কিংস-মোহামেডান সেমিফাইনাল

প্রকাশ : ১৯ এপ্রিল ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  স্পোর্টস রিপোর্টার

প্রিমিয়ার লিগে রীতিমত ধুঁকছে মোহামেডান। সেই দলটি কিনা দুরন্ত ফুটবল খেলে উঠে গেছে ফেডারেশন কাপের সেমি ফাইনালে! কুমিল্লার শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্টেডিয়ামে গতকাল মঙ্গলবার তৃতীয় কোয়ার্টার ফাইনালে তারা ৪-১ গোলে হারায় চট্টগ্রাম আবাহনীকে। দুই গোলে এগিয়ে থাকার স্বস্তি নিয়ে বিরতিতে যাওয়া, দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে গোল পাওয়া-ম্যাচ জুড়ে এভাবে দাপুটে ফুটবলের পসরা মেলল সাদা-কালোরা। গত আসরেও শেষ চারে উঠেছিল মোহামেডান। রহমতগঞ্জ মুসলিম ফ্রেন্ডস অ্যান্ড সোসাইটির বিপক্ষে শুরুতে এগিয়ে যাওয়ার পর দ্বিতীয়ার্ধে জোড়া গোল হজম করে ছিটকে গিয়েছিল তারা। টুর্নামেন্টে নিজেদের দশম শিরোপার সবশেষটি ২০০৯ সালে জিতেছিল মোহামেডান। মুকুট ফিরে পাওয়ার পথটা মোটেও মসৃণ নয় তাদের জন্য, ৯ মে প্রথম সেমি ফাইনালে প্রতিপক্ষ শক্তিশালী বসুন্ধরা কিংস। ফেডারেশন কাপে সেটি হবে দু’দলের দ্বিতীয় লড়াই; এর আগে ২০১৮ আসরে নিজেদের অভিষেক মৌসুমে গ্রুপ পর্বে প্রথম ম্যাচেই কিংস ৫-২ গোলে জিতেছিল। আর সবশেষ ২০২১-২২ আসরে দু’দল এক গ্রুপে পড়লেও কমলাপুর বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহী মোস্তফা কামাল স্টেডিয়ামের টার্ফ খেলার অনুপোযুক্ত দাবি করে টুর্নামেন্ট থেকে নাম প্রত্যাহার করে নেয় কিংস। গত তিন আসরের মধ্যে দুটিতে চ্যাম্পিয়ন কিংস, এবার তারা মুকুট ফিরে পেতে মরিয়া। চট্টগ্রাম আবাহনী প্রথম অর্ধে সেভাবে রক্ষণ ছেড়ে বেরিয়েই আসতে পারল না। অন্যদিকে প্রিমিয়ার লিগে ধুঁকতে থাকা মোহামেডান শুরু থেকে খেললো বেশ গোছাল ফুটবল। বিরতির আগে দুটি গোলও পেয়ে গেল আলফাজ আহমেদের হাত ধরে নতুন শুরুর স্বপ্ন দেখা সাদা-কালো জার্সিধারীরা। ২০ মিনিটে এমানুয়েল সানডে ও শাহরিয়ার ইমনের দারুণ বোঝাপড়ায় এগিয়ে যায় মোহামেডান; বাঁ দিক থেকে উড়ে আসা ক্রস চট্টগ্রাম আবাহনীর এক ডিফেন্ডার হেড করার পর পেয়ে যায় বক্সের বাঁ দিকে ইমন। তার কাট ব্যাকে নিখুঁত টোকায় লক্ষ্যভেদ করেন এমানুয়েল। ৩৪ মিনিটে মোজাফ্ফর মোজাফ্ফরভের কর্নার প্রতিপক্ষ ডিফেন্ডারের মাথা ছুঁইয়ে জালে জড়ালে ব্যবধান হয় দ্বিগুণ।

দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে ব্যবধান আরও বাড়িয়ে নেয় মোহামেডান। মোজাফ্ফরভের লম্বা পাস মিঠু ভলি করার পর গোলমুখে আনমার্ক থাকা সুলেমানে দিয়াবাতে ভলিতে লক্ষ্যভেদ করেন, আসরে এটি তার দ্বিতীয় গোল। গ্রুপ পর্বে নিজেদের প্রথম ম্যাচে রহমতগঞ্জের বিপক্ষে প্রথম গোলটি করেছিলেন মালির এই ফরোয়ার্ড। ৫৩ মিনিটে দারুণ সুযোগ নষ্ট করেন এমানুয়েল। ডান দিক থেকে বক্সে আড়াআড়ি ক্রস বাড়িয়েছিলেন ইমন। ঝাঁপিয়ে পড়া গোলরক্ষককে ফাঁকি দিয়ে বল চলে যায় বামে থাকা এমানুয়েলের পায়ে, কিন্তু ফাঁকা পোস্টেও লক্ষ্যভেদ করতে পারেননি তিনি। ৬৯ মিনিটে এক ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে বক্সের উপর কিছুটা ফাঁকা জায়গা তৈরি করে নেন দিয়াবাতে, এরপর ডান পায়ের বুলেট শটে জাল খুঁজে নিলেন। মোহামেডানের জয়ও নিশ্চিত হয়ে গেল অনেকটাই। ৭৬ মিনিটে বক্সে ফাউলের শিকার হলেন ক্যান্ডি অগাস্টিন, বাজল পেনাল্টির বাঁশি। চট্টগ্রাম আবাহনীর এই ফরোয়ার্ডের ‘পানেনকা পেনাল্টি শট’ প্রায় ঠেকিয়ে দিতে বসেছিলেন মোহামেডান গোলরক্ষক সুজন। কিন্তু বল তার গ্লাভস ছুঁয়ে জালে জড়ায়। ব্যবধান কমলেও শেষ রক্ষা হয়নি চট্টগ্রামের দলটির।