সেই সাদ এখন ‘সর্বনাশা’

বাংলাদেশ ০:১ সিশেলস

প্রকাশ : ২৯ মার্চ ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  স্পোর্টস রিপোর্টার

২০১৯ সালের অক্টোবরে বিশ্বকাপ বাছাই ম্যাচে সল্টলেকের যুবভারতীতে জামাল ভূঁইয়ার ফ্রিকিকে দারুণ এক হেডে ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশকে এগিয়ে দিয়েছিলেন সাদউদ্দিন, শেষ পর্যন্ত ম্যাচ ড্র হয় ১-১ গোলে। কিন্তু এরপর থেকে ‘নায়ক’ সাদউদ্দিন ধীরে ধীরে পরিণত হয়েছেন খলনায়কে! ২০২১ সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে নেপালকে পেনাল্টি উপহার দেয় বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কায় চারজাতি টুর্নামেন্টেও স্বাগতিকদের সে উপহার দিয়েছিল; সবশেষ গতকাল ঘরের মাঠ সিলেটে দিল সিশেলসকে। প্রতিবারই পেনাল্টি উপহার দেয়া খেলোয়াড়টি সাদউদ্দিন! গতকাল সিলেট স্টেডিয়ামে তার ভুলে পাওয়া পেনাল্টি কাজে লাগিয়ে সিশেলস ১-০ গোলে হারায় বাংলাদেশকে। দ্বি-পাক্ষিক সিরিজের প্রথম ম্যাচে একই ব্যবধানে জিতেছিল হাভিয়ের কাবরেরার দল। ফলে টানা দুই ম্যাচ জেতা হয়নি বাংলাদেশের, জেতা হলো না সিরিজও।

সাদউদ্দিনের অবিশ্বাস্য ভুলে পেনাল্টি পায় সিশেলস, বক্সে লাফিয়ে ওঠা বল ক্লিয়ার করতে গিয়ে ড্যারিল লুইসের মাথায় লাথি মেরে বসেন তিনি। মাইকেল মানচিনে দারুণ স্পট কিকে এগিয়ে নেন সিশেলসকে। এই গোলই গড়ে দেয় ম্যাচের ভাগ্য, দুই ম্যাচের সিরিজে সিশেলসকে ড্র করার পথ। সিশেলসের বিপক্ষে দ্বিতীয় ম্যাচে হেরে যাওয়ার পর তাই অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া উগরে দিলেন ক্ষোভ; ম্যাচ শেষের প্রতিক্রিয়ায় বারবার একই ভুলের পুনরাবৃত্তির প্রসঙ্গ টেনে অতীত থেকে শিক্ষা নেয়ার কথা বলেন জামাল, ‘এবার একই কাজ হয়েছে, আমরা স্টুপিডের মতো একটা পেনাল্টি দিয়েছি, যে কারণে সিশেলস গোল করে জিতেছে। মালদ্বীপের মতো, শ্রীলঙ্কার মতো আমরা নির্বুদ্ধিতার পুনরাবৃত্তি করছি। এ ম্যাচে কোচ কিছু পরিবর্তন করেছে, কোচ নতুন কিছু খেলোয়াড়কে সুযোগ দিয়েছে, ওরা পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে পারেনি, বিশেষ করে প্রথমার্ধে আমাদের খেলা আপ টু দা মার্ক ছিল না, আমাদের আরো ভালো খেলা উচিত ছিল।’ ফিফা র‌্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশের চেয়ে সাত ধাপ পিছিয়ে সিশেলস। তবে এই সিরিজের ড্রয়ে তাদের উন্নতি হবে, পিছিয়ে যাবে বাংলাদেশ। জামাল মনে করেন ১৯৯তম স্থানে থাকা পূর্ব আফ্রিকার দলটির বিপক্ষে তাদের জেতা উচিত ছিল।’

একটি ‘শৌখিন’ দলের কাছে হেরে গেল বাংলাদেশ। এই ম্যাচের আগে ২০১৯ সালের পর টানা দুই ম্যাচ জয়ের স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন জামালরা, কিন্তু স্বপ্ন পূরণে ব্যর্থ বাংলাদেশ দল। যদিও আগের ম্যাচের তুলনায় বেশি সুযোগ তৈরি করলেও গোল পায়নি। প্রথম ১৫ মিনিটে প্রতিপক্ষ গোলরক্ষকের পরীক্ষা নিতে পারেনি বাংলাদেশ। একাদশে দুটি পরিবর্তন রেখে সেশেলসের বিপক্ষে মাঠে নামে বাংলাদেশ। নিয়মিত অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া ও আমিনুর রহমান সজীব নেই। তাদের জায়গায় রবিউল হাসান ও সুমন রেজা একাদশে। কিন্তু বিরতির আগ পর্যন্ত সেশেলসের রক্ষণে বারবার ভয় ধরালেও কাঙ্খিত গোলের দেখা পায়নি লাল-সবুজ দল। গোলশূন্য স্কোরলাইন রেখেই প্রথমার্ধের শেষে ড্রেসিংরুমে যায় দুই দলই। বিরতির পর একপর্যায়ে জামাল ভূঁইয়া-এলিটা কিংসলে-মতিন মিয়া মাঠে নামেন। আক্রমণে তেজ আরও বাড়ে। কিন্তু কাঙ্ক্ষিত গোলের দেখা মিলেনি। বরং ৬০ মিনিটে সেশেলস এগিয়ে যায়। ডেরেল বারট্রান্ডকে মাথায় পা তুলে আঘাত করলে ভুটানের রেফারি স্পটকিকের নির্দেশ দেন। মাইকেল ম্যানসিয়েন সহজেই গোলরক্ষক আনিসুর রহমান জিকোর বিপরীত দিক দিয়ে লক্ষ্যভেদ করেন। গোল শোধে আপ্রাণ চেষ্টা করতে থাকে বাংলাদেশ। শেষ পর্যন্ত হার নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয়েছে হাভিয়ের কাবরেরার দলকে।