ঘরের মাঠে তুর্কমেনিস্তানের বিপক্ষে ব্যবধান বাড়াতে না পারায় এএফসি অনূর্ধ্ব-২০ মহিলা চ্যাম্পিয়নশিপের চূড়ান্ত পর্বে খেলার স্বপ্ন কঠিন হয়ে গেল বাংলাদেশের মেয়েদের! কেননা আগামীকাল শেষ ম্যাচে তাদের প্রতিপক্ষ শক্তিশালী ইরান, যারা দু’দিন আগে মধ্যএশিয়ার তুর্কমেনিস্তানকে ৭-১ গোলে হারিয়ে বাছাইপর্ব শুরু করেছে। কমলাপুর স্টেডিয়ামে গতকাল তুর্কমেনিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশ জিতেছে ৪-০ গোলে। তাতে দু’দলেরই পয়েন্ট ৩ হলেও গোলগড়ে এগিয়ে মধ্যপ্রাচ্যের দেশটি। ফলে পারস্যের মেয়েদের টপকে ‘এইচ’ গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে চূড়ান্ত পর্বে খেলতে হলে লাল-সবুজ মেয়েদের অবশ্যই জিততে হবে। ড্র হলে ইরান পাবে মূল পর্বের টিকেট, চুড়ান্ত পর্বে আগামী বছর উজবেকিস্তানে।
চোটের কারণে অধিনায়ক শামসুন্নাহারের অনুপস্থিতিতে ভুগছিল বাংলাদেশ। ত্রাতা হয়ে এলেন আকলিমা খাতুন। করলেন জোড়া গোল। জালের দেখা পেলেন স্বপ্না রানীও। দুই ফরোয়ার্ডের নৈপুণ্যে সওয়ার হয়ে এএফসি অনূর্ধ্ব-২০ এশিয়ান কাপের বাছাইয়ে শুভ সূচনা পেল দল। ম্যাচের শুরু থেকে বাংলাদেশ প্রাধান্য বিস্তার করে। একাধিক গোলের সুযোগ তৈরি করেছিল বাংলাদেশ। বলের নিয়ন্ত্রণে শুরু থেকে এগিয়ে বাংলাদেশ। খেলাও হতে থাকল তুর্কমেনিস্তানের অর্ধে। কিন্তু ইরান ম্যাচে দারুণ কিছু সেভ করা গোলরক্ষক আমানবেরদিয়েভা আয়েশার তেমন কোনো পরীক্ষাই নিতে পারছিলেন না আকলিমা-আইরিনরা। ১৮ মিনিটে আইরিন খাতুনের দূরপাল্লার শটে গতি ছিল না। বল সোজা যায় গোলরক্ষক বরাবর। দুই মিনিট পর রক্ষণের ভুলে বক্সে বল পেয়ে যান আকলিমা খাতুন। কিন্তু বক্সে ওয়ান-অন-ওয়ান পজিশনে গোলরক্ষককে পেয়েও দুর্বল শটে হতাশা বাড়ান এই ফরোয়ার্ড। ৩৭ মিনিটে মাঝমাঠ থেকে একক প্রচেষ্টায় আক্রমণে ওঠেন তাগানোভা শাসেনেম। রক্ষণের বাধা পেরিয়ে তুর্কমেনিস্তানের এই ফরোয়ার্ড পোস্ট ছেড়ে বেরিয়ে আসা রুপনা চাকমাকে একা পেয়ে যান। তার শট আটকে বাংলাদেশের ত্রাতা গোলরক্ষক। বাংলাদেশের চাপ সামলে এটাই ছিল তুর্কমেনিস্তানের প্রথম আক্রমণ। ছোট শামসুন্নাহারের অনুপস্থিতি শুরু থেকে টের পাচ্ছিল বাংলাদেশ। অবশেষে প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে স্বস্তির হাসি হাসে দল। স্বপ্না রানীর কর্নার আয়েশা ফিস্ট করলেও পুরোপুরি বিপদমুক্ত করতে পারেননি। বক্সে জটলার ভেতর থেকে টোকায় দলকে এগিয়ে নেন আকলিমা। তুর্কমেনিস্তান সেই গোলের আপত্তি জানিয়েছিল হ্যান্ডবলের। তবে রেফারি তার সিদ্ধান্তে অটল ছিলেন।
দ্বিতীয়ার্ধেও তুর্কমেনিস্তানের মেয়েদের কোনো সুযোগ দেয়নি বাংলাদেশ। ৭১ মিনিটে ডান দিক থেকে ইতি খাতুন বক্সে ক্রস বাড়ান, নিখুঁত ফ্লিকে গোলমুখ থেকে জাল খুঁজে নেন আকলিমা। প্রথমার্ধের মতো দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেও বিবর্ণ ফুটবল খেলা বাংলাদেশের ডাগআউট নেচে ওঠে ব্যবধান দ্বিগুণের আনন্দে।
তুর্কমেনিস্তান ম্যাচে বাংলাদেশের চাওয়াও ছিল বড় ব্যবধানে জেতা। এক মিনিটের মধ্যে জোড়া গোলে সে সম্ভাবনা জাগায় গোলাম রব্বানী ছোটনের দল। ৮০ মিনিটে ইতি খাতুনের ক্রসে বক্সের ভেতরে হেডে লক্ষ্যভেদ করেন স্বপ্না রানী। পরের মিনিটেই বক্সের বাইরে থেকে স্বপ্নার জোরাল শট তুর্কমেনিস্তানের তুর্কিমেনিস্তান মিডফিল্ডার মামেদোভা মালিকার পায়ে লেগে জড়ায় জালে।