ঢাকা ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

সাফ অনূর্ধ্ব-১৭ মহিলা চ্যাম্পিয়নশিপ

৩০ বছর পর আবার রাশিয়া

৩০ বছর পর আবার রাশিয়া

১৯৮৭ সালে পঞ্চম প্রেসিডেন্ট গোল্ডকাপ ফুটবলে অংশ নিয়েছিল তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের ফাকেল ভরজেনহ; বাংলাদেশ সাদা দলকে ৫-০ গোলে হারিয়ে তৃতীয় হয়ে দেশে ফিরেছিল রুশ দলটি। ১৯৯৩ সালে সপ্তম প্রেসিডেন্ট গোল্ডকাপে অংশ নিয়েছিল ভেঙে যাওয়া রাশিয়ার ক্রিলিয়া সভেতভ সামারা ক্লাব। ৩০ বছর পর আবার রাশিয়ার কোনো দল বাংলাদেশে এসেছে ফুটবল প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে, সেটি সাফ অনূর্ধ্ব-১৭ মহিলা চ্যাম্পিয়নশিপে, অতিথি দল হয়ে।

ইউক্রেনে চলমান যুদ্ধের কারণে ফিফা থেকে নিষিদ্ধ রাশিয়া। তারপরও সাফ অনূর্ধ্ব-১৭ টুর্নামেন্টে খেলতে এসেছে রাশিয়ার বয়সভিত্তিক দলটি। চ্যাম্পিয়ন হয়ে ট্রফি নিয়ে দেশে ফেরার লক্ষ্য নির্ধারণ করে এসেছে ইউরোপের দেশটি। গতকাল বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনে (বাফুফে) অনুষ্ঠিত টুর্নামেন্ট-পূর্ব সংবাদ সম্মেলনে রাশিয়ার কোচ ইয়েলেনা মেদভেদ বলেন, ‘প্রতিটা দলই চায় চ্যাম্পিয়ন হতে, অবশ্যই আমরাও চ্যাম্পিয়ন হয়ে রাশিয়া নিয়ে যেতে চাই।’ কমলাপুর স্টেডিয়ামে আজ শুরু হচ্ছে পাঁচ দলের এই টুর্নামেন্ট। সন্ধ্যা সোয়া ৭টায় ভুটানের বিপক্ষে লড়বে স্বাগতিক বাংলাদেশ। তার আগে সোয়া ৩টায় দিনের প্রথম ম্যাচে লড়বে ভারত ও নেপাল।

সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ মানেই দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মিলনমেলা। মেয়েদের বয়সভিত্তিক সাফে ভারত, নেপাল এবং ভুটানের বিপক্ষে খেলার অভিজ্ঞতায় আছে বাংলাদেশের। এবারই প্রথম নারী সাফে অংশ নিচ্ছে ইউরোপিয়ান কোনো দেশ। টুর্নামেন্টে খেলতে শনিবার ঢাকায় পা রেখেছেন রাশিয়ান মেয়েরা। রুশকন্যাদের বিপক্ষে ম্যাচ নিয়েই যত আগ্রহ লাল-সবুজের দলটির।

ঢাকায় খেলতে আসলেও বাংলাদেশ নিয়ে তেমন কিছুই বলতে পারলেন না রাশিয়ান কোচ, ‘বাংলাদেশ দল সম্পর্কে কিছু বলা খুবই কঠিন আমাদের কাছে। কারণ এই দল সম্পর্কে আমাদের কাছে কোনো তথ্য নেই।’ মেদভেদ যোগ করেন, ‘আমাদের দলের জন্য চমৎকার টুর্নামেন্ট হতে যাচ্ছে। এশিয়া অঞ্চলে আমরা কখনোই কোন টুর্নামেন্টে অংশ নেইনি। এমন টুর্নামেন্টের জন্য আমরা অপেক্ষা করছিলাম।’ ঢাকার ট্রাফিক নিয়ে কোচের মন্তব্য, ‘অনেক মানুষ এবং এখানে অনেক ট্রাফিক জ্যাম। সময় মেনে অনুশীলনে যাওয়া এবং ম্যাচে অংশ নেয়াই আমাদের এখন কাজ।’ দুই মাস আগে এই টুর্নামেন্টে অংশ নেয়ার আমন্ত্রণপত্র পেয়ে তুরস্কে অনুশীলন ক্যাম্প করেছে রাশিয়া। দুটি প্রস্তুতি ম্যাচও খেলেছে তারা। ঢাকার টুর্নামেন্টে রাশিয়া ছাড়াও বাংলাদেশ ও ভারতের মতো দল রয়েছে।

পাঁচ দলের এ প্রতিযোগিতায় সর্বোচ্চ পয়েন্ট অর্জনকারী দলের হাতে উঠবে ট্রফি। সর্বশেষ অনূর্ধ্ব-২০ নারী সাফে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল বাংলাদেশ। এর পর একই বয়সের এএফসি বাছাইপর্বে ইরানের কাছে হেরে স্বপ্ন ভাঙে বাংলাদেশের। সেই দলে থাকা তিন ফুটবলার তৃষ্ণা রানী, সুরভি আখন্দ প্রীতি ও নুসরাত জাহান মিতু আছেন অনূর্ধ্ব-১৭ সাফে। একেবারেই নতুন মুখ ফরোয়ার্ড সাগরিকা ও ডিফেন্ডার নাদিয়া আক্তার জিতু। প্রতিযোগিতাকে সামনে রেখে গত জানুয়ারি থেকে প্রস্তুতি নেয় বাংলাদেশ। বয়সভিত্তিক পর্যায়ে সফল হলেও রাশিয়া আছে বলে চ্যালেঞ্জটা বেশি। বাংলাদেশ কোচ গোলাম রব্বানী ছোটন রাশিয়া ম্যাচেই দেখতে চান দলের স্ট্যান্ডার্ড, ‘আমরা দক্ষিণ এশিয়ায় যে স্ট্যান্ডার্ডে খেলি, আর ইউরোপের স্ট্যান্ডার্ড তো এক নয়। রাশিয়ার বিপক্ষে খেললে অবশ্যই কোন স্ট্যান্ডার্ডে আছি, সেটা বেরিয়ে আসবে। তবে এখানে আমাদের ভালো দিক, আমাদের মেয়েরা যে প্রতিনিয়ত পারফর্ম করছে, আমাদের কোথায় উন্নতি হয়েছে এবং ভালো টিমগুলোর সঙ্গে খেলতে গেলে কোথায় উন্নতি করা উচিত, সেটা আমরা ভালোভাবে জানতে পারব। ইউরোপের একটা দলের বিপক্ষে খেলব- এটা ভেবে মেয়েরা শিহরিত, চাপ অনুভব করছে না।’

কোচের মতো অধিনায়ক রুমা আক্তারও রাশিয়া ম্যাচ নিয়ে রোমাঞ্চিত, ‘রাশিয়া হচ্ছে ইউরোপের দল। ওদের কাছ থেকে আমাদের অনেক কিছু শেখার আছে। আশা করছি, ভালো কিছু করব। যেহেতু ফুটবল, হার-জিত আছেই। এটা মাঠেই দেখা যাবে, আমরা লড়াই করব, চেষ্টা করব জেতার।’

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত