‘কিছু’ জায়গায় পরীক্ষার টেস্ট

প্রকাশ : ০৯ এপ্রিল ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  স্পোর্টস রিপোর্টার

টি-টোয়েন্টিতে ইংল্যান্ডকে হোয়াইটওয়াশ করার পর আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে সাদা বলের ক্রিকেটে দাপুটে পারফরম্যান্স। এরপর সাড়ে তিন দিনের মধ্যে টেস্ট জিতে প্রায় দেড় মাসের ব্যস্ত সূচির ইতি টানল বাংলাদেশ। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ঢাকা টেস্টে ৭ উইকেটে জিতেছে বাংলাদেশ। ওয়ানডে, টি টোয়েন্টি সিরিজের পর টেস্ট সিরিজে জয় পেয়েছে টাইগাররা। ইতিবাচক এই পারফরম্যান্সের পর সাকিব আল হাসান মনে করিয়ে দিলেন, এমন ভালো সময়ের আভাস দিয়েছিলেন তিনি আগেই। ম্যাচ শেষে অধিনায়ক বলেছেন, এই ম্যাচে কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার চেষ্টা করেছেন তারা। টেস্ট অধিনায়ক সাকিব বলেছেন, ‘সাধারণত আমরা এমন উইকেটে খেলি না। আয়ারল্যান্ডকে কৃতিত্ব দিতে হবে। তারা সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছে। ভালো লড়াই করেছে। তাইজুল খুবই ভালো বোলিং করেছে। দ্বিতীয় ইনিংসে পেসাররা ভালো করেছে। আমি মনে করি, অনেক জায়গায় উন্নতির সুযোগ আছে আমাদের।’ দুই ইনিংসে মাত্র ১৬ ওভার বোলিং করা সাকিব বলেছেন, ‘ম্যাচটা ছিল আমাদের জন্য কিছু জায়গায় পরীক্ষা-নিরীক্ষার ভালো সুযোগ। আমরা চেষ্টা করেছি। কিছু জায়গায় কাজ করেছে, কিছু করেনি। আমি মনে করি, আমরা অনেক ইতিবাচক ছিলাম। উইকেটের সঙ্গে মানিয়ে নিয়ে ব্যাটিং করার চেষ্টা করেছি।’ টেস্ট শুরুর আগে বাংলাদেশ দলের টিম ম্যানেজমেন্ট থেকে আক্রমণাত্মক ক্রিকেটের বার্তা দেওয়া হয়েছিল। সাকিব, লিটন দাস, মুশফিকুর রহিমরা আক্রমণাত্মক ক্রিকেটই খেলেছেন। সাকিবের মতে, ম্যাচটা ছিল তাদের এপ্রোচ পরিবর্তনের। সেটা তারা পেরেছেন। টি-টোয়েন্টি ও টেস্ট অধিনায়ক বলেছেন, ‘এই ম্যাচে আমাদের এপ্রোচ কেমন হয় সেটা দেখতে মুখিয়ে ছিলাম। এই ম্যাচে সেটা প্রয়োগ করা গেছে। এটাকে (মিরপুর শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামের উইকেট) টেস্টের জন্য আদর্শ উইকেট বলছি না, তবে ব্যাটিং করার জন্য ভালো উইকেট ছিল।’

গত ডিসেম্বরে ভারতের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ দিয়ে ২০২২ সাল শেষ করে বাংলাদেশ। ওয়ানডেতে ভারতকে সিরিজ হারালেও টেস্টে দুই ম্যাচেই হারে তারা। তবে দুটোতেই দারুণ লড়াই করে সাকিবের দল। সেই সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচ শেষে বাংলাদেশ অধিনায়ক আশা প্রকাশ করেছিলেন, সামনের বছর অর্থাৎ ২০২৩ সালে তিন সংস্করণেই ভালো করবেন তারা। ওই সিরিজের পর ফের মার্চে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নামে বাংলাদেশ। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডেতে ১-২ ব্যবধানে হারলেও টি-টোয়েন্টিতে তিন ম্যাচেই জয় পায় স্বাগতিকরা। এরপর আইরিশদের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে পরপর দুই ম্যাচে সাড়ে তিনশ ছুঁইছুঁই স্কোর গড়ে বাংলাদেশ।

টি-টোয়েন্টিতে প্রথম দুই ম্যাচে দাঁড় করায় দুইশ ছাড়ানো স্কোর। এক ম্যাচ হাতে রেখেই জিতে নেয় সিরিজ। শেষ ম্যাচে অবশ্য হেরে যায় তারা। তবে দুই সিরিজেই সীমিত ওভারের ক্রিকেটে সামনের দিনগুলোতে আগ্রাসী ব্যাটিংকে দলের পাথেয় করার বার্তা মেলে। দেড় মাসের কম সময়ের মধ্যে ১৩ ম্যাচ খেলে ৯টিতেই জিতেছে বাংলাদেশ। দলের এই সাফল্যে অবাক হননি টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক। বছরের বাকি সময়ে এই ধারাবাহিকতা ধরে রাখার তাগিদ তার। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট জিতে সংবাদ সম্মেলনে সাকিব মনে করিয়ে দেন তার আগে বলা কথাটি, ‘আগেই বলছিলাম, ২০২৩ সাল আমাদের খুব ভালো যাবে। যেহেতু গুরুত্বপূর্ণ বছর... বিশ্বকাপ আছে, এশিয়া কাপ আছে। অবশ্যই চাইব, পরের ছয় মাস যেন আমরা ভালোভাবে খেলতে পারি। প্রথম ছয় মাসের চার মাস খুব ভালো গেছে। অর্ধেক বছর আমরা খুব ভালো খেলেছি। এটা অবশ্যই চেষ্টা থাকবে ধারাবাহিকভাবে করার। যেহেতু আমরা বেশিরভাগ সময় ওয়ানডে খেলব... আমরা মনে করি, এটা এমন এক ফরম্যাট যেটায় আমরা খুব ভালো একটা দল।’

এই বছর ভালো করার বিশ্বাস পাওয়ার পেছনে মানসিকতার পরিবর্তনের কথা বলেছেন সাকিব। আর দলের মধ্যে এই পরিবর্তন আনার প্রক্রিয়াটা শুরু হয়েছে গত বছরের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ থেকে, ‘মানসিক উন্নতিটা আমার মনে হয় সব চেয়ে বড় উন্নতি ছিল। আমি যদি দেখি, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সময় যখন শেষ ম্যাচ খেলেছি, তখনই আমরা আলোচনা করেছি যে, আসলে আমরা হয়তো এই বিশ্বকাপের আগ পর্যন্ত নিজেদের অনেক ছোট দল মনে করতাম। আসলে আমরা ছোট দল ছিলাম না। আমরা যদি বিশ্বাস রেখে যেতাম, হয়তো সেমি-ফাইনাল খেলতাম। হয়তো ওই জায়গায় আমাদের একটু ঘাটতি ছিল। এরপর থেকে আমাদের চিন্তা ছিল ওই জায়গায় আমরা পরিবর্তনটা আনব। বিশেষত টি-টোয়েন্টি দলে যারা ছিল, মানসিক এই পরিবর্তন তাদের সবার ভেতর আছে।’