ঢাকা ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

ব্যাটিংবান্ধব উইকেট দেখছেন দুই কোচ

ব্যাটিংবান্ধব উইকেট দেখছেন দুই কোচ

চট্টগ্রাম জহুর আহমেদ স্টেডিয়ামে গতকাল বাংলাদেশ দলের অনুশীলন তখন প্রায় শেষের পথে। রোদের উত্তাপ বাড়তেই সরানো হলো পিচের কভার। শুরুতে খানিক ধন্ধেই পড়তে হলো। কারণ কভার হিসেবে ব্যবহৃত চট ও পিচ আলাদা করার উপায় ছিল না তেমন। শুষ্ক ও ধূসর উইকেটে ঘাসের উপস্থিতি নেই বললেই চলে। এমন উইকেট যে ব্যাটিং স্বর্গ হয়ে উঠতে পারে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। দুই দলের কোচের ভাবনাও তেমনই। টি-টোয়েন্টি সিরিজ শুরুর আগের দিন সকালে অনুশীলন করেছে বাংলাদেশ। তারা চলে যাওয়ার পর দুপুরে আসে আয়ারল্যান্ড। অনুশীলন শুরুর আগেই উইকেট পরখ করে নেন বাংলাদেশের প্রধান কোচ চান্দিকা হাথুরুসিংহে। আইরিশ কোচ হাইনরিখ মালানও দেখে নেন প্রথম ম্যাচে কেমন উইকেটে খেলা হবে। জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে আজ শুরু হচ্ছে বাংলাদেশ-আয়ারল্যান্ডের টি-টোয়েন্টি সিরিজ। ২৯ ও ৩১ মার্চ হবে বাকি দুটি ম্যাচ। এরপরে ঢাকার মিরপুরে ৪ এপ্রিল থেকে শুরু হবে একমাত্র টেস্ট ম্যাচটি।

সিলেটে ওয়ানডে সিরিজে ঘাসের উইকেটের সুবিধা কাজে লাগিয়ে দারুণ বোলিং করেন বাংলাদেশের পেসাররা। খারাপ করেননি আইরিশরাও। তবে চট্টগ্রামে তাদের জন্য যে ভিন্ন কিছু অপেক্ষা করতে তা স্পষ্ট প্রথম ম্যাচের আগের দিন দুই দলের প্রধান কোচের সংবাদ সম্মেলনে। ওয়ানডের মতো টি-টোয়েন্টির উইকেট তেমন গতিময় হবে না মনে করেন বাংলাদেশ কোচ, ‘দেখে মনে হচ্ছে, ব্যাটিং বান্ধব উইকেট। কারণ উইকেটে আমাদের পছন্দমতো যথেষ্ট ঘাস নেই। আমার মনে হয়, এখানে কিছু করার নেই। আমার মতে, মাঝের পিচগুলোয় ঘাস নেই কারণ এখানে অনেক ক্রিকেট খেলা হয়। আশা করি, ট্রু উইকেট হবে। তবে আমার মনে হয় না, এই মুহূর্তে খুব বেশি গতিময় পিচ এটি।’

আয়ারল্যান্ডের কোচ অবশ্য ব্যাটিং বান্ধব উইকেট দেখেই খুশি। দর্শকদের মনের খোরাক মেটাতে টি-টোয়েন্টিতে এমন উইকেট থাকাই স্বাভাবিক বলে মনে করেন মালান, ‘টি-টোয়েন্টির উইকেটের কথা চিন্তা করলে, রানের কথাই ভাবেন, তাই নয় কি? মানুষ এটিই দেখতে চায়। এই উইকেট দেখে সিলেটের চেয়ে বেশি ব্যাটিং বান্ধব মনে হচ্ছে। এটি বেশ শক্ত মনে হচ্ছে। আমার মনে হয়, বোলারদের জন্য কঠিন চ্যালেঞ্জ হতে চলেছে এই উইকেট। আমরা কীভাবে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট খেলতে চাই, সেই ব্যাপারে কথা বলেছি। আমরা জবাব দিতে চাই, আক্রমণাত্মক ব্র্যান্ডের ক্রিকেট খেলতে চাই। এটি আমাদের খেলোয়াড়দের ওপর। শুধু বললেই হবে না। করতেও হবে। তো দারুণ ক্রিকেট খেলতে থাকা একটি দলের বিপক্ষে ভালো চ্যালেঞ্জ হতে চলেছে।’

চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরি স্টেডিয়াম বরাবরই রান প্রসবা। এই মাঠে এখন পর্যন্ত হওয়া ২১ টি-টোয়েন্টিতে ম্যাচে ১১টিতেই আগে ব্যাট করা দল দেড়শ ছাড়ানো স্কোর দাঁড় করেছে। ২০১৪ বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে এই মাঠের সর্বোচ্চ ১৯৬ রান করে দক্ষিণ আফ্রিকা।

ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডেতে ভালো না করতে পারলেও টি-টোয়েন্টিতে সিরিজ জিতেছে টাইগাররা। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষেও সেই আক্রমণের ধারা বজায় রেখেছে তার শিষ্যরা। হাথুরুসিংহে বলেন, ‘আমরা এমন একটি দল তৈরি করতে চাই যেখানে ভয় না পেয়ে ক্রিকেটাররা তাদের সর্বোচ্চটা দিয়ে খেলতে পারবে। একটি দুটি ম্যাচ খারাপ করলে যে চাপ তৈরি হয়, সেটি যেন না থাকে এমন একটি ড্রেসিংরুম তৈরি করতে চাই, ‘আমি বলতে চাই কেউ যদি খারাপও করে সে যেন ব্যর্থতার কথা না ভেবে নিজের মতো করে খেলতে থাকে। এটিকে আমি একটি দলের জন্য বড় পরিবর্তন হিসেবে দেখি। আমি এটিই প্রতিষ্ঠা করতে চাই।’

বাংলাদেশ দলের ভেতরে-বাইরে বইছে অন্যরকম আবহাওয়া, এটা কি নতুন যুগের শুরু? এমন প্রশ্নের জবাবে হাথুরু বলেন, ‘আমি এটাকে নতুন যুগ হিসেবে দেখছি না। আমরা সামনেও এভাবেই নিজেদের ক্রিকেট খেলতে চাই। আমরা আক্রমণাত্মক ক্রিকেট খেলবো না। আক্রমণাত্মক ক্রিকেটের যে ব্যাখ্যা দিয়েছি, আমি সবসময় বলি এটার মানে এই না যে গিয়েই মারতে হবে। সবদিক থেকেই আক্রমণাত্মক। দল নির্বাচনে, ফিল্ডিং প্লেসিংয়ে, বডি ল্যাঙ্গুয়েজে, ফিল্ডিংয়ে, ব্যাটিংয়ে আক্রমণাত্মক। ট্যাকটিক্যালি আমরা আক্রমণাত্মক থাকবো।’ ক্রিকেটারদের নিয়ে কোচ বলেন, ‘আমি তাদের মানসিক নিরাপত্তা আনার চেষ্টা করছি। একজন ক্রিকেটার খারাপ করলে তার দক্ষতা কমে যায় না। আগের পারফরমেন্স কী ছিল জানি না। কিন্তু খেলোয়াড়দের দক্ষতা আগের মতোই রয়েছে। আমি কেবল মানসিক উন্নতি নিয়ে কাজ করেছি। এটিই আমার লক্ষ্য।’

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত