ঢাকা ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

মেসি-রোনালদোর মতো হবেন হলান্ড

মেসি-রোনালদোর মতো হবেন হলান্ড

সাম্প্রতিক সময় আর্লিং হলান্ড আর গোল যেন সমার্থক শব্দ। ম্যানচেস্টার সিটি তারকা মাঠে নামবেন আর গোল পাবেন না, তা যেন হতেই পারে না। দুর্দান্ত ছন্দে এগিয়ে চলা এই ফরোয়ার্ড চোট কাটিয়ে ফিরে গত শনিবার প্রিমিয়ার লিগে সাউদ্যাম্পটনের বিপক্ষে ৪-১ ব্যবধানে জেতা ম্যাচে জোড়া গোল করে এক আসরে সবচেয়ে বেশি গোলের রেকর্ড ছোঁয়ার আরো কাছে চলে গেছেন। রেকর্ডটি এখন যার, সেই অ্যালান শিয়েরারের বিশ্বাস, মৌসুমে ৬০ গোল করতে পারেন হলান্ড। গত জুনে দলটিতে যোগ দিয়ে ২২ বছর বয়সি এই ফুটবলার মৌসুমে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে এখন পর্যন্ত ৪৪ গোল করেছেন ৩৮ ম্যাচে। ইউরোপের শীর্ষ পাঁচ লিগে খেলা ফুটবলারদের মধ্যে যা দ্বিতীয় স্থানে থাকা পিএসজির কিলিয়ান এমবাপের (৩৫ ম্যাচে ৩১ গোল) চেয়ে ১৩টি বেশি!

হলান্ড ৪৪ গোলের ৩০টি প্রিমিয়ার লিগে করেছেন ২৭ ম্যাচে, যা কোনো খেলোয়াড়ের দ্রুততম। প্রিমিয়ার লিগ যুগে এক আসরে শিয়েরার ও অ্যান্ডি কোলের ৩৪ গোলের যৌথ রেকর্ড ছুঁতে হলান্ডের চাই আর ৪টি। ক্রীড়া ওয়েবসাইট দা অ্যাথলেটিকে গতকাল নিজের কলামে শিয়েরার লিখেছেন, ফিট থাকলে রেকর্ডটি ভেঙে দেয়া সময়ের ব্যাপার হলান্ডের জন্য। এমনকি এই তারকার আরো বড় মাইলফলক ছোঁয়ার সম্ভাবনা দেখছেন ইংলিশ কিংবদন্তি, ‘সে ফিট থাকতে পারলে প্রিমিয়ার লিগে আমার ও অ্যান্ডি কোলের এক মৌসুমে ৩৪ গোলের রেকর্ড ভেঙে দেবে। ৩৮ ম্যাচে ৪৪ গোল, সব আসর মিলিয়ে তার বর্তমান গোলের যে গড় হার, সে ৫০ গোল পেরিয়ে যাবে। কে জানে, ৬০ গোল ও ডিক্সি ডিনের রেকর্ডের কথা বলতে পারি। ভয়ঙ্কর।’ প্রিমিয়ার লিগের ইতিহাসে অভিষেক মৌসুমে ৩০ গোলের কৃতিত্ব আগে ছিল কেবল অ্যান্ড্রু কোল ও কেভিন ফিলিপসের।

ইংল্যান্ডের শীর্ষ লিগের দীর্ঘ ইতিহাসে এক আসরে ৪০ বা এর বেশি গোল করতে পেরেছেন মাত্র আট জন। সবশেষ ১৯৬০-৬১ মৌসুমে চেলসির হয়ে ৪১ গোল করেছিলেন জিমি গ্রিভস। ১৯২৭-২৮ মৌসুমে এভারটনের হয়ে রেকর্ড ৬০ গোল করেছিলেন ডিক্সি ডিন নামে পরিচিত উইলিয়াম রাল্ফ ডিন। চলতি মৌসুমে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে এখনো সম্ভাব্য ১৬ ম্যাচ খেলতে পারে সিটি। হলান্ডের গোল সংখ্যা বাড়িয়ে নেয়ার পরবর্তী সুযোগ আগামী মঙ্গলবার, চ্যাম্পিয়ন্স লিগে কোয়ার্টার-ফাইনালের প্রথম লেগে বায়ার্ন মিউনিখের বিপক্ষে।

তবে লিওনেল মেসি ও ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর সঙ্গে তুলনায় আসতে হলেও এখনো অনেক অনেক পথ পাড়ি দিতে হবে হলান্ডকে। তবে যে পথ ধরে ছুটছেন তিনি, তাতে মুগ্ধ পেপ গার্দিওলা। ম্যানচেস্টার সিটি কোচের মতে, এই পথই হলান্ডকে একদিন পৌঁছে দিতে পারে মেসি-রোনালদোর ঠিকানায়। ফুটবলার হিসেবে একজনের সঙ্গে আরেকজনের তুলনার নিক্তি অবশ্য অনেক। তবে গার্দিওলা দেখছেন হলান্ডের গোল করার সামর্থ্য। গোল করার ধারাবাহিকতায় ফুটবল ইতিহাসেই চূড়ার দিকে মেসি ও রোনালদো। এখানে হলান্ডের শুরুটাও হয়েছে অবিশ্বাস্য। মেসি-রোনালদোর ক্যারিয়ারে অর্জনের সংখ্যা গুণে শেষ করা কঠিন। চোখধাঁধানো ক্যারিয়ারে দুজনের গোলই পেরিয়ে গেছে ৮০০। তবে হলান্ডের ক্যারিয়ারের শুরুটাও চোয়াল ঝুলিয়ে দেয়ার মতো। ২০০ গোল করে ফেলেছেন তিনি ২৪৪ ম্যাচ খেলেই! গোল স্কোরিংয়ে মেসি-রোনালদোর সম্ভাব্য উত্তরসূরি হিসেবে তার নাম তাই উচ্চারিত হচ্ছে জোরেসোরেই। সেই আলোচনার পালে আরো জোর হাওয়া বইয়ে দিলেন গার্দিওলা। অন্য অনেক গ্রেটের সঙ্গে মেসি-রোনালদোর মূল পার্থক্য বছরের পর বছর শুধু মান ধরে রাখাই নয়, বরং নিত্য নিজেকে ছাড়িয়ে যাওয়ার তাড়নায়। তৃপ্ত না হয়ে ক্লান্তিহীন ছুটে চলার সেই মানসিকতা হলান্ডের ভেতরও দেখতে পান তিনি।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত