৩৩ বছরের আক্ষেপ ঘুচবে আজ?

ম্যারাডোনার হাত ধরে চার মৌসুমের মধ্যে দুইবার লিগ চ্যাম্পিয়ন, বাকি দুইবার রানার্সআপ। এরপর একেকটি মৌসুম কেটে যায়, নাপোলির আরেকটি লিগ জয়ের অপেক্ষা আর ফুরায় না। অবশেষে তিন দশকের বেশি সময় পর ফের সিরি-এ শিরোপা জয়ের খুব কাছে নেপলসের ক্লাবটি। সেই উপলক্ষ্যে উৎসবের রঙে সাজছে ইতালির দক্ষিণ অঞ্চলের শহরটি।

৩৩ বছরের মধ্যে প্রথম সিরি-এ শিরোপা জয়ের দ্বারপ্রান্তে আছে ডিয়াগো ম্যারাডোনার ক্লাব নাপোলি। যে মুহূর্তের জন্য বছরের পর বছর কেটেছে নেপলসের দলটি, সেই অপেক্ষার অবসান হতে পারে আজই, করতে পারে উৎসব। বাংলাদেশ সময় আজ রাত ৭টায় লিগ টেবিলের ১৪ নম্বর দল সালেরনিতানার বিপক্ষে ঘরের মাঠে খেলবে নাপোলি। যদি তারা এই ম্যাচে জিততে পারে, এবং এর আগে বিকাল সাড়ে ৪টায় ইন্টার মিলানের মাঠে ল্যাজিও পয়েন্ট হারায়, তাহলে শিরোপা নিশ্চিত হয়ে যাবে নাপোলির। তাহলে প্রথম দল হিসেবে ৬ ম্যাচ বাকি থাকতে ইতালির শীর্ষ লিগের শিরোপা জয়ের কীর্তিও গড়বে দলটি। নিজেদের দুটি লিগ শিরোপার সবশেষটি নাপোলি জিতেছিল সেই ১৯৮৯-৯০ মৌসুমে, ম্যারাডোনার হাত ধরে। অবশেষে তিন দশকের বেশি সময়ের অপেক্ষা ফুরাতে যাচ্ছে তাদের। তবুও সতর্ক দলটির কোচ লুসিয়ানো স্পাল্লেত্তি, ‘আমি আগাম উদযাপন পছন্দ করি না। যদি আমরা সবাই একসঙ্গে উদযাপন করি, তাহলে আমাদের আনন্দ দ্বিগুণ আনন্দ হবে।’

৩১ ম্যাচে নাপোলির পয়েন্ট ৭৮। দ্বিতীয় স্থানে থাকা লাৎসিওর চেয়ে এগিয়ে আছে ১৭ পয়েন্টে। এখান থেকে তাদের শিরোপা না পাওয়া অকল্পনীয়। তারপরও স্পাল্লেত্তির সতর্ক থাকার বিষয়টি অবশ্য বোধগম্য। কারণ, এপ্রিলে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ছয় ম্যাচের কেবল দুটি জিততে পেরেছে তার দল।

চলতি এপ্রিল মাসে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ আট থেকে নাপোলি বিদায় নেয় এসি মিলানের কাছে হেরে। মৌসুমে কেবল ঘরোয়া লিগেই টিকে আছে তারা। আর সেখানে উৎসবের মঞ্চ প্রস্তুত। অপেক্ষা কেবল সময়ের।

১৯৮৪ সালে বার্সেলোনা ছেড়ে নাপোলিতে যোগ দেন ম্যারাডোনা। হয়ে উঠেন দলটির চালিকাশক্তি। আর্জেন্টিনাকে ১৯৮৬ বিশ্বকাপ জেতানোর পরের বছরই নাপোলিকে এনে দেন তাদের ইতিহাসের প্রথম লিগ শিরোপা। ৩ বছর পর আরেকটি। পুরোনো সেই স্বাদ চলতি মৌসুমে পাওয়ার পথে আছে নাপোলি। নেপলসবাসী এরই মধ্যে আগাম শিরোপা উদযাপন শুরু করে দিয়েছে। তাদের সম্ভাব্য এই সাফল্যকে তুরিন ও মিলানের মতো ইতালির উত্তর অঞ্চলের ধনী শহরগুলোর প্রতি প্রতিশোধ হিসেবেও দেখা হচ্ছে। সিরি-এ গত তিন দশকে আধিপত্য ছিল যে এই শহর দুটির ক্লাব ইউভেন্তুস, এসি মিলান ও ইন্টার মিলানের। শহরের নতুন নায়কদের ভাস্কর্য তৈরি করেছেন নেপলসের কারিগররা। দোকানগুলোর সামনে উড়ছে ক্লাবের নীল রঙয়ের পতাকা। একটি পোস্টারে দেখা যাচ্ছে, নাপোলির বর্তমান দলের বড় দুই তারকা নাইজেরিয়ান স্ট্রাইকার ভিক্টর ওসিমহেন ও জর্জিয়ান উইঙ্গার খভিচার হাতে ট্রফি তুলে দিচ্ছেন মারাদোনা।

২০২০ সালে না ফেরার দেশে পাড়ি জমানো কিংবদন্তি ম্যারাডোনার নামেই নাপোলির ঘরের মাঠের নামকরণ করা হয় ডিয়েগো আরমান্দো ম্যারাডোনা স্টেডিয়াম। এই মৌসুমে শুধু লিগ জয়ের পথেই নেই নাপোলি, প্রথমবারের মতো তারা উঠে গেছে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কোয়ার্টার ফাইনালে। যেখানে তাদের প্রতিপক্ষ এসি মিলান। দলকে ইউরোপ সেরার মঞ্চে ফাইনালে দেখার আশায় নাপোলির সমর্থকরা।