ঢাকা ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

পাঁচ গোলে হালান্ডের ইতিহাস

পাঁচ গোলে হালান্ডের ইতিহাস

আরবি লাইপজিগের মাঠে উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ ষোলোর প্রথম লেগে ১-১ গোলে ড্র করেছিল ম্যানচেস্টার সিটি। কিন্তু আশা ছিল ফিরতি লেগ নিয়ে। যেহেতু এই লেগ হবে সিটির ঘরের মাঠ ইতিহাদ স্টেডিয়ামে। কিন্তু সেই আশা এভাবে পূরণ করবে স্কাই ব্লুজরা সেটা হয়তো কেউ ভাবেনি। গত মঙ্গলবার রাতের এই ম্যাচে একাই পাঁচ গোল করে ইতিহাস গড়েছেন আরলিং হালান্ড। আর ম্যানসিটি পেয়েছে ৭-০ ব্যবধানের বিরাট জয়। দুই লেগ মিলিয়ে ৮-১ ব্যবধানের বিশাল জয়ে উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত করেছে পেপ গার্দিওলার শিষ্যরা।

প্রথমার্ধেই হ্যাটট্রিক পূর্ণ করেন হালান্ড, এরপর করেন আরো দুই গোল। এর মধ্য দিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের নকআউট পর্বের ম্যাচে দ্বিতীয় কোনো ফুটবলার হিসেবে পাঁচ গোল করার রেকর্ড গড়েন। তার আগে লিওনেল মেসি ২০১২ সালে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ইতিহাসে প্রথম কোনো খেলোয়াড় হিসেবে নকআউট পর্বে করেছিলেন পাঁচ গোল। এছাড়া লুইজ আদ্রিয়ানো ২০১৪-১৫ মৌসুমে পাঁচ গোল করেছিলেন চ্যাম্পিয়নস লিগের গ্রুপপর্বের ম্যাচে।

এই ম্যাচে পাঁচ গোল করার মধ্য দিয়ে ম্যানসিটির হয়ে চলতি মৌসুমে রেকর্ড ৩৯ গোল করার নজির স্থাপন করেছেন হালান্ড। তার আগে ১৯২৮-২৯ মৌসুমে টমি জনসন রেকর্ড ৩৮ গোল করেছিলেন। তাকে ছাড়িয়ে ম্যান সিটির ইতিহাসে এক মৌসুমে সর্বোচ্চ গোল করার রেকর্ডটি নিজের দখলে নিয়ে নিলেন এই তারকা।

শুধু কি তাই? এই ৫ গোলের মধ্য দিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে তার মোট গোল বেড়ে হয়েছে ৩০। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ইতিহাসে সবচেয়ে কম বয়সি (২২ বছর ২৩৬ দিন) খেলোয়াড় হিসেবে ৩০ গোলের মাইলফলক স্পর্শ করেছেন এই নরওয়েজিয়ান। মৌসুম শেষে ম্যানসিটির জার্সি গায়ে মোট গোলে তিনি কোথায় গিয়ে থামেন সেটাও দেখার বিষয়।

হালান্ড ম্যাচের ২২ মিনিটে পেনাল্টি থেকে, এরপর ২৪, ৪৫+২, ৫৩ ও ৫৭ মিনিটে গোল পাঁচটি করেন। এছাড়া ৪৯ মিনিটে ইলকে গুনদোগান ও ৯০+২ মিনিটে কেভিন ডি ব্রুইন গোল করে ৭-০ ব্যবধানের জয় নিশ্চিত করেন। এমন গোল উৎসব করে বেজায় খুশি হালান্ড, ‘খুবই দারুণ একটি রাত। এই প্রতিযোগিতায় খেলতে পেরে আমি গর্বিত। চ্যাম্পিয়ন্স লিগে খেলাটা উপভোগ করি। নিজের পাঁচ গোল, দলের ৭-০ ব্যবধানের- এক কথায় অসাধারণ। আমার শক্তিমত্তার জায়গা হলো গোল করা। সত্যি কথা বলব? এ ম্যাচে অনেক গোল হয়ে গেছে। এতো গোল হবে ভাবিনি। আমি শুধু বল জালে জড়ানোর চেষ্টা করেছি। চেষ্টা করেছি যেখানে গোলরক্ষক নেই সেদিক দিয়ে মারার।’ যোগ করেন হালান্ড।

লাইপজিগকে সাত গোলের মালা পরালে মূল আলোচনা হালান্ডকে তুলে নেওয়াকে কেন্দ্র করে। পুরোটা সময় মাঠে থাকার সুযোগ পেলে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে নতুন ইতিহাস গড়ার সুযোগ পেতে পারতেন তিনি। কারণ এক ম্যাচে পাঁচ গোলের চেয়ে বেশি গোল দেওয়ার রেকর্ড নেই কেউরই। বায়ার লেভারকুসেনের বিপক্ষে লিওনেল মেসিও করেছিলেন পাঁচ গোল। তাকে পেছনে ফেলতে পারতেন তিনি। পঞ্চম গোল করার পাঁচ মিনিট পর তার জায়গায় আর্জেন্টাইন তরুণ জুলিয়ান আলভারেজকে মাঠে নামান পেপ গার্দিওলা। যে ধারায় সিটি তখন খেলছিল, তাতে বাকি সময় মাঠে থাকলে আরেকটি গোল পেতে হয়তো পারতেন এ তরুণ! কিন্তু হালান্ডকে বদল করার পর কেবল একটি গোল পেয়েছে তারা। ম্যাচ শেষে স্বাভাবিকভাবে উঠে আসে প্রসঙ্গটি, উঠে আসে মেসির রেকর্ড ভাঙার বিষয় নিয়েও। উত্তরে মজা করে গার্দিওলা বলেন, ‘যদি ও ২২/২৩ বছর বয়সে এই মাইলফলক অর্জন করে ফেলে তাহলে ওর জীবন বিরক্তিকর হয়ে উঠবে। এখন ওর একটা টার্গেট রইল, সেজন্য বদল করেছি। (বায়ার) লেভারকুসেনের বিপক্ষে মেসির রেকর্ড সম্পর্কে জানতাম না। তবে সাধারণত ম্যাচ শেষ হলে আমি সব খেলোয়াড়কে যতটা সম্ভব খেলতে দিতে চাই।’ আর আক্ষেপ করে ম্যাচ শেষে হালান্ড বলেন, ‘যখন মাঠ ছাড়ি তখন তাকে (গার্দিওলা) বলেছিলাম ডাবল হ্যাটট্রিক করতে চাই - কিন্তু আমি কি করতে পারি!’ আর কিছু সময় পেলে হয়তো নতুন ইতিহাস গড়ে ফেলতে পারতেন তিনি, কিন্তু সে সুযোগটাই পেলেন না।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত