশ করেছেন। শেষ দিকে বোলার হয়েও তাসকিন আহমেদ, তাইজুল ইসলামরা বরং ভালো করেছেন। তবে মোটা দাগে বাংলাদেশের পুরো ইনিংসজুড়ে ভাঙনের সুর বেজে গেছে, তাই সংগ্রহ থেকে গেছে সামান্যই।

জফরা আর্চার (২/৩৭), মার্ক উড (২/৩৪), ডানহাতি অফ স্পিনার মঈন আলী (২/৩৫), লেগ স্পিনার আদিল রশিদ (২/৪৭), ক্রিস ওকস (১/৮), অভিষিক্ত উইল জ্যাকস (১/১৮) ইংল্যান্ডের যে বোলারই বোলিং করেছেন, তার বিপক্ষেই ধুঁকতে হয়েছে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের। পাঁচ ব্যাটসম্যান ২ অঙ্কের ঘরে যেতে পারেননি, লিটন দাস (৭), সাকিব (৮), আফিফ হোসেন ধ্রুব (৯), মেহেদী হাসান মিরাজ (৭) ও মুস্তাফিজুর রহমান (০)। শান্ত ৮২ বলে ৬টি চারে ইনিংস সেরা ৫৮ রান করলেও স্বস্তিতে ছিলেন না। ১৬তম ম্যাচে এসে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের প্রথম হাফ সেঞ্চুরি পাওয়া বাঁ-হাতি ব্যাটসম্যানকে রান তুলতে সংগ্রাম করতে হয়েছে। মাহমুদউল্লাহ ৪৮ বলে ৩১ রান করেন। শান্ত ও মাহমুদউল্লাহ জুটি থেকে সর্বোচ্চ ৫৩ রান পায় বাংলাদেশ। সাত মাস পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলতে নামা অধিনায়ক তামিম করেন ২৩ রান। সবার মতো ধীরস্থির ব্যাটিং করে সফল হতে পারেননি মুশফিক (১৬)। ২০০ রানও পেরোনো হতো না তামিম ইকবালের দলের। শেষ দিকে দুই বোলার তাসকিন (১৪) ও তাইজুলের (১০) কল্যাণে সেটা সম্ভব হয়েছে। নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে বাংলাদেশকে কোণঠাসা করে রাখা ইংলিশ বোলারদের মধ্যে শুধু একজন পাঁচের বেশি ইকোনমিতে রান দেন, বাকিরা সবাই আরো কিপ্টে বোলিং করেন।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত