ঢাকা ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

ফিফার প্রতি তোপ ক্রোয়াট কোচের

ফিফার প্রতি তোপ ক্রোয়াট কোচের

২০১৮ রাশিয়া ও ২০২২ কাতার বিশ্বকাপে আলো ছড়ানো দলগুলোর মধ্যে একটি ক্রোয়েশিয়া। রাশিয়ায় ফ্রান্সের কাছে হেরে রানার্সআপ হয়েছিল ইউরোপের ৪০ লাখ জনসংখ্যার দেশটি। কাতারে আর্জেন্টিনার বিপক্ষে সেমি ফাইনালে হেরে যাওয়ার পর মরক্কোকে হারিয়ে তৃতীয় হয়েছিল দলটি। কিন্তু এবারের ফিফা বর্ষসেরার মনোনয়নে ক্রোয়াটদের উপস্থিতি যৎসামান্য। লুকা মদ্রিচই কেবল ফিফপ্রো একাদশে আছেন, বাকিদের ঠাঁই মেলেনি কোথাও। বিশ্ব ফুটবলের নিয়ন্তা সংস্থার এমন আচরণে বেজায় ক্ষেপেছেন ক্রোয়েশিয়া কোচ জ্লাতকো দালিচ। ক্রোয়েশিয়াকে প্রাপ্য সম্মান দেওয়া হয় না, এমন অভিযোগ তুলে ফিফার কড়া সমালোচনা করেছেন তিনি।

ফিফার বর্ষসেরা কোচ, খেলোয়াড় নির্বাচনে ভোট দেন জাতীয় দলের কোচেরাও। কিন্তু ক্রোয়েশিয়ার নায়কদের প্রতি ফিফার ‘শ্রদ্ধার ঘাটতি’র কারণে ভোট দেননি দালিচ। সেরা কোচের সংক্ষিপ্ত তিনে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনার লিওনেল স্কালোনি, রিয়াল মাদ্রিদের কার্লো আনচেলত্তি ও ম্যানচেস্টার সিটির পেপ গার্দিওলা ঠাঁই পেলেও জায়গা হয়নি দালিচের। এই কোচের হাত ধরে ক্রোয়েশিয়া ২০১৮ সালের রাশিয়া বিশ্বকাপে হয়েছিল রানার্সআপ, কাতার বিশ্বকাপে হয় তৃতীয়।

মরুভূমির বিশ্বকাপে ক্রোয়াটদের জার্সিতে মাতেও কোভাসিচ, ইয়োস্কো গাভারদিওল ও দমিনিক লিভাকভিচও দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে নজর কাড়েন, কিন্তু তারাও ছিলেন না কোনো বিভাগের মনোনয়নে। দালিচের দাবি ফুটবলের বড় দেশগুলোর খেলোয়াড়দের মতো তার খেলোয়াড়দের আরও স্বীকৃতি প্রাপ্য।

কাতারের আসরে রেকর্ড পাঁচবারের চ্যাম্পিয়ন ব্রাজিলকে কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে বিদায় করে দেয় ক্রোয়েশিয়া। পরে ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে তারা হেরে যায় আর্জেন্টিনার কাছে। এরপর তৃতীয় স্থান নির্ধারণী ম্যাচে জিতে টুর্নামেন্টে রূপকথা লেখা মরক্কোর বিপক্ষে। এরপরও সেরার মনোনয়নে ক্রোয়াটদের উপেক্ষিত হওয়া মেনে নিতে পারছেন না দালিচ, ‘আমরা যেমন পারফর্ম করেছি, যদি ইংলিশ, ব্রাজিলিয়ান, স্প্যানিশ, জার্মান কিংবা ইতালিয়ান খেলোয়াড় এবং কোচরা যদি একই ফল পেত, তাহলে তারা সম্ভাব্য সব পুরস্কারের সংক্ষিপ্ত তালিকায় থাকত। আমাদের জন্য, জাতীয় দল, খেলোয়াড় ও আমার জন্য আমি আরও বেশি সম্মান চাই। কেননা, আমরা দুটি পদক জিতেছি; এর চেয়ে বেশি সম্মান পাওয়ার যোগ্য আমরা। ফিফার বরং এটা বড় প্রচার করা উচিত যে, ক্রোয়েশিয়ার মতো ছোট একটা দেশ বিশ্বের বড় দেশগুলোর বিপক্ষে লড়াই করতে পারে। আর সেটাই সারা ফুটবল বিশ্বের জন্য সবচেয়ে সুন্দর বার্তা হতো।’

কাতারে তৃতীয় হওয়া এবং উয়েফা নেশন্স লিগে চার দলের ফাইনালসে জায়গা করে নেয়া ক্রোয়েশিয়ার প্রতি ফিফার এমন আচরণ কিছুতেই মানতেই পারছেন না দালিচ, ‘ক্রোয়েশিয়া জাতীয় দলের প্রতি ফিফার আচরণে আমি হতাশ। একটা জাতীয় দল হিসেবে আমরা যা অর্জন করেছি, তার ওপর ভিত্তি করে আমি খুব শক্তভাবে বিশ্বাস করি, বিশ্ব ফুটবলের নিয়ন্তা সংস্থার কাছ থেকে আমরা যে সম্মান পাচ্ছি, তার চেয়ে বেশি পাওয়ার যোগ্য। কাতার বিশ্বকাপ ও চলমান উয়েফা নেশন্স লিগের সেরা চারে থাকা একমাত্র দল আমরাই। বিশ্বের সবচেয়ে বড় দল ব্রাজিলকে হারিয়ে আমরা বিশ্বজুড়ে খবরের শিরোনামে এসেছিলাম। আর ফ্রান্সের মতো আমরাই একমাত্র দল হিসেবে সম্প্রতি হওয়া দুই বিশ্বকাপে পদক পেয়েছি।’

বর্ষসেরা কোচ নির্বাচনে প্রথমে মনোনয়ন পেয়েছিলেন পাঁচ জন। দিদিয়ে দেশম ও ওয়ালিদ রেগরাগিকে বাদ দিয়ে তিন জন চূড়ান্ত ফাইনালিস্টের তালিকায় ছিলেন লিওনেল স্কালোনি, পেপ গার্দিওলা ও কার্লো আনচেলত্তি। দালিচের ঠাঁই-ই মেলেনি। প্রাপ্য সম্মান না পাওয়াতেও ক্ষোভ প্রকাশ করেন ৫৬ বছর বয়সি ক্রোয়াট, ‘আমার মনে হয়, যে সম্মান আমাদের প্রাপ্য, আমরা সেটা পাই না। বিশ্বকাপে আমাদের ম্যাচের টাইমিং, আমাদের ম্যাচগুলোতে রেফারিংয়ের মান; বিশেষ করে সেমিফাইনাল ম্যাচের কথা বলা যায়, এসব কারণে আমার মনে হয়, ক্রোয়েশিয়ার প্রতি শ্রদ্ধার কমতি আছে।’

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত