কাবাডি দিয়ে মাতাতে চান আর্জেন্টাইনরা

প্রকাশ : ১১ মার্চ ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  শফিক কলিম

কাতার বিশ্বকাপের সময় আর্জেন্টিনার প্রতি বাংলাদেশের মানুষের আগ্রহ দেখে অবাক আর্জেন্টাইনরা, ৩৮ বছর পর তো ঢাকায় দূতাবাসও পুনরায় চালু করেছে। ফুটবল তাদের সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলা, বিশ্বকাপ জেতার পর তো খেলাটার প্রতি আর্জেন্টাইনদের উন্মাদনা আরও বেড়েছে। সেই আর্জেন্টাইনরা এখন মজেছে কাবাডিতে। বঙ্গবন্ধু কাপ আন্তর্জাতিক কাবাডি খেলতে ৪৮ ঘণ্টার বিমানপথ পাড়ি দিয়ে গতকাল ভোরে ঢাকা পৌঁছেছে আর্জেন্টিনার জাতীয় কাবাডি দল। ১৪ খেলোয়াড়ের মধ্যে চারজনের আবার বাংলাদেশের বিপক্ষে খেলারও অভিজ্ঞতা রয়েছে, সেটি ২০১৬ সালে আহমেদাবাদ বিশ্বকাপে। প্রত্যাশা মতো জিতেছিল বাংলাদেশই।

ফুটবল পাগলজাতির কাবাডির প্রতি আগ্রহের কারণ জানালেন আর্জেন্টিনার কোচ রিকার্দো আকুনিয়া, ‘কাবাডি আর্জেন্টিনার ছোট খেলাগুলোর মধ্যে একটা। ২০০২ সালে কানাডায় ভারতীয় বংশোদ্ভূতদের খেলতে দেখে কাবাডির প্রতি আগ্রহ জন্মায় আমার। সেখানে খেলার নিয়মকানুন শিখে নিজ দেশে চর্চা শুরু করি। এখন সব মিলিয়ে দেশে ১০০ জনের মতো খেলোয়াড় আছে। দল আছে মোট ৬টি, সবই অপেশাদার। নিয়মিত কোনো লিগ হয় না, কিন্তু বছরে দুটি টুর্নামেন্ট হয়। সেখান থেকে বাছাই করে সেরা খেলোয়াড়দের নিয়েই গড়া হয়েছে বঙ্গবন্ধু কাপের জন্য জাতীয় দল।’ দলে তিনজন রয়েছেন কুস্তিগীর, দু’জন দ্বিতীয় বিভাগে ফুটবল খেলেন; আছেন রাগবি, ব্যাডমিন্টন ও তায়কোয়ানদো খেলোয়াড়ও। রিকার্দো দেশটির কাবাডি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতিও, বাংলাদেশের হাবিবুর রহমানের মতো তিনিও আন্তর্জাতিক কাবাডি ফেডারেশনের সহ-সভাপতি। ৫৫ বছরোর্ধ্ব রিকার্দো তরুণ বয়সে ৪০টি দেশ ভ্রমণ করেছেন ব্যাডমিন্টন খেলতে। বাংলাদেশ প্রসঙ্গে তার অনুভূতি, ‘বাংলাদেশ ও আর্জেন্টিনার মানুষের একই রকম অনুভূতি, বিশেষ করে কাতার বিশ্বকাপের সময় বাংলাদেশের মানুষ আর্জেন্টিনার প্রতি উৎসাহ দেখিয়েছে, টিভিতে আর্জেন্টাইনরা দেখেছে। আমরা অভিভূত। বাংলাদেশের মানুষ ও আমরা ভাই ভাই।’ বাংলাদেশের মানুষের কাছে আর্জেন্টিনা বলতে ডিয়াগো ম্যারাডোনা। সেই ম্যারাডোনার সাথে তার দুইবার দেখা হয়েছে। প্রথমবার ১৯৯৪ সালে যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বকাপে ডোপিং টেস্টে পজিটিভ হয়ে নিষিদ্ধ হয়ে দেশে ফেরার পর একটি ব্যাডমিন্টন কোর্টে। আর্জেন্টাইনদের কাছে ম্যারাডোনা প্রথম ঈশ্বর, আর কাতার বিশ্বকাপ জেতার পর দ্বিতীয় ঈশ্বর হয়েছেন মেসি। আর্জেন্টিনায় সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলা ফুটবল। কাতার বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর উন্মাদনা আরও বেড়ে গেছে। বিশেষ করে তরুণরা ফুটবলের প্রতি আরও বেশি বুঁদ হয়েছে। বুয়েন্স আয়ার্স থেকে ব্রাজিল হয়ে দুবাই, এরপর ঢাকা- সব মিলিয়ে ৪৮ ঘন্টা বিমানপথ ভ্রমণ করে খেলোয়াড়রা। সন্ধ্যায় বাংলাদেশের কাবাডি কোর্ট দেখতে এসেছেন। রিকোর্দো এসেছেন পাতাগোনিয়া শহর থেকে, যেটি বুয়েন্স আয়ার্স থেকে ২৩০০ কিলোমিটার দূরে। দুই দিন বাস জার্নি করে কাবাডি দলের সঙ্গে যোগ দিয়ে ঢাকা এসেছেন রিকার্দো।